সশস্ত্র বাহিনী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে নিয়োজিত : নৌবাহিনী প্রধান

প্রকাশিতঃ 12:27 am | November 21, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল বলেছেন, দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি সদস্য আজ সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে নিয়োজিত। আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সমুদ্রসীমার অতন্ত্র প্রহরী হিসেবে নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। জাতির পিতার হাতে পড়া নৌবাহিনী তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় আজ একটি কার্যকর ও পেশাদার ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (২১ নভেম্বর) ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২২’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল আরও বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জ্বল দিন। ১৯৭১ সালের এ দিনে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সাথে সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে পাক সেনাদের বিরুদ্ধে একযোগে জলে, স্থলে ও অন্তরীক্ষে অপ্রতিরোধ্য আক্রমণ শুরু করে। দুর্দমনীয় ও অপ্রতিরোধ্য সম্মিলিত এই আক্রমণে হানাদার বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং ত্বরান্বিত হয় আমাদের কাঙ্ক্ষিত ও বহুল প্রতীক্ষিত স্বাধীনতা। বিশ্ব মানচিত্রে সূচিত হয় স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের নাম ।

‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বজ্রকণ্ঠের উদাত্ত আহ্বান দিশেহারা জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করে। স্বাধীনতার ডাকে সাড়া দেয় সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। পরিবার-পরিজন ছেড়ে তারা জীবন বাজি রাখে মাতৃভূমিকে স্বাধীন করতে। পরাধীন ঘরে না ফেরার পথে বলীয়ান হয় বাঙালি জাতি। আজকের এ দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল বীর সেনানীকে, যাঁদের নির্লোভ দেশপ্রেম আর নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ উপহার দিয়েছে একটি স্বাধীন দেশ। মাগফিরাত কামনা করছি সে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের, যাঁদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পরাধীনতার গ্লানি হতে মুক্ত হয়েছি। একইসাথে গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি প্রিয়জন হারা শোকসন্তপ্ত শহিদ পরিবারবর্গের প্রতি।’

বাণীতে তিনি বলেন, নৌ বাহিনীতে যুক্ত হয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন, হেলিকপ্টার, মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফট ও আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম। যুদ্ধকালীন প্রস্তুতির পাশাপাশি নৌসদস্যগণ বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজের গমনাগমন নির্বিঘ্ন রাখাসহ সরকার ঘোষিত সুনীল অর্থনীতির কার্যক্রম বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক ও মানবিক উন্নয়নে অবদান রাখা, পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিশাল সমুদ্র অঞ্চলে অমূল্য প্রাকৃতিক সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সমুদ্র পথে মানবপাচার ও চোরাচালানরোধ, জলদস্যুতা দমন, নিরাপদ মৎস্য আহরণসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগকালে আপামর জনতার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করছে।

‘সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রলয়ংকরী বন্যায় নৌসদস্যগণ উদ্ধার অভিযান ও বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় অর্থ সহায়তা, ত্রাণসামগ্রী প্রদানসহ অন্যান্য কার্যাবলীতে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছে। দেশের গন্ডি পেরিয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে দেশ হতে দেশান্তরে বয়ে চলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নৌবাহিনী দৃঢ় প্রতিজ্ঞ । স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমনই একটি দক্ষ ও পেশাদার নৌবাহিনীর স্বপ্ন দেখেছিলেন।’

নৌবাহিনী প্রধান বলেন, সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে আমি সশস্ত্র বাহিনীর সকল স্তরের সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গের সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি ও সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ কামনা করছি। মহান এ দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে দৈনিক পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের মহতী উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন । সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি সদস্য ২১ নভেম্বরের প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে দেশমাতৃকার সেবায় আত্মনিয়োগ করবে-এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

কালের আলো/এসবি/এমএম

Print Friendly, PDF & Email