ছেলেরা যা পারেনি, মেয়েরা তা পেরেছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 1:54 pm | November 09, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ছেলেদের থেকে মেয়েরা যথেষ্ট ভালো করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের ছেলেরা যা পারেনি, মেয়েরা তা পেরেছে। ছেলেরা শুনলে একটু রাগ করবে। রাগ করার কিছু নেই। ছেলেদের প্রতিযোগিতা একটু বেশি।

বুধবার (৯ নভেম্বর) সকালে নিজ কার্যালয়ে সাফজয়ী নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় সাফজয়ী ২৩ জন ফুটবলার ও ১১ জন প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তাকে সম্মানা চেক প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রত্যেক খেলোয়াড়কে ৫ লাখ টাকা এবং প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তাকে ২ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলকে আজ আমি দেখতে পেলাম, কাছে পেলাম এবং সংবর্ধনা দিতে পারলাম, সে জন্য আমি তাদের আন্তরিক অভিনন্দন ও দোয়া জানাই।’ ফুটবলের উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, ‌‌‘২০১০ সালে দেশব্যাপী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু করি। ২০১১ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেয়েদের নিয়ে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের ছেলেমেয়েরা খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবে, সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবে, সাহিত্যচর্চা করবে। লেখাপড়ার পাশাপাশি এগুলো দরকার। স্বাধীনতার পর এদেশে যাতে খেলাধুলার চর্চাটা ব্যাপকভাবে হয়, সে জন্য জাতির পিতা ১৯৭২ সালে জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থা গঠন করেন এবং ১৬টি জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশন অনুমোদ দেন। ১৯৭৪ সালে ১৮টি জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশন এবং বিভিন্ন জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে অনুমোদন দেন। অতএব খেলাধুলাকে জেলা থেকে গ্রাম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াই ছিল তার লক্ষ্য। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অ্যাক্ট পাস করে দিয়ে যান। তিনি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ গঠন করেন। ১৯৭৫ সালের ৬ আগস্ট বঙ্গবন্ধুি ক্রীড়াসেবী ও সংস্কৃতীসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন করেন।’

ছোট ভাইদের স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, ‘আমার ভাই শেখ কামাল ফুটবল, হকি, ক্রিকেট, বাস্কেটবল, বেসবলসহ সব খেলায় সে পারদর্শী ছিল। খেলাধুলার পাশাপাশি সংস্কৃতিচর্চা, নাটক করা, সেতার বাজানোসহ সব করতো। শেখ জামালও ফুটবল, হকি, ক্রিকেট খেলতো। আমাদের বাসায়ও বাস্কেটবলের কোর্ট ছিল। আমাদের বাসাটাই ছিল স্পোর্টসের আলাদা একটা জগৎ। সুলতানা কামাল তো ইউনিভার্সিটি ব্লুজ ছিল। পাকিস্তান আমলে সে ইউনিভার্সিটি ব্লু হয়েছিল। আমি মনে করি খেলাধুলা আমাদের অপরিহার্য। আমার বাবা ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে খেলতেন। আমার ভাইয়েরা সবাই বিভিন্ন ক্লাব ও টিমের সঙ্গে জড়িত ছিল।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পরিবারের সবাই সব সময় খেলাধুলায় সম্পৃক্ত ছিলেন। আমার দাদা, তিনিও ফুটবল খেলতেন। দাদার ছোট ভাই শেখ হাবিবুর রহমান, তিনিও ফুটবল খেলতেন। আমার বাবা ফুটবল খেলতেন। গোপালগঞ্জে অফিসার্সদের খেলার যে কমিটি ছিল, আমার দাদা সেখানে খেলতেন। আর ছাত্রদের যেটা, সেখানে আমার বাবা ছিলেন। তিনি তখন মিশন স্কুলের ছাত্র ছিলেন। মিশন স্কুলেন ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমার দাদা ছিলেন অফিসার্স কমিটির সেক্রেটারি। খেলার মাঠে দুজনেরই কম্পিটিশন হতো। বঙ্গবন্ধু তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে এসব লিখেছেন।’

প্রসঙ্গত, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সাফ উইমেনস টুর্নামেন্টে নেপালকে হারিয়ে শিরোপা অর্জন করে বাংলাদেশ। পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ মালদ্বীপ, পাকিস্তান, ভারত ও নেপালের বিপক্ষে ২৩ গোল করে। ফাইনালে একটি মাত্র গোল হজম করতে হয় রানার্সআপ নেপালের বিপক্ষে। সাফজয়ী তারকারা দেশে ফিরলে দেশের মানুষ তাদের উষ্ণ সংবর্ধনা দেয়।

কালের আলো/এসবি/পিএম

Print Friendly, PDF & Email