সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতিরর আরও অবনতির শঙ্কা

প্রকাশিতঃ 10:21 am | May 21, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। কয়েকদিনের বন্যায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের পাঁচটি উপজেলার মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বানের পানিতে বসত ঘর হারিয়ে অনেকে পরিবার নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন।

এদিকে শুক্রবার (২০ মে) পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে আভাস দিয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে। অপরদিকে পদ্মা নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়া সংস্থাসমূহের গাণিতিক মডেলভিত্তিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, শনিবার (২১ মে) দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয়, হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা প্রদেশের কতিপয় স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় দেশের উত্তরাঞ্চলের ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া সুরমা-কুশিয়ারা ব্যতীত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

এই সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও হবিগঞ্জ জেলার নদীসমূহের পানির সমতল কিছু স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে সিলেট জেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে। অপরদিকে সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলের কতিপয় স্থানে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে।

পাউবো জানায়, বিভিন্ন নদ-নদীতে তাদের পর্যবেক্ষণাধীন ১০৯টি পয়েন্টের মধ্যে শুক্রবার পানির সমতল বেড়েছে ৭৮টিতে, কমেছে ২৭টিতে। চারটি অপরবির্তত আছে। এছাড়া পাঁচটি পয়েন্টে পানির সমতল এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়েছে প্রবাহিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে পানির সমতল আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে।

সুরমার পানি সিলেটের কানাইঘাটে বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, সিলেটে ৩৮ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জে ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কুশিয়ারার পানি সিলেটের অমলশীদের বিপৎসীমার ১৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং শেওলায় ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেট-সুনামগঞ্জে এক যুগের মধ্যে বড় বন্যার দেখা দিয়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে সিলেট শহরেও।

কালের আলো/এসবি/এমএম