মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন মেয়র আতিকুল, অঙ্গীকার সবুজ-অক্সিজেনের ঢাকার

প্রকাশিতঃ 10:55 pm | March 06, 2022

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ‘কেউ কথা রাখেনি’। কিন্তু এই নগরীর বাসিন্দারা দেখেছেন তরতাজা স্বপ্ন দেখা ও বাস্তবায়নকারী সৃজনশীল এবং আপাদমস্তক মানবিক হৃদয়ে অনন্য ‘নগর পিতা’ আতিকুল ইসলাম ঠিকই কথা রেখেছেন। করোনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চলমান যুদ্ধে ফ্রন্টলাইনে অবস্থান করে দু’বার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা জয় করে আবারও নগরীর অসহায়, বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে নিজেকে সমর্পণ করেছেন।

আরও পড়ুন: বদলে গেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, নতুন উচ্চতায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম

বারবার বিপদে পাশে থাকার মধ্যে দিয়ে নিজের মানবিকবোধের পরিচয় দিয়েছেন। মহানুভবতার মাধ্যমে সৌভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যরে অনুকরণীয় এক উদাহরণ তৈরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে আধুনিক ও সমৃদ্ধ ঢাকা গড়তে নিজের কর্মপরিকল্পনা বিস্তৃত পরিসরে উত্থাপন করেছেন। দিন-রাত একাকার করে কাজ করে যাওয়ার বর্ণনা দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে ‘ধন্যবাদ’, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার শপথ সেনাপ্রধানের

খেলার মাঠ এবং পার্ক করার জন্য গানে গানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমিও চেয়েছেন। গোটা অনুষ্ঠানে এই নগর পিতা রীতিমতো মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। করতালি পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, সেনাপ্রধানসহ দু’প্রান্তে উপস্থিত সবারই।

আরও পড়ুনঃ ঢাকাকে আধুনিকায়ন-সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করার টার্গেট প্রধানমন্ত্রীর

রোববার (০৬ মার্চ) দুপুরে ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে (ডিএনসিসি) নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার নির্মাণ ও উন্নয়ন (ফেজ-১)’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনবান্ধব নগর পিতা নিজের চেনা স্টাইলেই উপস্থাপন করেছেন নিজেকে। আবার বক্তব্যও শেষ করেছেন নিজের সৃষ্টিশীল এক থিউরির উক্তি দিয়ে। বলেছেন, ‘১০টায় ১০ মিনিট প্রতি শনিবার, নিজ নিজ বাসা বাড়ি করি আমরা পরিস্কার, এই হোক আমাদের অগ্নিঝরা মার্চের অঙ্গীকার।’

১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার নির্মাণ ও উন্নয়ন (ফেজ-১)’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেয়র আতিকুল ইসলাম গলা ছেড়ে গেয়েছেন-‘পরের জায়গা পরের জমি, ঘর বানাইয়া আমি রই, আমি তো সেই ঘরের মালিক নই।’

ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি না, আপনি হলেন ঘরের মালিক। আমি করজোড়ে হাত তুলে আপনাকে বলব- এই এলাকার জন্য যদি পার্ক, মাঠ করতে চাই একটু জায়গায়ও সিটি করপোরেশনের নাই। এগুলো (জায়গা) প্রত্যেকটি সংস্থা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাছে আছে। আপনি আমাদের জায়গা দিন, আমরা নিজ খরচে সব করে নিতে পারব।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এই নগর সেবক প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলার রাজধানী ঢাকা শহরকে সাজাতে প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য আমাদের এক হাজার একর জমি দরকার। আপনি অনুশাসন দিলে ইটের নয়, স্বপ্নের ঢাকা শহর হবে। জায়গার জন্য আপনার কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।’

ডিএনসিসির ২৯ কিলোমিটার খাল পুনরুদ্ধারের কথা জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা খালের দায়িত্ব নিয়েছি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে খালগুলো পুনরুদ্ধারের করা হচ্ছে। ২৯ টি খালকে পুনরুজ্জীবিত করে সেখানে নৌকা চলবে। খালের পাশে ওয়াকওয়ে, সাইকেল লেন এবং সবুজায়ন করবো। সবুজ, অক্সিজিনের ঢাকা শহর হবে আপনার (প্রধানমন্ত্রী) নেতৃত্বে।’

তিনি বলেন, ‘ডিএনসিসির নতুন অঞ্চলের উন্নয়নে ২৬ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৪ হাজার ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেজন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

ঢাকা সিটির প্রতিটি খালের সীমানা নির্ধারণের জন্য উদ্যোগ নেওয়ার কথাও তুলে ধরেন মেয়র। ৮৬০ জন ক্লিনারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আবাসনের ব্যবস্থার কথাও জানান। বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাকে বলেছিলেন, ক্লিনারদের জন্য জায়গা খুঁজে বের করতে। যেখানে ক্লিনাররা থাকবে। তুমি ক্লিনারদের জন্য রেডি করো। আমরা ৮৬০ জন ক্লিনারের জন্য কাজ শুরু করেছি। আগামী বছর শেষ হতে যাচ্ছে এই কাজ।’

‘তিন মাস আগেও ফোনে আপনি আমাকে বলেছিলেন, তুমি বিহারীদের জন্য কিছু করো। আপনি কত বড় মমতাময়ী মা। আমরা কিছুদিনের মধ্যে আপনার কাছে প্রজেক্টটি পাঠাবো। আগামী পহেলা এপ্রিল থেকে সিটির জনগণ অনলাইনে ট্যাক্স দেবে।’

পহেলা বৈশাখে নগরবাসীকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের জন্য ২০ টি পার্ক প্রস্তুত করা হয়েছেও বলেও জানান মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা ২০ টি পার্ক রেডি করেছি। অত্যন্ত আধুনিকভাবে ২০ টি পার্ক করা হয়েছে। ২০ টি পার্ক আপনি পহেলা বৈশাখে উদ্বোধন করে দিলে এটিও একটি দৃষ্টান্ত হবে। আমরা মনে করি জনগণ উপকৃত হবে।’

কালের আলো/এসবি/এমএম