মেয়র পদে প্রচারণায় এগিয়ে আওয়ামী লীগের তরুণ প্রার্থীরা
প্রকাশিতঃ 9:40 pm | June 28, 2022
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আরও ঢের সময় বাকী। কিন্তু থেমে নেই মেয়র প্রার্থীদের প্রচারণা। পুরো গাজীপুরের আনাচে কানাচে প্রার্থীদের পোস্টার ফেস্টুন। বাস, ট্রাক, লেগুনাতেও প্রার্থীদের পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। যে কারও প্রথম দেখায় মনে হবে ভোট কড়া নাড়ছে দুয়ারে। এই প্রচারণায় বিএনপির প্রার্থীদের পদচারণা না থাকলেও এককভাবে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন সম্ভাব্য প্রার্থীর পক্ষে নিজ নিজ সমর্থক ও এলাকার মানুষ বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে পোস্টার ছাপিয়ে দোয়া চাচ্ছেন। এই দোয়া চাওয়ার ভিড়ে এগিয়ে রয়েছেন তরুণ রাজনীতিকরা। স্থানীয়ভাবে তারা সম্ভাবনাময় এবং ভোটের মাঠেও নিজেদের শক্ত অবস্থানের ইঙ্গিত দিচ্ছেন।
২০১৮ সালের ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জয়ী হন জাহাঙ্গীর আলম। এরপর ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয় জাহাঙ্গীরকে। পরে ২৫ নভেম্বর মেয়র পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয় তাকে। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুন মাসের পরে গাজীপুর সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু মেয়র পদ খালি থাকায় অগ্রিম এই পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে পুরো গাজীপুর জুড়ে চলছে প্রচারণা।
জাহাঙ্গীর যুগের অবসানের পর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্যানেল মেয়র-১ আসাদুর রহমান কিরণ। বিভিন্ন দিবসে তিনিও শুভেচ্ছা প্রচারণা চালালেও বেশ কয়েকজন তরুণ প্রার্থীর প্রচারণার কৌশলের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না বলেও কেউ কেউ মনে করছেন। নানামুখী হিসাব-নিকাশেও তিনি শেষতক ব্যাকফুটে থাকতে পারেন এমন গুঞ্জণও প্রবল হচ্ছে।
সূত্র মতে, মেয়র পদে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে এখনও আলোচনায় রয়েছেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমতউল্লাহ খানের নাম। ২০১৪ সালের নির্বাচনে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তবে ওই সময় তিনি পরাজিত হন। এরপর তার স্থলাভিষিক্ত হন তারই কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। এবারও আজমত উল্লাহ খান প্রার্থী হবেন এটি নিশ্চিত। কিন্তু তারুণ্যের জয়গানের জামানায় শেষ অবধি তার ভাগ্যে শিকেয় ছিঁড়ে কীনা এটি নিয়েও আলোচনা রয়েছে।
যদিও সব ছাপিয়ে মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তুমুল আলোচনায় রয়েছেন গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল ও যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল ইসলাম। প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন মন্ডলও।
গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল গত নির্বাচনেও মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে শক্তিশালী মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তার সমর্থনে দলীয় নেতাকর্মীরা ‘রাসেল সরকারকে মেয়র হিসেবে দেখতে চাই’ স্লোগানে নগরজুড়ে পোস্টার ও বিলবোর্ড সাঁটিয়েছেন। তার পারিবারিক ঐতিহ্য ও নিজের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। ভোটের মাঠেও তার অবস্থান শক্ত এবং পজেটিভ ইমেজ রয়েছে।
জানতে চাইলে রাসেল সরকার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বিগত সময়েও আমি আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম। এবারও আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী। দল আমাকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিলে জনগণের রায়ে আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’
একটি পরিকল্পিত নগরী গড়তে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সাড়া ফেলেছেন গাজীপুর মহানগর যুবলীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল ইসলাম। দল মনোনয়ন দিলে বিজয়ী হয়ে নগরবাসীকে নিয়ে উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার কাঙ্খিত বন্দরে নোঙর করতে চান। তার নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। তাকে নিয়ে রয়েছে ভোটারদের ইতিবাচক ভাবনাও।
নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলার বয়ান তুলে ধরে সাইফুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং টঙ্গী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। টঙ্গী কলেজ ছাত্র সংসদেরও নেতা ছিলাম। বিএনপির শাসনামলে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ভিপি পদে আমার জপ্য কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিরও সদস্য ছিলাম।’
স্থানীয় জনসাধারণের জন্য নিজের মানবিক কর্মপ্রয়াসের কথা জানিয়ে সাইফুল বলেন, ‘২০১৫ সাল থেকে এই পর্যন্ত প্রায় শতাধিক গরিব ও অসহায় পরিবারকে ঘর তৈরী করে দিয়েছি। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ২০ জন দরিদ্রকে ঘর তৈরী করে দিয়েছি। যা মাননীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ মহোদয় উদ্বোধন করেছেন।’
কালের আলো/এসবি/এমএম