তথ্য প্রতিমন্ত্রীর অপসারণ দাবি ৪০ নারী অধিকারকর্মীর
প্রকাশিতঃ 5:09 pm | December 06, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলোঃ
দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তার নাতনী জায়মা রহমানকে নিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের দেওয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ৪০ নারী অধিকারকর্মী।
এর আগে গত ২ ডিসেম্বর নাহিদ রেইনস নামক একটি অনলাইন লাইভে তথ্যপ্রতিমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যকে লিঙ্গবাদী, কুৎসিত যৌন হয়রানিমুলক আখ্যা দিয়েছেন তারা।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে নারী অধিকারকর্মীরা বলেন,রাষ্ট্রীয় পদে আসীন একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীর মুখে এ ভাষা বাংলাদেশের আপামর নারীদের অপমান এবং অসম্মান করেছে বলে আমরা মনে করি। জনগণের করের টাকায় বেতনভুক্ত বাংলাদেশের মন্ত্রীপ্রতিমন্ত্রীরা বিভিন্ন সময় সংসদে, রাজনৈতিক সভায়, গণমাধ্যমে, সম্মেলনে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করে পার পেয়ে যান। এর মধ্য দিয়ে নারীর প্রতি যৌন হয়রানিকে সমাজ এবং রাষ্ট্রে কাঠামোগত প্রতিষ্ঠিত করার বৈধতা দেওয়া হয়।
তারা আরও বলেন, আমরা জানতে চাই, কীভাবে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ঔদ্ধত্যভাবে বলেন, ‘ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না’। আমাদের পর্যবেক্ষণ বলে ক্ষমতাসীন দলগুলোর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদদে প্রায়শই এ ধরনের রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা রাষ্ট্র পরিচালনার নাম করে তাদের আধিপত্যমূলক ক্ষমতাকাঠামো টিকিয়ে রাখার জন্য এবং রাজনৈতিকভাবে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য ‘নারীকে’ই বিভিন্ন যৌন অসংবেদনশীল বক্তব্যের মাধ্যমে হেয় করে থাকে। আর এই রাষ্ট্রব্যবস্থা এভাবেই সংসদ, আদালত, প্রশাসন তথা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নারীদের নিয়ে বিভিন্ন রকম যৌন হয়রানিমূলক মন্তব্য, তামাশা এবং মতামত দেওয়ার মাধ্যমে সাধারণ নারীর জন্য ভীতির পরিবেশ তৈরিতে উৎসাহিত করে। বিগত বছরগুলোতে আমাদের গণতন্ত্রহীনতা এত চরমে পৌঁছেছে যে, নারীদের নিয়ে এ ধরনের যৌনবাদী মন্তব্য করার পরও বেশির ভাগ সময়ে প্রশাসন, রাষ্ট্রীয় বাহিনী, আদালত, সাংসদকে জবাবদিহির আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।
নারী অধিকারকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি অনলাইন মাধ্যমে নারীবিদ্বেষী, বর্ণবাদী এবং যৌন হয়রানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় আমরা তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে যথাযথ জবাবদিহির আওতায় এনে অপসারণের দাবি জানাচ্ছি। আমরা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই যে, আমাদের দেশের নারীরা তাদের চলতি জীবনে বারবার এসব যৌন হয়রানিমূলক বক্তব্যের শিকার হয়ে থাকে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, নাসরিন খন্দকার, স্নিগ্ধা রেজওয়ানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরিন, উইমেন চ্যাপ্টার সম্পাদক সুপ্রীতি ধর, সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, নারী নেত্রী ফরিদা আখতার, মিথিলা মাহফুজ, শিক্ষক, শিল্পী ও সংগঠক বীথি ঘোষ, উদ্যোক্তা তাসলিমা মিজি, ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টরের সম্পাদক মুনমুন শারমীন শামস, সাংবাদিক ইশরাত জাহান উর্মি, একটিভিস্ট পূরবী তালুকদার, দিলশানা পারুল, মোশফেক আরা শিমুল, নারী সংহতি নাসরিন আক্তার সুমি, সুমি রেক্সোনা, মনজুন নাহার, উন্নয়নকর্মী ফেরদৌস আরা রুমী, মাহফুজা মালা, প্রমা ইসরাত, একটিভিস্ট সুমাইয়া নাসরিন সুমু, মারজিয়া প্রভা, অপরাজিতা সংগীতা।
কালের আলো/টিআরকে/এসআইএল