জীবনের দ্বিতীয় ইনিংসে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চান কাদের
প্রকাশিতঃ 12:01 pm | May 19, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ফলে জীবনের প্রথম ইনিংস আগেই শেষ করেছেন।
সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে এখন খেলছেন দ্বিতীয় ইনিংস। আর এই ইনিংসে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। সড়ক ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার এই চ্যালেঞ্জে জিততে চান মন্ত্রী।
সচিবালয়ে এদিন সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, প্রথম ইনিংস শেষ করেছি। ইনশাল্লাহ, এবার দ্বিতীয় ইনিংস খেলবো। দ্বিতীয় ইনিংসের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- সড়কে ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। আশা করি তা আনতে পারবো।
আরো পড়ুন :২ মাস ১৬ দিন পর সচিবালয়ে কাদের, কাটাচ্ছেন ব্যস্ত সময়
রোববার (১৯ মে) সকালে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, এখন থেকে ২ মাস ১৬ দিন আগে আপনাদের (সাংবাদিক) সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তারপর দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ছিলাম। হয়তো সারাজীবনের জন্যই অনুপস্থিত ছিলাম! কিন্তু দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের অশেষ দোয়া ও প্রধানমন্ত্রীর সবিশেষ চেষ্টায় আমি ফিরে এসেছি।
নিজ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, আমার অনুপস্থিতিতেও আপনারা কাজে কোনো ঘাটতি তৈরি করেননি। এটা আমি সিঙ্গাপুরে থাকা অবস্থায়ই প্রধানমন্ত্রীর কাছে শুনেছি। তিনি আমায় বলেছেন, তোমার মন্ত্রণালয় ঠিকঠাক মতো চলেছে।
কাদের বলেন, ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভারতী ঋণের টাকায় কেনা ৫শ টি ট্রাকের মধ্যে ৪৬৮টি এসেছে। ৬শ বাসের মধ্যে ১৭৯টি পৌঁছেছে। সারাদেশে ১০৮৯টি স্পেশাল বাসের মাধ্যমে ঈদ স্পেশাল সার্ভিস পরিচালনা করা হবে। ঢাকার ৬৪৯টি বাস ও আন্ত:জেলা ৩৯০টি বাসের মাধ্যমে যাত্রী সেবা দেওয়া হবে। এছাড়া, আরো ৫শটি বাস স্ট্যান্ডবাই রাখা হবে।
মহাসড়কের অবস্থার কথা তুলে কাদের বলেন, আমাদের প্রধান সমস্যা ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। তবে এবার ঈদে মানুষ ভোগান্তিতে পড়বে না এটা বলতে পারি।
গাজীপুর, চন্দ্রা, কোনাবাড়ীতে নির্মানাধীন আন্ডারপাসগুলো প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেই ঈদ যাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে বলে মনে করেন সড়কমন্ত্রী।
কাদের জানান, আগামী ২৫ মে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মেঘনা গোমতী সেতু উদ্বোধন করবেন।
পাতাল রেলের সমীক্ষা চলছে জানিয়ে তিনি আরো জানান, সড়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলো শেষ করা বড় চ্যালেঞ্জ। যানযট নিরসনে দ্বিতীয় ইনিংস খেলার কথাও জানান তিনি।
এক প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল যথাসময়ে হবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
নিজের অসুস্থতার প্রসঙ্গে কাদের সাংবাদিকদের ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, ‘আপনারা সবসময় খোঁজ নিয়েছেন। সঙ্গে থেকেছেন এগুলো পরে জানতে পেরেছি।
মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরেছি। তবে, আমি না থাকলেও মন্ত্রণালয়ে শূন্যতা তৈরি হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ সময় যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে কোনো সমস্যা হয়নি।’
‘আগের মতো রাস্তায় রাস্তায় রোদ-বৃষ্টি একাকার করে কাজ করতে পারবো না। তবে ধীরে ধীরে ২/৪ মাস পর আগের মতো সুস্থ হয়ে উঠবো, ইনশাল্লাহ।’
গত ২ মার্চ হার্ট অ্যাটাকের পর ওবায়দুল কাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ৪ মে মুমূর্ষু অবস্থায় ওবায়দুল কাদেরকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপর থেকে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ২০ মার্চ মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তার বাইপাস সার্জারি হয়। ৫ এপ্রিল তিনি হাসপাতাল ছাড়লেও সেখানে একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। সেখানে থেকে তিনি ফলোআপ চিকিৎসায় ছিলেন। এরপর গত ১৫ মে দেশে ফেরেন তিনি।
কালের আলো/এএ/এমএইচএ