স্ত্রীকে হত্যার পর পালিয়ে বিয়ে, ১৬ বছর পর ধরা
প্রকাশিতঃ 7:44 pm | September 07, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. উজ্জল প্রামাণিককে ১৬ বছর পর গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা জেলার আশুলিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন র্যাব-৩-এর সদস্যরা।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানন।
তিনি জানান, বগুড়া সদর থানাধীন কৈচড় দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল প্রামাণিকের সঙ্গে ২০০৬ সালের জুন মাসে ভিকটিম আলো বেগমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের দিন উজ্জ্বল এবং তার পরিবারকে নগদ ৩০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়।
‘বিয়ের পর বিদেশ যাওয়ার জন্য স্ত্রীর কাছে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন উজ্জ্বল। পারিবারিক সালিশে যৌতুক বাবদ আরও ৫০ হাজার টাকা দিতে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে উজ্জ্বল প্রামাণিক আলো বেগমকে তালাক দেবে বলে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। উজ্জ্বল এবং তার পরিবার ভিকটিম আলো বেগমকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়।’
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, ২০০৬ সালের ১ আগস্ট উজ্জ্বলের ভগ্নিপতি নাজমুল হোসেন লাবু ভিকটিম আলো বেগমের পরিবারকে ফোনে জানান, আলো বেগম গুরুতর অসুস্থ। এরপর ভিকটিমের পরিবারের লোকজন উজ্জ্বলের বাড়িতে গিয়ে ঘরের মেঝেতে আলো বেগমের লাশ দেখতে পান।

তিনি জানান, এ ঘটনায় উজ্জ্বল প্রামাণিককে প্রধান আসামি করে ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। আসামি উজ্জ্বল প্রামাণিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চলতি বছরের গত ২৪ জুলাই মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। অন্য ৪ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, স্ত্রীকে হত্যার পর উজ্জ্বল প্রামাণিক তার মা আলেয়া বেওয়াকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকায় এসে পরিচয় গোপন রেখে বসবাস শুরু করেন। ছয় মাস পর নাছিমা খাতুন নামে একজনকে বিয়ে করে গাজীপুরে বসবাস করে আসছিলেন।তাদের ১০ বছর এবং ৩ বছর বয়সী ২টি পুত্র সন্তান রয়েছে। উজ্জ্বল পালিয়ে আসার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বগুড়ায় নিজ বাড়ি এবং তার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখে গাজীপুরে আত্মগোপনে ছিলেন।
‘কিছুদিন আগে তিনি এক আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারেন তার মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে। এরপর থেকে তিনি আশুলিয়ায় সপরিবারে একটি ভাড়া বাসায় আত্মগোপন করে বসবাস শুরু করেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দীর্ঘ ১৬ বছর পর আশুলিয়ায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে উজ্জ্বলকে গ্রেফতার করা হয়।’
কালের আলো/ডিএস/এমএম