জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে থাকবে সরকারের দর্শন, সাইডলাইন বৈঠকের সম্ভাবনা একাধিক দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গেও

প্রকাশিতঃ 9:41 pm | September 19, 2024

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

সাধারণত রাজনৈতিক সরকারের সময় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সরকারেরপ্রধানের সফরসঙ্গীর থাকে বিশাল বহর। তবে এবার ঘটতে যাচ্ছে ব্যতিক্রম এক ঘটনা। যেখানে নতুন এক নজির স্থাপন করতে যাচ্ছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নিজের প্রথম বিদেশ সফরে তিনি কমিয়ে এনেছেন সফরসঙ্গীর সংখ্যা। দু’জন উপদেষ্টাসহ সাকুল্যে ২০ জনকে সঙ্গে নিয়ে ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক যাচ্ছেন তিনি, ফিরবেন ২৯ সেপ্টেম্বর। এর আগে নিউইয়র্ক সময় ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে নির্ধারিত বক্তব্য রাখবেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার নিজের বক্তৃতায় প্রতিফলিত হবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের দর্শন। বিশেষ করে সম্পূর্ণ নতুন প্রেক্ষাপটে নিজেদের গর্বিত ও মর্যাদাশীল দেশের জনগণ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব পরিমণ্ডলে কীভাবে নিজেদের উপস্থাপন করবে, সেটিই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানাবেন তিনি। পাশাপাশি দেশের ভবিষ্যৎ আকাঙ্ক্ষার কথা উল্লেখ করে তিনি ভূরাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হতে আহ্বান জানাবেন।

একই সূত্র বলছে, এই সফরটিতে একাধিক দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সাইডলাইন বৈঠকের কথা রয়েছে। সম্ভাব্য তালিকাটিও বেশ দীর্ঘ। এই তালিকায় রয়েছেন- পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহবাজ শরিফ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক শফ, বাহরাইনের যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী সালমান বিন হামাদ বিন ইসা আল খলিফা, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন এবং বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা। পাশাপাশি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডিসহ জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সংস্থার প্রধানরা। তবে এখনও অনিশ্চিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের বিষয়টি।

জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের আলোকে জানান, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বেশিরভাগ সময় কনফারেন্স ডিপ্লোমেসির একটি সুযোগ থাকে। সাইডলাইনেই এসব বৈঠক হয়ে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে বৈঠকগুলো শেষ মুহূর্তে নির্ধারিত হয়। আবার অনেক সময় দু’পক্ষের আগ্রহ থাকলেও সময় সংক্ষিপ্ততায় বৈঠক সম্ভব হয় না।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, খসড়া সূচি মোতাবেক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন অধ্যাপক ড. ইউনূস। জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপ্রাপ্তির ৫০ বছর উপলক্ষে আগামী মঙ্গলবার নিউইয়র্কে একটি সংবর্ধনার আয়োজন করছে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন। ওই অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দেবেন। এর পাশাপাশি নিউইয়র্কে অবস্থানের সময় প্রধান উপদেষ্টা সামাজিক ব্যবসা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাংলাদেশ–যুক্তরাষ্ট্র ব্যবসায়ী পরিষদের সভায় অংশগ্রহণ করবেন।

কালের আলো/এমএএএমকে