কর দেন মিষ্টি খান, নইলে জরিমানা খেতে হবে: মেয়র আতিক

প্রকাশিতঃ 7:26 pm | September 15, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘ট্যাক্স দেবেন মিষ্টি খাবেন, আর যারা ট্যাক্স দেবেন না তারা ফাইন (জরিমানা) খাবেন।’

তিনি বলেন, আমি সবাইকে বলব এই শহরটা কিন্তু আমাদের, এই শহরে আমরা উপার্জন করি। আমাদের বাচ্চারা পড়াশোনা করে, এই শহরে আমরা বড় হয়েছি। এ শহরকে ভালবাসতে হবে। যে ঘরে আমি থাকি সেই ঘরের প্রতি যদি মায়া না করি, যে ঘরে থাকি সে ঘরে যদি থুথু ফেলি, তাহলে হবে না।

মঙ্গলবার(১৫ সেপ্টেম্বর) গুলশান ২ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় অবৈধ বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড ইত্যাদি অপসারণ অভিযানের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএনসিসি থেকে অনুমোদন নিয়ে নির্ধারিত আকৃতির সাইনবোর্ড স্থাপন করায় এ সময় এক ব্যবসায়ীকে মিষ্টি খাওয়ান মেয়র আতিক। জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার এক কর্মকর্তাকেও একই কারণে ধন্যবাদ জানিয়ে মিষ্টি খাওয়ান তিনি। সারাদিন ডিএনসিসির ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তিন শতাধিক অবৈধ বিলবোর্ড-ব্যানার-সাইনবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়।

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, বড় বড় ডেভেলপাররা কীভাবে তাদের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিল, সিটি করপোরেশনকে কোনো ধরনের ট্যাক্স দিল না। এই শহরে আপনারা বড় বড় ব্র্যান্ডিং করবেন, ব্যবসা করবেন, আর সিটি করপোরেশনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কোনো ট্যাক্স দেবেন না, এটা হতে পারে না। আমি সবাইকে বলতে চাই শহরে কোনো ধরনের সাইনবোর্ড লাগাতে গেলে, আগে সিটি করপোরেশনের নিয়ম মানতে হবে। বিদেশে তো আপনারা এ রকম করেন না। তাহলে দেশে কেন করবেন? এই দেশেরও অভিভাবক আছে।

‘জনগণ চায় শহর পরিষ্কার থাকুক। জনগণ চায় তারা ফুটপাত দিয়ে যেন নির্বিঘ্নে হাঁটতে পারেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ফুটপাত সড়কে অবৈধভাবে থাকা বিভিন্ন সামগ্রী নিলাম করে দিচ্ছি। আমরা আজ সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড ইত্যাদি অপসারণ করছি। আমি জনগণকে অনুরোধ করবো আপনারা আমাদে জানান। এ রকম কোন কোন ফুটপাত ও রাস্তায় নির্মাণসামগ্রী রাখা হয়।’

তিনি বলেন, ‘শহরকে সুন্দর করতে গেলে সিটি করপোরেশনকে ট্যাক্স দিতে হবে। বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড স্থাপনের নীতিমালা আছে। এগুলো লাগানোর সময় নীতিমালা মানতে হবে। আমরা এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি, মিডিয়ায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছি। প্রত্যেক গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি মাইকিংও করা হয়েছে। একটি শহরের ভেতরে এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রম চলতে পারে না। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি ফুটপাত ও সড়কে রাখা অবৈধ মালামাল উচ্ছেদ অব্যাহত থাকবে।’

এদিকে মঙ্গলবার গুলশান ২ নম্বরে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হামিদ মিয়ার নেতৃত্বে প্রায় দেড়শ’ অবৈধ সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়।

বনানী ১১ নম্বর সড়কে অঞ্চল-৭ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় শতাধিক সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া সড়ক ও ফুটপাত অবৈধভাবে দখল করে জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টির কারণে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

প্রগতি সরণিতে অঞ্চল-৬-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিনের নেতৃত্বে ৫২টি সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া ফুটপাত ও সড়কে অবৈধভাবে মালামাল রাখায় তা জব্দ করে নিলামে ৬৬ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি এবং ৯টি মামলায় ৪৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

কালের আলো/এবি/এমএইচএ