সফল ফ্রিল্যান্সার শেরপুরের স্বরূপ আমিন, মাসে আয় লাখ টাকা

প্রকাশিতঃ 1:34 pm | September 06, 2021

কালের আলো সংবাদদাতা:

শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ির স্বরূপ আমিন। বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী ইতোমধ্যেই অনলাইন জগতে নিজের যায়গা তৈরি করে নিয়েছেন। একজন শিক্ষার্থীর পাশাপাশি তার আরেক পরিচয় তিনি একজন সফল ফ্রিল্যান্সার কিংবা এ বিষয়ে একজন দক্ষ প্রশিক্ষক হিসেবে। ইতোমধ্যেই এ কাজের সূত্র ধরে ভ্রমণ করেছেন ভিয়েতনামও।

পড়াশুনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে প্রায় লক্ষ টাকা আয় করছেন এই তরুণ। এখন তিনি অন্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন অনলাইনে কাজ করে উপার্জন করার। এই টগবগে যুবকের হাত ধরে বাংলাদেশ থেকে চার হাজারের অধিক মানুষ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

নিজের ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে বলতে গিয়ে স্বরূপ আমিন জানালেন তার শুরুর গল্পটা। যখন ফ্রিল্যান্সিং শেখা শুরু করেন সে সময় কেউ সাপোর্ট করতো না। তবে কঠোর পরিশ্রমের ফলে আজ সফল হওয়াতে সবাই সাপোর্ট দিচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

তবে বর্তমানে সময় পাল্টেছে জানিয়ে স্বরূপ আমিন বলেন, জীবনে কিছু পরিবর্তন এসেছে। পরিবর্তনটা আর্থিক থেকে মানসিক বেশি। এখন সবকিছু সহজ মনে হয়। আমার পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা বলেছিল এইগুলো হবে না, সময় নষ্ট—এখন তাঁদের ধারণা বদলেছে।

তিনি বলেন, আমার জীবনে অনলাইনে প্রথম আর্নিং ছিল চার ডলার। বাংলা টাকায় যা প্রায় ৩৪০ টাকার মতো। আসলে কঠোর পরিশ্রমের পর যখন আয়ের পথ খুঁজে পেলাম এর পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এ ছাত্র জানালেন তিনি শুধু নিজে কাজ শেখে বসে থাকেননি। এখন দেশ-বিদেশে এ নিয়ে প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন তিনি।

সফল এই ফ্রিল্যান্সার জানান, তিনি অনলাইনে ফিক্সড কাজের পাশাপাশি মার্কেটপ্লেসেও কাজ করেন। বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করছেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং কাজের সুবাধেই ভিয়েতনাম সফর করেছেন তিনি। যেখানে ১৭ দিতে বেশ কয়েকটি ওয়ার্কশপ ও কনফারেন্সে অংশ নিয়েছেন এই স্বপ্নবাজ তরুন।

স্বরূপ আমিন বলেন, একটা কোম্পানীতে বেশ কয়েকদিন কাজ করেছি। তারা আমাকে ভিয়েতনামে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। ১৭ দিন থাকা-খাওয়ার যাবতীয় খরচ তারাই বহন করে। সেখানে কয়েকটি ওয়ার্কশপে ট্রেইনার হিসেবে ছিলাম।

বর্তমানে এই ফ্রিল্যান্সার তার কাজের পাশাপাশি ইউএসএ ভিত্তিক ইকর্মাস প্রতিষ্ঠান চিপ এর বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার হিসেবেও কাজ করেছেন।

চাকরি না খুঁজে নিজের স্কিল ডেভেলাপ করে ফ্রিল্যান্সিং বা নতুন কিছু করাতে বিশ্বাসী এই তরুণের মত, স্কিল থাকলে আয় হবে; বেকার থাকা লাগবে না।

বর্তমানে মাসে লাখ টাকা আয় করা এই যুবক দুই বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন বিষয়ের উপর কোর্স নিচ্ছেন। সেখানে দেশের বিভিন্ন এলাকার ৪ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী শিক্ষা নিয়েছে।

ঔষধ ব্যবসায়ী বাবা ও গৃহিনী মায়ের এই সন্তান বর্তমানে নিজের স্কিল ডেভেলাপ করতে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের বেকার সমস্যা দূর করা সম্ভব। এর জন্য সঠিক গাইডলাইন ও কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন।

তবে যারা কাজ শিখতে আগ্রহী তাদের সাবধান করেছেন এই প্রশিক্ষণ। তিনি মনে করেন, অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং করতে এসে ভুল যায়গায় শিখতে গিয়ে আগ্রহ হারাচ্ছে। এই জন্য সঠিক যায়গায় সঠিক নিয়মে শেখার আহ্বান তার।

ভবিষ্যতে বড় একটা অফিস নেওয়ার চিন্তা স্বরূপ আমিনের। যেখানে তিনি তরুণদের শিক্ষা দিতে পারবেন বিভিন্ন বিষয়ে।

কালের আলো/ডিআরবি/এমএম