খালেদাকে ‘ভাগ্য নির্ধারণী’ বার্তা এরশাদের

প্রকাশিতঃ 9:02 am | February 03, 2018

পলিটিক্যাল এডিটর, কালের আলো:

আর ৫ দিন বাদেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্য নির্ধারণ হচ্ছে আদালতে। এ মামলায় খালেদার শাস্তির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বিএনপি’র নেতারাও বলছেন, খালেদাকে নির্বাচনের বাইরে রাখতেই সরকারের ইচ্ছায় এ মামলার রায় হচ্ছে।

এ রায়কে ঘিরে রাজনীতিতে ছড়িয়ে পড়েছে মৃদুমন্দ উত্তাপ। এ মামলায় দুর্নীতির দায়ে খালেদা জিয়া অভিযুক্ত হলে সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পর তিনিই হবেন দ্বিতীয় কোন সরকার প্রধান যিনি দুর্নীতির মামলায় দন্ডিত!

এ অবস্থায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে আগাম এক বার্তাই দিয়ে গেলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ.এম.এরশাদ। আদালতের রায় যাই হোক সেটি মেনে নিয়েই খালেদাকে পথ চলার আহবান জানিয়েছেন।

তিনি নিজে কারাবরণ করেও নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, বর্জন করেননি। খালেদাকে উদ্দেশ্য করে এরশাদ বলেছেন, ‘আদালতের রায় মেনে নেওয়া উচিত।’

দেশের চলমান রাজনীতির এমন উত্তাপের মুহুর্তে শুক্রবার (০২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ময়মনসিংহ সফর করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ.এম.এরশাদ। ফলে স্বভাবতই তাঁর কাছে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের আগ্রহের মূল বিষয়স্তু ছিল আলোচিত দুর্নীতি মামলায় খালেদার রায়ের বিষয়টি।

এমনকি খালেদা জিয়া দন্ডিত হচ্ছেন কীনা এমনটিও জানতে চাওয়া হয়েছিল এরশাদের কাছে। এ বিষয়ে সোজাসাপ্টা কোন জবাব দেননি সাবেক এ সামরিক শাসক। তবে তিনি প্রকারান্তরে বুঝিয়ে দিয়েছেন দু’বার জেলে থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন তিনি।

ইঙ্গিত করেছেন, খালেদাকেও একই ভাগ্য বরণ করতে হলেও নির্বাচন বর্জন করা ঠিক হবে না সংসদের বাইরে থাকা এ বিরোধী দলকে। ইতোমধ্যেই খালেদার আইনজীবি ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদও বলেছেন, ‘দন্ডিত হলেও খালেদা জিয়া ভোটে দাঁড়াতে পারবেন।’

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ‘পল্লীবন্ধু’ দু’দফায় স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিজের উদাহরণই টেনেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে টানা ৪২ টি মামলা ঠুকে দেয়ার কথা বলেছেন। এরশাদের ভাষ্যে, রাজনৈতিকভাবে হয়রানিমূলক ছিল আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রতিটি মামলা।

তবুও জাতীয় পার্টি নির্বাচন বর্জন করেনি। জেলে থেকে ৫ টি আসনে ভোটে দাঁড়িয়ে এরশাদ জিতে নিজের জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিয়েছেন। এরশাদ যুক্তি দেখিয়েছেন, খালেদার সময়ে দায়ের করা মামলায় তিনি জেল খেটেছেন। আদালতের রায় মেনে নিয়েছেন। খালেদারও উচিত হবে আদালতের রায় মানা।

এসব প্রসঙ্গ টেনে ময়মনসিংহের জামাই, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ.এম.এরশাদ বলেছেন, ‘কঠিন প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও আমি নির্বাচন করেছি। ৬ বছর জেল খেটেছি। বেগম জিয়া আমার বিরুদ্ধে ৪২ টি মামলা দিয়েছিল।

ওই সময় তো আমি রায় মেনে নিয়েছিলাম। আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা ওইসব মামলা জামিনযোগ্য ছিল। কিন্তু এরপরেও তারা আমাকে জামিন দেয়নি।’

জাতীয় পার্টির দলীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, সব সরকারই এরশাদের মামলা নিয়ে ইঁদুর-বিড়াল খেলেছে। অনেক মামলা এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। রাজনৈতিক কারণে দায়ের করা এ মামলাগুলো দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এরশাদের জন্য গলার ফাঁস হয়েই দাঁড়িয়েছে।

 

কালের আলো/ওএইচ

Print Friendly, PDF & Email