বিনম্র শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় ভাষা শহীদদের স্মরণ করছে জাতি

প্রকাশিতঃ 3:11 am | February 21, 2018

বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো :
রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারমুখী লাখো মানুষের কণ্ঠে বিষাদমাখা চিরচেনা সেই গান- ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি।’ কি কচি, কি বুড়ো, দলমত নির্বিশেষে সবাই হাজির হয়েছেন ভাষা শহীদদের প্রতি হৃদয়ের গভীর শ্রদ্ধা জানাতে।

পুরো জাতি বিনম্র শ্রদ্ধা আর আবেগমথিত ভালোবাসায় স্মরণ করছে মহান ভাষা শহীদদের। শহীদ মিনারকে ঘিরে বুধবার মধ্যরাত থেকেই নেমেছে হাজারো মানুষের ঢল। সূর্যের আলো ফোটার আগেই ফুলে ফুলে ভরে ওঠবে বাঙালির শোক আর অহঙ্কারের প্রতীক শহীদ মিনার। নিজের অজান্তেই যেন সকলের বুকের মাঝে গুনগুনিয়ে উঠবে, ‘আমায় গেঁথে দাও না মাগো/একটা পলাশ ফুলের মালা/আমি জনম জনম রাখব ধরে/ভাই হারানোর জ্বালা।’

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বুধবার প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় মাইকে বাজতে থাকে একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কী ভুলিতে পারি’ গানটি।

পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তারা কিছুক্ষণ নীরবতা পালনের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে মন্ত্রীপরিষদের সদস্য ও দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে দলের পক্ষ থেকে আবারও শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা রওশান এরশাদ, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গণে নেতৃত্বদানকারীদের সংগঠন সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, তিন বাহিনীর প্রধানেরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতগণ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এরপরই শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করে সর্বস্তরের মানুষ। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
রাজধানীর কেন্দ্রীয় এ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষজন যাতে সুশৃঙ্খল ও নিরাপদভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারে এজন্য চার স্তরের কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে।

কালের আলো/এমএ

Print Friendly, PDF & Email