সমবায় সমিতির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 4:20 pm | November 06, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলোঃ
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, সমবায় ব্যবস্থাপনাকে মর্যাদার আসনে নিতে হলে দেশের সকল সমবায় সমিতিগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
সমবায়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দর্শন ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ বাস্তবায়ন করে গ্রামীণ জনপদের ব্যাপক পরিবর্তন আনা সম্ভব বলেও জানান তিনি।
শনিবার (৬ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সমবায় অধিদপ্তর আয়োজিত ৫০ তম জাতীয় সমবায় দিবস-২০২১ এবং জাতীয় সমবায় পুরস্কার-২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সমবায় ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী এবং কার্যকর করতে হলে এর দুর্বলতা ও অসামঞ্জস্যতা খুঁজে বের করতে হবে। আইনে যদি সংশোধনী আনার প্রয়োজন হয় সেটাও করতে হবে। সমবায় ব্যবস্থাপনার সুফল কাজে লাগিয়ে পুরো দেশের পরিবর্তন আনা সম্ভব উল্লেখ করে মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, শুধু সমবায় ব্যবস্থাপনায় নয় সকল প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যাক্তি পর্যায়েও মানুষের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকা উচিত। কারণ এটা করা হলে কাজের পরিধি ও মান বাড়বে। আপনি কোন কাজের জন্য কাউকে ছেড়ে দিবেন, জবাবদিহিতার আওতায় আনবেন না তাহলে লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে না।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর দেশ গঠনের লক্ষ্যে অনেক উদ্যোগ নিয়েছিলেন। যার মধ্যে অন্যতম একটি সমবায় ব্যবস্থাপনা। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন গ্রাম-গঞ্জে বসবাসরত মানুষের জীবন- জীবিকার উন্নয়ন ঘটিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সমবায় ব্যবস্থাপনার বিকল্প নেই।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, সমবায় ভিত্তিক চাষাবাদের দর্শন হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। তিনি এলাকার মানুষকে একত্রিত করে সমবায় প্রতিষ্ঠান করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমরা যদি সবাই একত্রে থাকি তাহলে যত ষড়যন্ত্রই করা হোক, যত বাধাই আসুক না কেন আমরা সফল হবোই। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর যারাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করেছেন তাদেরকে নানাভাবে নির্যাতন ও নিপীড়নের স্বীকার হতে হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মোঃ তাজুল ইসলাম জানান, গ্রামীন অবকাঠামো পরিকল্পিতভাবে নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দর্শন ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ সহ অনেক মেগা প্রকল্প ও প্রদক্ষেপ নিয়েছেন। যার বেশিরভাগেরই বাস্তবায়নের কাজ চলছে। শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিতে অবকাঠামো ও যোগাযোগ উন্নয়নে পরিকল্পনাভিত্তিক কাজ চলছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তের কারণে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। সকল বিশ্বনেতৃবৃন্দের নিকট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ অনুকরণীয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, জাতির পিতা চেয়েছিলেন গ্রামভিত্তিক সমবায়ের মাধ্যমে সম্মিলিতি উদ্যোগকে জনগণের উন্নয়নে কাজে লাগাতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অনুরূপভাবে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠিদের জীবনমান উন্নয়নে সমবায়কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর গণমূখী সমবায় ভাবনার আলোকে ‘বঙ্গবন্ধু মডেল গ্রাম প্রতিষ্ঠা’ পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো শহরের সুবিধা গ্রামে পৌছে দেয়া। প্রকল্পটি দেশের ৭টি বিভাগের ৯টি জেলার ১০ টি গ্রামে পাইলটিং ভিত্তিতে বাস্তবায়িত হবে।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মোঃ মশিউর রহমান এনডিসি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক ড. মোঃ হারুন-অর-রশিদ বিশ্বাস এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি শেখ নাদির হোসেন লিপু।
প্রসঙ্গত, জাতীয় সমবায় দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন’। এবছর ১০ টি ক্যাটাগরিতে ৮টি সমবায় সমিতি এবং দুই জনকে ব্যক্তি পর্যায়ে জাতীয় সমবায় পুরস্কার-২০২০ প্রদান করা হয়।
কালের আলো/টিআরকে/এসআইএল