বরগুনায় সারজিস-রাফিকে ‘দুলাভাই’ ডেকে স্লোগানে মুখর এনসিপির পথসভা

প্রকাশিতঃ 10:21 am | July 15, 2025

বরগুনা প্রতিবেদক, কালের আলো:

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বরগুনায় অনুষ্ঠিত পথসভা যেন রূপ নেয় উৎসবে। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সারজিস আলম ও খান তালাত মাহমুদ রাফিকে নিয়ে ছাত্র-জনতার কণ্ঠে বারবার উচ্চারিত হয় ‘দুলাভাই- দুলাভাই’ স্লোগান।

সোমবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত পথসভায় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি ও ডা. তাসনীম জারা প্রমুখ।

এসময় নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি করব, বাংলাদেশে ভারতপন্থি কিংবা পাকিস্তানপন্থি কোনো রাজনীতি হবে না।

তিনি বলেন, একটা দল ইতিহাসের এককালে পাকিস্তানপন্থিদের পুনর্বাসিত করেছিল বাংলাদেশে, এখন আবার গণঅভ্যুত্থানের পর তারা মুজিববাদকে পুনর্বাসিত করছে। বাংলাদেশে কোনো মুজিববাদের রাজনীতি হবে না, চাঁদাবাজদের রাজনীতি হবে না।

তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনে তরুণরা রাজপথে নেমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে হটিয়ে শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছিল। সেই চেতনায় আবারো আমরা মাঠে নেমেছি, কারণ চাঁদাবাজ-মাফিয়া ও দুর্নীতিবাজরা আবার দেশের ওপর চেপে বসেছে। আমরা বলেছিলাম চাঁদাবাজ এবং মাফিয়াবাজ যে সিস্টেম টিকিয়ে রাখে সেই সিস্টেমের আমরা পতন চাই। কিন্তু দেখেছি সেই সিস্টেমকে আবারো টিকিয়ে রাখছে এবং চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে একটি দল। গণহত্যার বিচার এবং নতুন বাংলাদেশের জন্য আমরা সংস্কার চাই। সংস্কার ছাড়া আমরা নতুন বাংলাদেশ কখনোই পাবো না। আমরা নিরপেক্ষতা চাই, নির্বাচন কমিশনে নিরপেক্ষ নিয়োগ চাই। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত থাকবে। আমরা কোনো স্বৈরতন্ত্র বাংলাদেশে আর ফেরত আসতে দেব না। নতুন করে কাউকে আর স্বৈরাচার হতে দেব না।

সম্প্রতি ঢাকায় বরগুনার সন্তান সোহাগ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, গত কয়েকদিন আগে বরগুনার ছেলে সোহাগকে ঢাকায় পাথর মের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের পর হাজারো মানুষের রক্তের পরও এই সরকারের আইন-শৃঙ্খলার ব্যর্থতা এবং একটি রাজনৈতিক দলের চাঁদাবাজদের সমর্থন দেওয়ার ফলে আপনাদের সন্তানকে পাথর মেরে হত্যা করা হয়েছে। আপনারা এর প্রতিবাদ তৈরি করুন। আপনারা সেই দৃশ্য বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে দেখান।

বক্তব্যে সারজিস আলম বলেন, বরগুনার মানুষের ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ। এখানে একজন রাজনৈতিক দলের সদস্য হিসেবে বলার মতো অবস্থা আমার নেই। কারণ আমি আমার নিকট আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার পূর্বে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আমি এখন পর্যন্ত আমার নিকট আত্মীয়ের বাসায় যাইনি। এটা আমার সৌভাগ্যের বিষয়। আমি বরগুনা এসে হাজারো ছাত্র-জনতার মাঝে উন্মুক্ত মঞ্চে দাঁড়াতে পেরেছি। আপনাদের জন্য আমাদের জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির বুকভরা ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতা থাকবে। এসময় তিনি খান তালাত মাহমুদ রাফিকে পরিচয় করিয়ে দেন বরগুনার ‘আরেক আত্মীয়’ হিসেবে।

উল্লেখ্য, এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি দু’জনই সম্প্রতি বরগুনায় বিয়ে করেছেন। এদের মধ্যে সারজিস আলম বিয়ে করেছেন বরগুনা সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের বাসিন্দা সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল লুৎফর রহমানের মেয়ে রাইতাকে। আর রাফি বিয়ে করেছেন সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক মো. জাকির হোসেনর মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসী মিতুকে।

কালের আলো/এএএন