নৌকা পেয়েও দুশ্চিন্তায় প্রার্থীরা

প্রকাশিতঃ 5:22 pm | November 28, 2023

কালের আলো রিপোর্ট:

রাজশাহী-১ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। তবে মনোনয়নবঞ্চিতরা তাকে ছাড় দিতে নারাজ। এই আসন থেকে নির্বাচন করতে চান আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপকমিটির সদস্য আয়েশা আখতার জাহান ডালিয়া। এ ছাড়াও এই আসন থেকে নির্বাচন করবেন তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মুণ্ডুমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানী, চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা ওরফে মাহিয়া মাহী এবং জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান আখতার। আখতার গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে কয়েক ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন।

হবিগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। তিনি এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। এই আসনে নৌকা চেয়ে পাননি আইনজীবী সায়েদুল হক সুমন। ইতোমধ্যেই ফেসবুকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। চাঁদপুর-৪ আসনে আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য শামসুল হক ভূঁইয়া। তিনি চাঁদুপর-৩ আসন থেকেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

শুধু এসব আসনেই নয় বেশিরভাগ আসনেই মনোনয়নবঞ্চিতরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন। প্রত্যয় নিয়ে জানিয়েছেন, ভোটের মাঠে তাঁরাই জয় ছিনিয়ে আনবেন। ফলে নৌকা পেয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছন প্রার্থীরা।

‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন নির্বাচিত হতে না পারে’—আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘুরছে। দলীয় প্রতীকের বিপক্ষে প্রার্থী হতে এটিকেই এখন অনুপ্রেরণার জায়গা হিসেবে দেখছেন নৌকাবঞ্চিতরা। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সংসদীয় আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ডজনখানেকের বেশি নেতা।

গত রোববার গণভবনে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী সবার সঙ্গে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সভাতেই তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা বলেন বলে আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন। তাঁদের ভাষ্যমতে, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ওপর চাপ প্রয়োগ না করতেও নৌকার প্রার্থীদের প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া গেছে। তাঁরা বলছেন, এবার আগে থেকেই নির্বাচনে না আসার ঘোষণা দিয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এতে করে মাঠে আওয়ামী লীগের শক্ত প্রতিপক্ষ নেই। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তৈরি করতে টানা তিনবার ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের অনেক আসনে প্রার্থী বদলের ইঙ্গিত ছিল। তাই আগে থেকেই নিজ নিজ এলাকায় ব্যাপক জনসংযোগ করেছেন নেতারা। বর্তমান সংসদ সদস্যের বিপক্ষে মনোনয়ন পেতে অর্থ খরচও করেছেন প্রচারে।

এ ছাড়া তাঁদের যাঁরা প্রচারে সমর্থন দিয়েছেন, তাঁদের প্রতিও দায়বদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এখন স্বতন্ত্র প্রার্থিতার সুযোগ থাকায় তাঁরা ভোটের মাঠে থাকতে চাইছেন। আবার বর্তমান সংসদের ৭১ জন সদস্য নৌকার মনোনয়ন হারিয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ মনে করছেন, নৌকার বিপক্ষে লড়েও জয় পেতে পারেন তাঁরা। তাই তাঁরাও এবার লড়তে পারেন নৌকার বিপক্ষে।

চট্টগ্রাম-১২ আসনের সংসদ সদস্য ও বর্তমান সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী নানা ঘটনায় বেশ কয়েকবার বিতর্কের মুখে পড়েন। এবার তাঁর বদলে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন। তবে মাঠ ছাড়ছেন না সামশুল হক। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়ার কথা ভাবছেন তিনি।

সিলেট-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সারোয়ার হোসেন। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘নেত্রীর নির্দেশনায় আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হব ইনশা আল্লাহ।’ ঢাকা-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমান মোল্লা। তাঁর পক্ষ হয়ে ফেসবুকে এ ঘোষণা দিয়েছেন তাঁর ভাই ও ডেমরা থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহুফুজুর রহমান মোল্লা।

টানা ষষ্ঠবারের মতো রাজবাড়ী-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়তে চান রাজবাড়ী সদর উপজেলায় টানা চারবারের চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক বিশ্বাস। এজন্য সম্প্রতি তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

নৌকার মনোনয়ন চেয়ে পাননি স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সাহাবুদ্দিন আহমেদ চঞ্চল। লম্বা সময় ধরে মানিকগঞ্জ-২ আসনে নিয়মিত রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি পালন করছেন তিনি। তাঁর বাবা সামসুদ্দিন আহমেদ এখানকার সাবেক সংসদ সদস্য। সাহাবুদ্দিন আহমেদ এবার তাই স্বতন্ত্র হয়ে লড়বেন এখানে। তাঁর বিপক্ষে নৌকার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম।

যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনে এবার প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন চিকিৎসক তৌহিদুজ্জামান তুহিন। তিনি আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা তোফায়েল আহমেদের জামাতা। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনির। তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এ বিষয়ে স্থানীয় সবার মতামত জানতে চেয়েছেন। ফরিদপুর-৪ আসনে আবারও নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ। এর আগে তিনি পরপর দুবার নৌকা নিয়ে হেরেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরীর (নিক্সন) কাছে। বর্তমান সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নিক্সন এবারও নৌকা চেয়ে পাননি। তবে আগের মতোই থাকছেন ভোটের লড়াইয়ে।

রংপুর-৬ আসনে আবারও নৌকা পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। নৌকা না পেয়ে এখান থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম। তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ইতিমধ্যেই।

চাঁদপুর-১ আসনে এবার নৌকা পেয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম মাহমুদ। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক বাণিজ্যসচিব গোলাম হোসেন। চাঁদপুরের অন্য আসনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে তোড়জোড় চলছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে নৌকা পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মো. শাহজাহান আলম। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মঈনউদ্দিন মঈন।

রাজশাহী-৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক জেলা সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। তবে এই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক না সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিন। তিনি বলেন, হয়তো কোনো কারণে এবার আমি মনোনয়ন পাইনি। তবে নৌকার বিপক্ষে ভোট করব না। দলের বিপক্ষেও যাব না। আমার জন্য যা ভালো হবে, নেত্রী তাই করেছেন। আমি নৌকার পক্ষে কাজ করব।

রাজশাহী-৪ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও তাহেরপুর পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ। তবে এই আসন ছাড়তে চান না বর্তমান সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। সোমবার (২৭ নভেম্বর) সকালে ফেসবুক লাইভে উপস্থিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন এনামুল। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, রক্তাক্ত জনপদ বাগমারাকে বসবাসের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আমার ভুলত্রুটি ছিল। আমি একাধারে দলের মানুষ দলের সঙ্গে বা নির্দলীয় শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কাজ করেছি। এই জনপদকে কেউ অশান্ত করবে, কোনোদিন করতে দেবো না। আমি আপনাদের সঙ্গে নিয়ে এই শান্তির জনপদের উন্নয়নকে অব্যাহত রাখব। আমি আপনাদের পাশে আছি। আপনারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে আমি বাগমারাবাসীর পাশে থাকতে চাই। আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করে দেশ ও বিদেশের কাছে জননেত্রী শেখ হাসিনার এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে চাই।

রাজশাহী-৫ আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারা। তবে এই আসন থেকে নির্বাচন করতে চান না বর্তমান এমপি হয়েও মনোনয়ন না পাওয়া ডা. মনুসর রহমান। এ বিষয়ে কোনো কথাও বলতে চাননি তিনি। শুধু বলেন, ‘আমার ভাগ্যে এই আসন ছিল না তাই পাইনি। তবে মানুষের পাশে থেকে সেবা করতে চাই।’

ডা. মনসুর না চাইলেও রাজশাহী-৫ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন দলের মনোনয়ন না পাওয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ। তিনি বলেন, রাজশাহী-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য যা যা প্রক্রিয়া করার, দরকার সবই আমি করেছি। আর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই আমি নির্বাচন করতে প্রার্থী হয়েছি। কারণ ভোট হতে হবে প্রতিযোগিতামূলক ও গ্রহণযোগ্য। প্রার্থী যত বেশি হবে, তত বেশি ভোটার ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে আগ্রহের সঙ্গে যাবে। তাই আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুসরণ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করতেই প্রার্থিতা ঘোষণা করেছি। পুঠিয়া-দূর্গাপুরের জনগণ আমাকে ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। আমি শতভাগ আশাবাদী, জনগণের ভোটে আমি জয়লাভ করব।

রাজশাহী-৬ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তার সঙ্গে ভোটে লড়তে চান রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য রায়হানুল হক রায়হান। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তিনি ১৯৯৯ সালের উপনির্বাচনে রাজশাহী-৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তবে একবারও দলীয় মনোনয়ন পাননি।

সাবেক সংসদ সদস্য রায়হানুল হক রায়হান বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি দীর্ঘদিন। এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে দল থেকে বাধা নেই। এ ছাড়া জনগণ চাইছে আমি যেন ভোটে আসি।

গণভবনের সভা থেকেই ফেসবুক পোস্টে ফরিদপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন দেশের স্বনামধন্য গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আরিফুর রহমান দোলন। এই আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান। আরিফুর রহমান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়াইয়ের অনুমতি দিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। কৃতজ্ঞতা। প্রধানমন্ত্রী বললেন, স্বতন্ত্র দাঁড়াতে কোনো অসুবিধা নেই। তৈরি থাকুন ফরিদপুর-১ আসনের জনগণ। আপনারাই শক্তি।’

নেত্রকোনা-১ (দুর্গাপুর-কলমাকান্দা) আসনে এবার নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন মোশতাক আহমেদ রুহী। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত জালাল উদ্দিন তালুকদারের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ঝুমা তালুকদার। তিনি নৌকার মনোনয়ন চেয়ে পাননি। দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করেছেন জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য।

বিএনপি ছাড়া অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। এবার তার পুনরাবৃত্তি দেখতে চায় না আওয়ামী লীগ। ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাও চায় মাঠে। তাই নৌকা পেতে ৩ হাজার ৩৫৬টি আবেদন ফরম কেনা নেতাদের কাজে লাগাতে চায় আওয়ামী লীগ। সারা দেশেই তাই নৌকাবঞ্চিত নেতাদের মধ্যে উৎসাহ ছড়িয়ে পড়ছে। প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ৩০ নভেম্বর।

এরইমধ্যে এলাকায় এলাকায় ভোটারদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করছেন অনেকেই। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাগে। ধারণা করা হচ্ছে, অধিকাংশ আসনেই প্রার্থী হবেন বঞ্চিতরা। দেশের বিভিন্ন উপজেলায় চেয়ারম্যানদের পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার হিড়িক পড়েছে। চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে সংসদ নির্বাচনে লড়তে চান তাঁরা।

যদিও মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘নির্বাচন ফ্রি স্টাইল হবে না, আমরা দেখি কারা কারা চাইছেন। সেটার উপর আমাদের একটা কৌশলগত সিদ্ধান্ত আছে।’

কালের আলো/বিএসবি/এমএইচ