নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বিগত সময়ে ‘ব্যয়ের মহোৎসবের’ বাজেট করা হতো বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরামর্শক কমিটির ৪৫ তম সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপলক্ষ্যে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে।

এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বিন হারুন। ব্যবসায়ীরাদের পক্ষে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিএমএ’র সভাপতি শওকত আজীজ রাসেল, রিহ্যাবের পরিচালক আইয়ুব আলী প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআই প্রশাসক হাফিজুর রহমান।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘বিগত সময়ে ব্যয়ের একটা মহোৎসবের বাজেট করা হতো। এবার লক্ষ্যভিত্তিক ও ন্যায়সঙ্গত বাজেট করা হবে, যা বাস্তবায়ন করা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় করা হতো, যেন ব্যয় করাটা ঈদ পালন করা। যেটার কোন প্রয়োজন নেই, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে তা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর এনবিআরকে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের দায় দেওয়া হচ্ছে। তখন এনবিআরও গণহারে কর আরোপ করে৷ তাই আমরা দায়িত্বের সঙ্গে প্রস্তাবনা করবো। যাতে তা বাস্তবায়ন করা যায়।’

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ট্যাক্স জাস্টিস কায়েম করা না গেলে সমাজে একটা দুর্বাত্তায়ন হয়। আর দুর্বৃত্তরাই বারবার ক্ষমতায় আসে, ক্ষমতায় এসে এমন একটা অরাজক পরিবেশ সৃষ্টি করে তা আমরা দেখেছি। ব্যবসায়ী পরিচয় দিতে অনেক সময় লজ্জাও তো লাগে৷ কারণ বিগত সংসদে ব্যবসায়ীরা প্রতিনিধিত্ব করে দুর্বৃত্তায়নকে অনেকটা সাংবিধানিক রূপ দিয়ে ফেলেছিল।’

অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার বাস্তবসম্মত বাজেট করা হবে। চিরাচরিত বাজেটের মতো করবোনা। আমরা যা বলবো তা করার চেষ্টা করবো। আমরা চলেও গেলেও যাতে মানুষ বলে বাজেট ভালো হয়েছিলো। বড় বাজেট দেওয়া হতো, কিন্তু বাস্তবায়ন হতোনা। কিন্তু আমরা যে বাজেট দিতে চাই, তা বাস্তবায়ন করতে চাই।’

এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আগামী বাজেটের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারের নিকট অংশীজনদের প্রত্যাশা ব্যাপক। ২০২৪ এর জুলাই- আগস্টের গণ আন্দোলনের চেতনাকে সামনে রেখে বর্তমান বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ, এলডিসি গ্রাজুয়েশন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষগুলি বিবেচনা নিয়ে আগামী অর্থ বছরের জন্য একটি বিনিয়োগ ও ব্যবসা বান্ধব জাতীয় বাজেট প্রণীত হবে বলে এফবিসিসিআই বিশ্বাস করে। নীতি সহায়তার মাধ্যমে ব্যবসা বাণিজ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার বিষয় থাকবে।’

কালের আলো/এএএন