বনানীতে ধর্ষণ : জামিনে মুক্তি পেলেন সেই সাফাত

প্রকাশিতঃ 10:50 pm | November 30, 2018

আদালত প্রতিবেদক, কালের আলো:

বহুল আলোচিত বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ জামিন পেয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ জামিন মঞ্জুর করেছেন। তবে ওই দিনেই সাফাত কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলে জানা গেছে।

আসামির আইনজীবী ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী নজিব উল্ল্যাহ হিরু জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত বছরের ১১ মে সিলেটে এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আসামি সিফাতকে। পরদিন আদালতে হাজির করলে আদালত ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে ১৮ মে সাফাতসহ তার আরেক বন্ধু আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এরপর থেকে সাফাত কারাগারেই ছিল।

তাবে সাফাত জামিন পেলেও তার দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন, বন্ধু সাদমান সাকিব ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিম কারাগারে রয়েছেন। মামলাটিতে ধর্ষণের শিকার হওয়া একজনের সাক্ষ্য শেষে হয়ে অপর ধর্ষিতার সাক্ষ্য চলমান রয়েছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য আছে।

২০১৭ সালের ১৩ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে চার্জগঠন করেন। মামলাটিতে ওই বছরের ৭ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।

চার্জশিটে আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে। অপর আসামি সাফাত আহমেদের বন্ধু সাদমান সাকিব, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসনের বিরুদ্ধে ওই আইনের ৩০ ধারায় ধর্ষণের সহযোগিতার অভিযোগ করা হয়েছে।

২০১৭ সালের ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। পরে ভুক্তভোগীরা ৬ মে বনানী থানায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।

মামলায় বলা হয়, আসামিদের মধ্যে সাফাত ও নাঈম দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তারা ওই দুই ধর্ষিতা ছাত্রীর বন্ধু। গত ২৮ মার্চ ঘটনার দিন আসামি সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের যান ওই দুই ছাত্রী। এরপর ওইদিন তাদের রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা আটকে রাখেন। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে যায় আসামিরা।

আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ একাধিকবার তাদের ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ করার সময় আসামি সাফাত গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করেন। পরে বাসায় দেহরক্ষী পাঠিয়ে তাদের ভয়ভীতি দেখান। ধর্ষিতরা ভয়ে এবং লোকলজ্জার কারণে এবং মানসিক অসুস্থতা কাটিয়ে উঠে পরে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে আলোচনা করে তারা মামলার সিদ্ধান্ত নেন।

কালের আলো/এনবিএম/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email