প্রধানমন্ত্রীকে ‘ধন্যবাদ’, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার শপথ সেনাপ্রধানের

প্রকাশিতঃ 10:46 pm | March 06, 2022

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিবশতবর্ষ উদযাপনের শুভলগ্নে অগ্নিঝরা মার্চেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের উদ্বোধন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নের ইতিহাসে একটি অনন্য অধ্যায় হয়ে থাকবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড.এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

আরও পড়ুন: বদলে গেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, নতুন উচ্চতায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম

একই সঙ্গে দেশের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকান্ডে সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকলের পক্ষ থেকে দু’দফা প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ে তোলার শপথ পুনরুত্থিত করে দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করারও দৃঢ় অঙ্গীকার করেছেন সেনাপ্রধান।

আরও পড়ুন: মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন মেয়র আতিকুল, অঙ্গীকার সবুজ-অক্সিজেনের ঢাকার

রোববার (০৬ মার্চ) দুপুরে ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে (ডিএনসিসি) নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার নির্মাণ ও উন্নয়ন (ফেজ-১)’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে গণভবন প্রান্তে নিজের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এমনই প্রোজ্জ্বল-আলোকময় উপস্থাপন ছিল সেনাপ্রধানের।

নিজের বক্তব্যের শুরুতেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড.এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মার্চ আমাদের স্বাধীনতার মাস। একই সাথে এই মাসটি হলো বঙ্গবন্ধুর জন্ম এবং স্বাধীনতার ডাক দিয়ে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ঐতিহাসিক সেই ভাষণের মাস। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের প্রাককালে শুরুতেই আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি আমাদের স্বাধীনতার মূল রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি এই স্বাধীন দেশ।’

আরও পড়ুনঃ ঢাকাকে আধুনিকায়ন-সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করার টার্গেট প্রধানমন্ত্রীর

তিনি বলেন, ‘সেই সাথে আমি স্বরণ করছি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে। যিনি আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর সকল কর্মকাণ্ডে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে গেছেন এবং বাঙালি জাতির জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। আমি স্মরণ করছি স্বাধীনতার যুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদদের। যাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের প্রাণ প্রিয় স্বাধীনতা। আমি আরও স্মরণ করছি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী সকল শহীদদের। যারা শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধেই নয় তার পরবর্তী সময়ও দেশে বিদেশে দেশের প্রয়োজনে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।’

ডিএনসিসির ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের উদ্বোধনকে নব অধ্যায়ের সূত্রপাত উল্লেখ করে সেনাপ্রধান আরও বলেন, ‘আপনার (প্রধানমন্ত্রী) বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী দিকনির্দেশনায় দেশব্যাপী ভৌত অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ও অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে আজকের এই শুভ মুহুর্তটি তারই একটি ধারাবাহিকতা’।

‘দেশ ও জাতির উন্নয়নে ও জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্রমধারায় আজকের উদ্বোধন করা প্রকল্পসমূহে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করে দেশের উন্নয়ন সহযোগী হওয়ার সুযোগ প্রদানের জন্য আমি আপনার প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকলের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওপর আপনার এই আস্থা সর্বদায় আমাদের সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের সাহসী করে এবং সর্বোচ্চ শ্রম ও অধ্যবসায় দিয়ে কাক্সিক্ষত সাফল্য অর্জনে উদ্বুদ্ধ করে। আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে চাই, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পূর্বের বাস্তবায়িত অন্যান্য প্রকল্পসমূহের মতোই এই প্রকল্প সময়ে সর্বোচ্চ দক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে সদা সচেষ্ট থাকবে। আর সেটা নিশ্চিত করতে আমিসহ সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট সকলের প্রকল্প বাস্তবায়নের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত থেকে কাজের সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত এবং নির্ধারিত সময়ের ভেতর তা সম্পন্ন করবো ইনশাআল্লাহ’-যোগ করেন জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রগতিশীল চিন্তাধারা আর বাস্তবমুখী কর্মপরিকল্পনা অনুসরণ করে প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষে এগিয়ে যাচ্ছে’ মন্তব্য করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘তারই গতিধারায় আপনার দিকনির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতায় আজকে উদ্বোধন করা এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়িত হলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১৮টি ওয়ার্ডে বসবাসরত জনসাধারণের সড়ক যোগাযোগ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, জীবনযাত্রার মান উন্নত হওয়ার পাশাপাশি আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখবে বলে আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি।’

‘প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে মর্যাদাপূর্ণ জায়গায় নিয়ে গেছেন’
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম এমপি দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গর্বিত প্রতিষ্ঠান সেনাবাহিনী। যে প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে গোটা জাতি গর্ব করে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে প্রতিষ্ঠানকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসা দিয়ে গোড়াপত্তন ও গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন এবং তারই ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে একটি মর্যাদাপূর্ণ জায়গায় নিয়ে গেছেন। দেশের বাইরে এবং দেশের অভ্যন্তরে উন্নয়ন কাজে তাঁরা অবদান রেখে গোটা জাতিকে মুগ্ধ করছেন।’

কালের আলো/এসবি/এমএম