সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা ৯ জুলাই
প্রকাশিতঃ 11:46 am | July 09, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে সারাদেশে আরও এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দিনের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ‘গণসংযোগ’ চালান শিক্ষার্থীরা। দিন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন— ১০ জুলাই সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি চলবে।
তিনি জানান, সারাদেশের সড়কপথ ও রেলপথ থাকবে এই কর্মসূচির আওতায়। কেন্দ্রীয়ভাবে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহবাগ এলাকায়। সকাল ১০টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে জমায়েত হয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেবেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, সরকার নিশ্চুপ থাকায় আমরা বাধ্য হয়েই এই কর্মসূচি নিচ্ছি। আমরা বলছি না কোটা পুরোপুরি বাতিল করতে হবে। তবে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ৫-১০ শতাংশ সংরক্ষণ রেখে বাকিগুলো বাতিল করতে হবে।
এই আন্দোলনের পেছনে রয়েছে ২০১৮ সালে জারি করা কোটাব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত একটি পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি। চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীরা রাজপথে নামেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৭ জুলাই থেকে শুরু হয় ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি।
৯ জুলাই মঙ্গলবার সারাদেশেই বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীতে আন্দোলনকারী দুই শিক্ষার্থী হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। যদিও আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, আবেদনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন।
সরকারি পর্যায়ে আন্দোলন নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “এ ইস্যু এখন সর্বোচ্চ আদালতের বিষয়, রাজপথে আন্দোলন করে এর সমাধান হবে না।” আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নেতাকর্মীদের আন্দোলন নিয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।
বুয়েট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মসূচি পালন করা হয়। বুয়েটে শহীদ মিনারে মানববন্ধন হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী হলগুলোতে গণসংযোগ করা হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
রাজশাহী কলেজ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। চট্টগ্রামের ষোলশহর স্টেশনে রেললাইন অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এতে পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে পড়ে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন। হবিগঞ্জেও মিছিল ও মানববন্ধন হয়।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, সরকার দ্রুত দাবি না মানলে আন্দোলনের পরিধি আরও বাড়ানো হবে। ‘বাংলা ব্লকেড’ হবে তারই ধারাবাহিক পদক্ষেপ। সূত্র: বাসস
কালের আলো/এমডিএইচ