বিমানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে চান নতুন এমডি

প্রকাশিতঃ 5:04 pm | August 04, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে চান প্রতিষ্ঠানটির নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. যাহিদ হোসেন।

তিনি বলেছেন, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমার প্রধান লক্ষ্য হলো লাভ করা, বিমানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা। বিমানের যাত্রীদের সন্তুষ্টি নিশ্চিত করা।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর কুর্মিটোলার বলাকা ভবনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এক সংবাদ সম্মেলনে বিমানের এমডি এসব কথা বলেন।

কাস্টমার সার্ভিস নিয়ে এ সময় দায় স্বীকার করে তিনি বলেন, তবে আমাদের কাস্টমার সার্ভিস আশানুরূপ পর্যায়ের না, এটাতে আরও উন্নতি করার সুযোগ আছে। যেহেতু আমাদের প্রথম উদ্দেশ্য হলো বিমানকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা, তাই আমরা সব সিদ্ধান্ত বাণিজ্যিকভাবেই নেবো। তবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে জনগণের সাথে রাষ্ট্রের কমিটমেন্টকেও রক্ষা করা হবে।

বিমানের এমডি বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাস্টমার সার্ভিস কাঙ্ক্ষিত (এক্সপেক্টেড) পর্যায়ের না। কোভিডে সারা পৃথিবীর অ্যাভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। অনেক এয়ারলাইন্স বন্ধ হয়ে যায়। বিমান সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছে। আমরা ২০২১-২২ অর্থবছরে ২২ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছি।

তিনি বলেন, এটা করতে হলে আমাকে ব্যবসা বড় করতে হবে, সিদ্ধান্তগুলো ব্যবসায়িক চিন্তাভাবনা করে নিতে হবে। বর্তমানে বিমানের বার্ষিক টার্নওভার ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি৷

মো. যাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের প্রায় ৮০ লাখ প্রবাসী রয়েছে৷ তারা বিমানে চলাচল করতে চায়। আমরা আমাদের প্লেনগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের চেষ্টা করবো। এটাই লক্ষ্য— কীভাবে প্রবাসীদের আকর্ষণ করবো আমার। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কাস্টমার সার্ভিস। যাত্রী সেবার উন্নয়ন করেছি কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী নয়। সিইও পদে ধারাবাহিকতা দরকার।

লাগেজ ছুড়ে মারা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, যে ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সেটি পুরনো। এখন হচ্ছে না। লাগেজ হ্যান্ডেলিংয়ে নতুন ইকুইপমেন্ট আনছি। নজর রাখেন আমরা পরিবর্তন আনছি। বিমানের সংঘর্ষের ঘটনায় আমাদের গাফিলতি ছিল। সাসপেন্ড করা হয়েছে কয়েকজনকে। লাগেজ পেতে দেরির কারণেও দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

ভাড়া প্রসঙ্গে বিমানের এমডি বলেন, ডমেস্টিকে ২০ ভাগ আমাদের শেয়ার। কারও চাপে ডমেস্টিক ভাড়া কমানো হবে না। কেউ অসন্তুষ্ট হলে আমাদের কিছু করার নাই। রুলস অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ সম্পূর্ণ আমাদের এখতিয়ার, কেউ এতে ইন্টারফেয়ার করতে পারবে না।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, সম্প্রতি বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা-কানাডা ফ্লাইট শুরু হয়েছে। দেশ থেকে যাত্রাপথে বিমান যাত্রাবিরতি নেয় ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে। সেখান থেকে সরাসরি কানাডার রাজধানী টরন্টো। ফিরতি পথে কোনো যাত্রাবিরতি ছাড়াই সরাসরি বিমান দেশে ফেরে। এই আসা-যাওয়ায় বিমানের খরচ হয় ১৯৫ টন জেট ফুয়েল।

বাংলাদেশে বর্তমানে জেট ফুয়েলের প্রতি লিটারের দাম ৮০ টাকা। বাংলাদেশ থেকে টরন্টো যেতে বিমানের তেল খরচ হয় ১০৫ টন বা ১ লাখ ৫ হাজার লিটার। এর বাজারমূল্য ৮৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

অন্যদিকে টরন্টো থেকে ফিরতে বিমান খরচ করে ৮৫ থেকে ৯০ টন তেল। সে হিসেবে এতে খরচ হয় ৭২ লাখ ২৫ হাজার থেকে ৭৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

ফলে আসা-যাওয়ায় বিমানের ১৯৫ টন জেট ফুয়েল খরচ হয়। এর বাজারমূল্য আনুমানিক ১ কোটি ৬৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

কালের আলো/এসবি/এমএম