চট্টগ্রামে বন্যা পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা

প্রকাশিতঃ 4:41 pm | September 15, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর অধিকাংশই চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। বন্যা পরিস্থিতি আমরা মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। বন্যা পরবর্তী চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে হবে। চট্টগ্রামে বন্যা পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি।’

রোববার (১৫ সে‌প্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলনকক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগীয় এবং জেলাধীন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব সংস্থার বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সুধীবৃন্দের উপস্থিতিতে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি সরবরাহ নিয়ে বলেন, ‘চট্টগ্রাম ওয়াসা নগরের ৯০ ভাগ লোকের জন্য পানি সরবরাহ করছে। বাকি ১০ ভাগ লোককেও পানি সরবরাহের আওতায় দ্রুত নিয়ে আসতে হবে। শুধু পানি সরবরাহ করলেই হবে না, সরবরাহকৃত পানির বিশুদ্ধতাও নিশ্চিত করতে হবে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য যেসব পন্থা অবলম্বন করা দরকার, তা গ্রহণ করতে হবে।’

দেশের সমবায় সমিতিগুলো নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে হাসান আরিফ বলেন, ‘চট্টগ্রামসহ দেশের সমবায় সমিতিগুলোর অন্তর্কোন্দল অনেক বেশি। উচ্চ আদালতের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের মামলা হচ্ছে সমবায় সমিতিগুলোর। যে সমিতি তিন বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয়, দেখা যায় এই মামলাগুলোর কারণে তারা ৫ থেকে ১০ বছর মেয়াদ পর্যন্ত থেকে যায়। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে সমবায় সমিতিগুলো প্রতিষ্ঠা হয় এসব দ্বিধাবিভক্তি এবং অন্তর্দ্বন্দ্বের জন্য সমিতিগুলো সেসব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়।’

ঘাটের ইজারা নিয়ে জেলা পরিষদ এবং বিআইওডব্লিউটিএ—এর দ্বন্দ্ব নিরসনকল্পে উপদেষ্টা বলেন, ‘ঘাটের ইজারা নিয়ে জেলা পরিষদ এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্ব প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়। অনেক সময় এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ নিতেও দেখা যায়। ঘাটের ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি জাতীয়ভাবে পলিসি থাকা দরকার। তাহলে এলাকাভিত্তিক দ্বন্দ্ব গুলোও নিরসন হবে। প্রয়োজনে ঘাট ইজারা প্রদানের ক্ষেত্রে একটি আইনও করা যেতে পারে।’

সব সংস্থাকে একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশ
বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে সব সংস্থাকে একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।

মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা হাসান আরিফ। এসময় তিনি বলেন, আমাদের মূল কাজ ছিল বন্যা পরবর্তী অবস্থা নিয়ে করণীয় ঠিক করা।

বন্যা নিয়ে আর আক্ষেপ-আহাজারি না করে আগামীতে এ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমরা কি প্রচেষ্টা চালাচ্ছি তা পর্যালোচনা করছি। কারণ সব সংস্থার মধ্যে প্রচেষ্টা না থাকলে এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা কষ্টসাধ্য। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতে আমরা জোর দিচ্ছি। কারণ গ্রামীণ পর্যায় থেকে সবপর্যায়ে যোগাযোগটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া বন্যা পরবর্তী অন্যান্য যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাও দেখা হচ্ছে। সেজন্য সব সংস্থাকে সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে কথা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামের সভাপতিত্বে ওই মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আলী আখতার হোসেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম কামরুজ্জামান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমসহ আরও অনেকে।

কালের আলো/এমএএইচ/ইউএইচ