নড়বড়ে ও পুরনো সেতু দ্রুত মেরামত করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

প্রকাশিতঃ 2:22 pm | June 25, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

রেলওয়ে মন্ত্রণালয় এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগকে নড়বড়ে ও পুরনো সেতুগুলো দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, সকল সেতু দ্রুত মেরামত করুন। ইমিডিয়েটলি নেমে পড়েন। যেগুলো নড়বড়ে, পুরনো– এগুলো তাড়াতাড়ি রিপেয়ারের (মেরামতের) ব্যবস্থা করেন।

একনেক সভা শেষে সাংবাদিকদের কাছে সেই বার্তা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, আরেকটি কথা খুব জরুরি এসেছে একনেক সভায়। একটি ঘটনা হলো রেলের। আমরা অভিনন্দন জানিয়েছিল রেলমন্ত্রীকে, দ্রুত তিনি কাজ শুরু করেছিলেন। তার কাছে বহু টেলিফোন আসতেছে মানুষের কাছ থেকে। ইতোমধ্যে যোগাযোগটা (রেলের) শুরু হয়েছে গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যায়।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, এই সুবাদে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন উভয়কেই– রেলকে এবং সড়ককে, সার্ভে (জরিপ) করেন সকল সেতু। ইমিডিয়েটলি (খুব দ্রুত) নেমে পড়েন। যেগুলো নড়বড়ে, পুরনো– এগুলো তাড়াতাড়ি রিপেয়ারের (মেরামতের) ব্যবস্থা করেন। আসন্ন বর্ষার আগেই যেগুলো মেরামত করার, করেন। কারণ বর্ষা আরম্ভ হলে বৃষ্টি পড়বে এবং ভেঙে পড়ার প্রবণতা বাড়বে।

একনেকে ৬ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। ২৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২১টি রেল ইঞ্জিনের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ফলে পুরাতন রেল ইঞ্জিনগুলো আরো ২০ বছর রেলপথে পরিচালনা করা যাবে। বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ২৭২টি ডিজেল ইঞ্জিন ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ রয়েছে। এরমধ্যে ১৯৬টির অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল পেরিয়ে গেছে। এ অবস্থায় রেলের গতি বাড়াতে নতুন ইঞ্জিন কেনার পাশাপশি এগুলোকে মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে এই ইঞ্জিনগুলো আরও ২০ বছর সেবা দিতে পারবে।

‘বাংলাদেশ রেলওয়ের ২১টি মিটারগেজ ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ নবরূপায়ণ’ প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সাল নাগাদ এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় রেলপথে ৪২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বামনডাংগা (গাইবান্ধা)-শঠিবাড়ী-আফতাবগঞ্জ (দিনাজপুর) জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ” প্রকল্প; ৩ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন জোনের প্রধান সংযোগ রাস্তাগুলি প্রশস্তকরণসহ নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।

‘অফিসার্স ক্লাব, ঢাকার ক্যাম্পাসে বহুতল ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পে ২২৮ এবং ‘মানিকগঞ্জ বহুতল বিশিষ্ট সমন্বিত সরকারি অফিস ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পে ৯৫ কোটি ব্যয় ধরা হয়েছে।

‘ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন’ প্রকল্পে ৯৮ কোটি ‘দুস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র পুনঃনির্মাণ (গাজীপুর)’ প্রকল্প ৮১ কোটি ৬৬ লাখ, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ কোটি টাকা।

২০০ কোটি ৬০ লাখ টাকায় ‘বৃহত্তর ফরিদপুর সেচ এলাকা উন্নয়ন (৪র্থ পর্যায়)’ প্রকল্প এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ওয়েস্ট জোন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও আপগ্রেডেশন’ প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি; শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক; বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি; গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন; ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভার কার্যক্রমে অংশ নেন।

সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজির মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এনএল/এমএইচএ