‘ঢাকা রক্ষায়’ এক হচ্ছে দুই সিটি কর্পোরেশন
প্রকাশিতঃ 6:08 pm | May 12, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
‘এক ঢাকা’ রক্ষায় মিলে যাচ্ছে দুই সিটি কর্পোরেশন
‘জলবায়ু কর্ম পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করার জন্য একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। ‘সবাই মিলে, সবার ঢাকা’ ‘সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা’ স্লোগানে রাজধানী ঢাকাকে টেকসই এবং স্থিতিস্থাপক শহর হিসেবে গড়ে তুলতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আওতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলা এবং পরিবেশের বিপর্যয় রোধে বৃক্ষরোপণ, বনায়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রোববার (১২ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে জলবায়ু কর্ম পরিকল্পনার উদ্বোধন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র ও সি৪০ সিটিস এর স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য মো. আতিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ.এস. এম. মাকসুদ কামাল, সি৪০ সিটিসের নির্বাহী পরিচালক মার্ক ওয়াটস।
অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বক্তব্য দেন সি৪০ বোর্ডের সভাপতি ও নিউইয়র্ক সিটির মেয়র সাদিক খান।
অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে অনেক কিছু শুনেছি। আমাদের গতিশীল শহরের জন্য এটি বড় চ্যালেঞ্জ। দ্রুত নগরায়ন, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং জলবায়ুজনিত চ্যালেঞ্জ পরিবেশ ও জীবনমানের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এই সমস্যাগুলো সংস্কারের জন্য ঢাকা দক্ষিণ এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশন যৌথভাবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, ডিএসসিসি শহরে পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক যানবাহন চালু করতে চায়। যদিও ঢাকা দক্ষিণ সিটির মাথাপিছু কার্বন নির্গমন বিশ্বের তুলনায় অনেক কম। সামনের দিনে ঢাকা শহরকে আরও বাসযোগ্য, জলবায়ু সহনশীল এবং পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তোলা হবে।
মেয়র তাপস আরও বলেন, শুধু কথা নয় বরং আমরা কাজ বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। যে ক্লাইমেট অ্যাকশন প্ল্যান নেওয়া হয়েছে সেটি ঢাকা দক্ষিণ এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশন একসাথে বাস্তবায়ন করবে। সেজন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে প্রতিবছর এই খাতে নিজস্ব অর্থ থেকে বাজেটে একটি পরিমাণে অর্থ বরাদ্দ রাখা শুরু হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে কম কার্বন নিঃসরণ করে। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দক্ষিণ অঞ্চলে লবণাক্ত পানি, খরা, বন্যার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। এগুলো সব উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর জন্য হয়েছে। সুতরাং এক্ষেত্রে ফান্ডিংয়ের জন্য তাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু উন্নত দেশগুলো শুধু কথাই বলে যায় তারা আজ পর্যন্ত আমাদের তেমন কোন ফান্ড দেয়নি। সুতরাং যে দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী তাদেরকে এই ক্লাইমেট ফান্ড দিতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে আরো সম্প্রসারিতভাবে একত্রিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে মানুষকে আরো বেশি সম্পৃক্ত করতে হবে। একটি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরাট প্রভাব মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। সেজন্য আমরা ঢাকা থেকে যেহেতু এই কার্যক্রম শুরু করেছি ভবিষ্যতে তা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। মানুষকে যদি সম্পৃক্ত করা সম্ভব না হয় তাহলে আমরা যত ভালো পরিকল্পনাই গ্রহণ করি না কেন সেটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
কালের আলো/বিএস/এমএম