ময়মনসিংহে বাংলাদেশের খবরের প্রতিনিধি সম্মেলনে মিলন মেলা
প্রকাশিতঃ 9:42 pm | October 24, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা এক মঞ্চে উপস্থিত। তাঁরা পাশাপাশি বসলেন। কথা বললেন সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে। আলোচনা করলেন ময়মনসিংহের সমস্যা, সঙ্কট ও সম্ভাবনা নিয়ে। প্রত্যেকের কন্ঠেই দৃঢ় উচ্চারণ ময়মনসিংহকে এগিয়ে নেওয়ার। বিশ্ব মানচিত্রে অনন্য সমৃদ্ধময় নগরী হিসেবে ময়মনসিংহকে উপস্থাপন করার।
শুধু কী তাই? মোটেও নয়। দেশের জনপ্রিয় ও সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ময়মনসিংহ বিভাগের প্রতিনিধি সম্মেলনে তাঁরা এক বাক্যে স্বীকার করে নিলেন, প্রকাশনার মাত্র কয়েক বছরের মাথাতেই দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশের খবর।
সমকালীন রাজনীতি, উন্নয়ন-সঙ্কট বাদ যায়নি কিছুই। সত্য ও বস্তুনিষ্ঠতার অনন্য উদাহরণ হিসেবে রাতের গভীর বৃন্ত থেকে বেরিয়ে আসা ফুটন্ত লাল গোলাপের মতোই আভা ছড়িয়েছে বাংলাদেশের খবর। নাড়িয়ে দিয়েছে দেশের মানুষের হৃদয়-মস্তিষ্ক।
বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ময়মনসিংহ নগরীর হোটেল মোস্তাফিজ ইন্টারন্যাশনালে এমনই এক মিলনমেলা বসেছিল। মধ্যমণি হয়ে সেই মিলনমেলায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের খবরের সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভূইয়া। সভাপতির বক্তৃতায় প্রাঞ্জল ও বুদ্ধিদীপ্ত উপস্থাপনায় জাতীয় চার মৌলিক নীতি’র প্রশ্নে আপোস না করার অঙ্গীকার করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা দায়বদ্ধ দেশ ও সমাজের কাছে। আমরা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করি। তবে জাতীয় চার মৌলিক প্রশ্নে আমরা বস্তুনিষ্ঠ না হয়ে পুরোপুরি পক্ষপাতদুষ্ট হবো। আমার প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আপোস করবো না। আমরা বাংলাদেশের পক্ষে লিখবো। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খা ও চেতনা ছিলো গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার। আমরা মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খার প্রশ্নে পুরোপুরি পক্ষপাতদুষ্ট থাকবো।
তিনি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছে, দুই লক্ষ মা-বোন রজনীগন্ধার মতো পবিত্রতা নষ্ট করেছে। শহীদ ও নির্যাতিত মা-বোনদের পক্ষে আমরা থাকবো। আমরা শোষনহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করবো, সুখী-সমৃদ্ধশালী দেশ গঠন করবো। আমরা কোনদিন এই জাতীয় চার মৌলিক প্রশ্নে আপোস করবো না।
বাংলাদেশের খবরের ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রতিনিধি সম্মেলন পরিচালনা করে চমক সৃষ্টি করেন প্রেসক্লাব ময়মনসিংহের সাধারণ সম্পাদক ও প্রথিতযশা সাংবাদিক মো: শামসুল আলম খান। ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান আব্দুল মান্নান পল্টন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা থেকে শুরু করে ছিলেন সামগ্রিক দায়িত্বে।
এই প্রতিনিধি সম্মেলনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও জননন্দিত সাবেক মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও নব্বইয়ের মাঠ কাঁপানো সাবেক ছাত্র নেতা আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ, ময়মনসিংহ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নাসিরাবাদ কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি কামরুল ইসলাম মোহাম্মদ ওয়ালিদ, ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ খান, বাংলাদেশের খবরের হেড অব মার্কেটিং সাজ্জাদ হোসেন চিশতি, কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মিজানুর রহমান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ুন কবির হিমেল, ময়মনসিংহের সাংবাদিকতায় তারুণ্যের প্রতিনিধি বাংলানিউজের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, দৈনিক মানবকন্ঠের প্রতিনিধি আমান উল্লাহ আকন্দ, আনিসুর রহমান ফারুকসহ বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকের সংবাদকর্মীরা। এছাড়া বাংলাদেশের খবরের ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, জামালপুর ও শেরপুর জেলার উপজেলা ও জেলা প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্ষীয়াণ রাজনীতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা বলেন, দেশের কথা, দশের কথা স্লোগান নিয়ে পাঠক হৃদয় জয় করে নিয়েছে বাংলাদেশের খবর। মাত্র ৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে পাঠক প্রিয়তার শীর্ষে থাকা এই দৈনিকটি। সত্য ও বস্তুষ্ঠি সাংবাদিকতায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই দৈনিকটি।
প্রবীণ এই রাজনীতিক জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বলেন, শেখ হাসিনা মানেই উন্নয়ন। তিনিই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন। সংবাদকর্মীদের জন্য তাঁর ভালোবাসা অফুরান। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে সংবাদকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম প্রশাসক ও ময়মনসিংহ পৌরসভার জননন্দিত সাবেক মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু বলেন, বাংলাদেশে সংবাদপত্রের দৌলতে তৃণমূল তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খবর আমরা পাচ্ছি। উন্নয়নশীল এই দেশে সংবাদপত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অতীতের যে কোন সময় থেকেই সংবাদপত্র ও সাংবাদিকরা জননেত্রী শেখ হাসিনার সময়ে অনেক স্বাধীন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের খবর জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। এই পত্রিকাকে জনপ্রিয় করে তুলতে তৃণমূলের সংবাদকর্মীরা আন্তরিক ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে বাংলাদেশের বুকে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশের খবর।
ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ বলেন, বাংলাদেশের খবর আমন্ত্রণ জানালে শত ব্যস্ততার মাঝেও ছুটে আসতে হয়। এর কারণ একটিই পত্রিকাটির বস্তুনিষ্ঠতা। এই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেই বাংলাদেশের খবর সাফল্যের শিখরে পৌঁছবে বলেও মত দেন তিনি।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম মোহাম্মদ ওয়ালিদ বলেন, পাঠকের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে বাংলাদেশের খবর। ময়মনসিংহেও এই পত্রিকাটির চাহিদা রয়েছে। এই পত্রিকাটি ভবিষ্যতে আরো ভালো করবে এই প্রত্যাশা আমাদের।
ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ খান বলেন, আমি এই দৈনিকটির একজন নিয়মিত পাঠক। পত্রিকাটির মেকআপ গেটআপ ও সংবাদ প্রবাহের চিত্র আমাকে অভিভূত করেছে। আমি এই পত্রিকাটির সার্বঙ্গীন মঙ্গল কামনা করি।
কালের আলো/এএম