ফেসবুক লাইভে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন জ্যোতি
প্রকাশিতঃ 7:06 pm | September 17, 2024
বিনোদন প্রতিবেদক, কালের আলো:
সহকর্মীদের আচরণে রীতিমতো বিস্মিত ও হতবাক শিল্পকলা একাডেমীর পরিচালক ও অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। তোপের মুখে শিল্পকলা একাডেমি থেকে বের হয়ে তিনি ফেসবুক লাইভে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এমন ঘটনার শিকার হন অভিনেত্রী।
এরপর ফেসবুক লাইভের একপর্যায়ে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এই অপমান কি আমার প্রাপ্য ছিল? কোনো দলের সমর্থক ছিলাম বলে কি দেশটা আমার নয়? আমি তাহলে কোথায় যাব?
এর আগে এদিন বেলা ১২ টার দিকে অফিসে প্রবেশ করেন জ্যোতি। সেখানে নতুন মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে যান এই অভিনেত্রী। এরপর রুম থেকে বের হতেই সহকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন। একপর্যায়ে শিল্পকলা একাডেমি ত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি।
লাইভের শুরুতেই জ্যোতি বলেন, ‘আমাকে নিয়ে অনেকে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন, আমি ঠিক আছি কিনা, তা জানতে চাইছেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, আমি ঠিক আছি। তবে মানসিকভাবে আমি একদমই ঠিক নেই। জানিনা কতদিন লাগবে এসব কাটিয়ে উঠতে।’
এরপর শিল্পকলা একাডেমিতে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে জ্যোতিকা জ্যোতি বলেন, ‘দুই বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে শিল্পকলা একাডেমিতে পরিচালক হিসেবে কাজ করছিলাম। এখনো আমার মেয়াদ শেষ হয়নি এবং নিয়োগ বাতিলেরও কোনো প্রক্রিয়া এখনো হয়নি। সুতরাং আমার চাকরিটা আছে। গত দুই মাস ধরে দেশে যা চলছে, তারপর থেকে শিল্পকলা একাডেমির অফিসের কাজ মোটামুটি বন্ধই বলা যায়। সপ্তাহখানেক হয়েছে নতুন ডিজি এসেছেন, তাই আমার মনে হয়েছে আমার অফিসে যাওয়া উচিত। যদিও সচিব স্যারের, পরামর্শ ছিল- আমি যাতে এখন শিল্পকলায় না যাই। কিন্তু আমার চাকরি এখনো আছে। আমারও ভালো লাগছিল না, তাই গিয়েছিলাম।’
শিল্পকলা একাডেমিতে অবস্থানকালে সাংবাদিকদের অনেক ফোন কল পেয়েছেন। তা স্মরণ করে জ্যোতি বলেন, ‘শিল্পকলায় যাওয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যে অনেক সাংবাদিক ফোন করে জানতে চাচ্ছিলেন, আমার অবস্থা সম্পর্কে। কারণ তারা জানতে পেরেছেন, আমাকে নাকি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। কিন্তু আমি তখনো বিষয়টি জানি না। আমার আরেক সহকর্মী ছিলেন। তিনি আমাকে বললেন, চলো বেরিয়ে যাই। আমি তাকে বলি, আমার চাকরি তো শেষ হয় নাই, তাহলে আমি কেন যাব? প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নিয়োগ বাতিল হলে অবশ্যই আমি আর আসব না।’
শিল্পকলা একাডেমির ডিজির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা জানিয়ে জ্যোতিকা জ্যোতি বলেন, ‘আমি যখন শিল্পকলায় যাই তখন ডিজি স্যার একটা মিটিংয়ে ছিলেন। এরপর উনি যখন বের হন, তখন আমি ওনার সঙ্গে দেখা করার জন্য বের হই। বেরিয়ে দেখি শিল্পকলায় অনেক লোকজন। অনেকে চেচামেচি করছে। আমি ডিজি স্যারের সঙ্গে দেখা করলাম। স্যার বললেন, দেখেন এই অবস্থা। এর মধ্যে অফিসে কেন এসেছেন? আপনারা বরং চলে যান, পরিস্থিতি সামলাতে দেন। পরে এ বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত হয় সে মোতাবেক কাজ করবেন।’
সহকর্মীদের আচরণে বিস্মিত জ্যোতিকা জ্যোতি। তা জানিয়ে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘ডিজি স্যারের সঙ্গে কথা বলে লবিতে ফিরে উপস্থিত অন্যদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু উনারা কোনো কথা বলবেন না। শুনতে পেলাম, আরো লোকজন খবর দেওয়া হয়েছে। আমাদের আটকে রাখবে বা কিছু করবে। আমার খুব অবিশ্বাস্য লাগছিল, সবার মুখ অপরিচিত লাগছিল। কারণ এরাই আমার সহকর্মী ছিলেন!’
জ্যোতিকা জ্যোতি বলেন, ‘এতবছর ধরে আমি অভিনয় করছি। কখনো দেশ ছেড়ে বাহিরে চলে যাওয়ার কথাও চিন্তা করিনি। তবুও এই অপমান কি আমার প্রাপ্য ছিল? কোনো দলের সমর্থক ছিলাম বলে কি দেশটা আমার নয়? আমি তাহলে কোথায় যাব? এই প্রশ্ন আপনাদের কাছে রেখে গেলাম।’
কালের আলো/ডিএইচ/কেএ