আফগানিস্তানে বন্যায় ১৮২ জনের বেশি নিহত
প্রকাশিতঃ 9:49 am | August 26, 2022

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:
চলতি মাসে আফগানিস্তানে বন্যায় ১৮২ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও আড়াইশো মানুষ। প্রবল বর্ষণের পর মধ্য ও পূর্বাঞ্চলীয় আফগান প্রদেশগুলোতে সৃষ্ট বন্যায় এই হতাহত ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
সংবাদ সম্মেলনে তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ১৮২ জন নিহত এবং ২৫০ জন আহত হয়েছে। তিন হাজার ১০০টিরও বেশি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং হাজার হাজার গবাদি পশু মারা গেছে। বন্যা দেশের অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
তিনি বলেন, আফগানিস্তান ইসলামিক আমিরাত একা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারছে না। আমরা বিশ্ব, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং ইসলামিক দেশগুলোকে আমাদের সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করছি।
আফগানিস্তান এই বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভুগছে। এরমধ্যে খরা এবং জুন মাসে ভয়াবহ ভূমিকম্পে এক হাজার জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এক বছরেরও বেশি সময় আগে তালেবানরা দখল নেওয়ার পর থেকে দেশটি আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবিক ত্রাণ সংস্থাগুলো দেশটিতে কয়েক মাস ধরে সহায়তা প্রদান করেছে। কিন্তু তারা সতর্ক করেছে, মানবিক বিপর্যয় এড়াতে তাদের আরও প্রবেশাধিকার ও তহবিল প্রয়োজন। সেখানে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন ও আশ্রয়হীন। তাদের বিশুদ্ধ খাবার পানি পর্যন্ত নেই।
ত্রাণকর্মীরা জানায়, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে মধ্য লোগার প্রদেশের খোশি জেলায় শক্তিশালী বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফসলের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অনেক পশুর মৃতদেহ পড়ে আছে।
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা জানায়, জেলাটিতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অন্তত ছয় শিশুসহ ২০ জন নিহত হয়েছে এবং আরও দুজন নিখোঁজ রয়েছে।
বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনের পর কেন্দ্রীয় ইউনিসেফ আফগানিস্তানের প্রধান আনি কিন্ড্রাচুক বলেন, মানুষ সব হারিয়েছে… রাতারাতি সব হারিয়েছে। তিনটি শিবির আছে কিন্তু [লোকেরা] অনিশ্চিত-পরবর্তীতে কী হবে, তারা এই শীতে কীভাবে খাবে, তাদের জীবিকা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
গ্রীষ্মকালে প্রায়ই উত্তর এবং পূর্ব আফগানিস্তানে ভারী বৃষ্টিপাত হয়, যার ফলে প্রতি বছর শত শত মানুষ মারা যায়।
গত বছর, নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছিল। এছাড়া রাজধানী কাবুল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে প্রত্যন্ত কামদেশ জেলায় কয়েক ডজন মানুষ নিখোঁজ হয়েছিল।
২০২০ সালে উত্তর ও পূর্ব আফগানিস্তানে কমপক্ষে ১০০ জন নিহত হয়েছিল, পারওয়ান প্রদেশের রাজধানী চারিকর শহরের বড় অংশে বন্যা দেখা দিয়েছিল।
প্রতিবেশী পাকিস্তানে কয়েক ডজন জেলা অতিবৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। জুনের মাঝামাঝি থেকে কমপক্ষে ৪৩৭ জন নিহত হয়েছে এবং হাজার হাজার লোককে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিতে হয়েছে।
কালের আলো/এমএইচ/এসবি