তারাকান্দায় ১০ টাকার চাল নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের কারসাজি!

প্রকাশিতঃ 10:05 pm | April 03, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ময়মনসিংহের তারাকান্দায় মহাজোট সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ১০ টাকা কেজি চাল নিয়ে স্থানীয় গালাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়ার বিরুদ্ধে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে উপজেলা প্রশাসনে তোলপাঁড় শুরু হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি ইউনিয়নে কার্ড বিতরনের আগে দেওয়ালে এবং ইউনিয়নের ওয়েব সাইটে তালিকা প্রকাশ প্রকাশ করতে হবে। কিন্তু চেয়ারম্যান জিয়াউল হক আজও করেননি। ফলে চেয়ারম্যান জিয়াউল তালিকা প্রকাশ না করায় স্থানীয় হতদরিদ্র দেলোয়ারা খাতুন, রেজি ও ফাতেমা খাতুন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২২আগষ্ট ময়মনসিংহ-২ ফুলপুর-তারাকান্দা আসনের এমপি শরীফ আহম্মেদ ২০১১ সালের কার্ড খাদ্য বান্ধব কার্ড বাতিল করে নতুন তালিকায় কার্ড বিতরনের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে ডিও দেন। সে মোতাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ২০১৭ সালের ১০ সেপ্টম্বরের মধ্যে সকল চেয়ারম্যান, সচিব ও আওয়ামীলীগ নেতাদের নিয়ে নতুন তালিকা জমা দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু গালাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ইউনিয়নের তালিকা হস্থান্তর করেন।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সূত্র জানায়, গালাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের তালিকা অনুযায়ী চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ৮৮ নং স্মারকে ইউনিয়নওয়ারী কার্ড বিতরণের তারিখ নির্ধারণ করে দিলে গত ৪ মার্চ গালাগাঁও ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওই দিন ১৭শত কার্ড বিতরন করেন। এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করেন যে, গালাগাঁও ইউনিয়নের হতদরিদ্র কার্ড সংখ্যা ২২৬৬টি। এর মধ্যে ১৭শত কার্ড বিতরণ করা হয়েছে এবং ৫৬৬টি কার্ড অবিলিকৃত রয়েছে।

উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা রুবাইদুর রানা জানান, এরপর দ্বিতীয় দফায় অবিলিকৃত কার্ড বিলি করার জন্য চেয়ারম্যান জিয়ার কাছে বার বার তারিখ চাইলেও তিনি নানা ভাবে কালক্ষেপন করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে ২৫ মার্চ দিনভর এলাকায় হ্যান্ড মাইকিং করে ৪২২টি কার্ড বিতরণ করা হলেও ১৪৪টি কার্ড অবিলিকৃত থেকে যায়।

রানা আরো জানান, ১৪৪টি কার্ডের বিপরীতে এমপি মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী একশত কার্ড স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের তালিকা অনুযায়ী বিতরণ করা হয় এবং এমপির নির্দেশনা মোতাবেক চেয়ারম্যান ৪৪টি কার্ডের তালিকা না দিলে নীতিমালা অনুযায়ী অবশিষ্ট কার্ড বাতিল হয়ে যায়। এতে চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়া ক্ষুব্ধ হয়ে কারসাজি ও ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে গণমাধ্যমে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

তবে গালাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বলেন, ২২৬৬টি কার্ডের মধ্যে ২১২২টি কার্ড স্বচ্ছতার সাথে বিলি করা হলেও ১৪৪টি কার্ড কাদের দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে আমি অবগত নই।

এ বিষয়ে তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিন সুলতানা জানান, আমার জানা মতে কার্ড বিতরণে কোন অনিয়ম হয়নি। উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা কঠোর পরিশ্রম করে স্বচ্ছতার সাথে কার্ড বিতরণের চেষ্টা করেছে। তবুও কোন অভিযোগ থাকলে তদন্ত করে দেখা হবে।

 

কালের আলো/এএজে

Print Friendly, PDF & Email