২০২৪ সালে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির রেকর্ড দেখেছে বিশ্ব

প্রকাশিতঃ 9:17 am | May 14, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:

সংঘাত, বিপর্যয় ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগের জেরে ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়েছেন রেকর্ড ৮ কোটি ৩৪ লাখ মানুষ। এর আগে কখনও কোনো এক বছরে এত বেশি সংখ্যক মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হননি।

ইউরোপভিত্তিক দুই সংস্থা ইন্টারনাল ডিপ্লেসমেন্ট মনিটরিং সেন্টার (আইডিএমসি) এবং নরওয়েজিয়ান রেফিউজি কাউন্সিল (এনআরসি) এক যৌথ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে এ তথ্য। মঙ্গলবার প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা গোটা জার্মানির জনসংখ্যার সমান।

এবং ৬ বছর আগে বিশ্বজুড়ে যতসংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়েছিলেন, ২০২৪ সালে এসে সেই সংখ্যা ছাড়িয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এক বিবৃতিতে আইডিএমসির শীর্ষ নির্বাহী আলেক্সান্দ্রা বিলাক বলেছেন, “সংঘাত, দারিদ্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত দুর্যোগ যখন এক জায়গায় মিলিত হয়— তখন অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি ঘটতে থাকে। এসব দুর্যোগের প্রধান শিকার হয় সমাজের প্রান্তিক লোকজন।”

আইডিএমসি-এনআরসির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে শুধু গৃহযুদ্ধ ও অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটতে বাধ্য হয়েছেন ৭ কোটি ৩৫ লাখ মানুষ। এই সংখ্যা ২০১৮ সালের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি।

যৌথ প্রতিবেদনে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, গত বছর অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে বিশ্বের অন্তত ১০ দেশের প্রতিটিতে কমপক্ষে ৩০ লাখ করে মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এই ১০ দেশের মধ্যে একক দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি বাস্তুচ্যুতির ঘটনা ঘটনা ঘটেছে সুদানে। গৃহযুদ্ধে জর্জরিত এই দেশটিতে গত বছর বাড়িঘর ছেড়ে শরণার্থী হতে বাধ্য হয়েছেন ১ কোটি ১৬ লাখ মানুষ।

এই ১০ দেশের বাইরে বিশ্বজুড়ে ১ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন যুদ্ধ ও রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে। গত ৫ বছরের তুলনায় এই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষের সংখ্যাও কম ছিল না ২০২৪ সালে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রে শক্তিশালী ঘুর্ণিঝড়, প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ।

এনআরসি’র শীর্ষ নির্বাহী জেন এগেল্যান্ড এএফপিকে বলেন, “এই বাস্তুচ্যুতির প্রধান কারণ সরকারি নীতির ব্যর্থতা এবং মনুষ্যত্বের আদর্শগত বিপর্যয়। গত বছর যা ঘটেছে, এ বছর যে তার ব্যতিক্রম হবে— এমন আশা খুবই ক্ষীণ। আমাদের উচিত এই বাস্তুচ্যুত অসহায় লোকজনের পাশে দাঁড়ানো।”

সূত্র : এএফপি

কালের আলো/এসএকে