ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল তুরস্কে, অভাবনীয় স্বীকৃতির ভাষ্য ডিজির
প্রকাশিতঃ 8:31 pm | February 08, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
তুরস্কে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। প্রাণঘাতী ভূমিকম্পে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথমবারের মতো উদ্ধারকাজ পরিচালনায় দেশের গন্ডি ছাপিয়ে তুরস্কে গেছেন ফায়ার সার্ভিসের ১২ সদস্যের দল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত বিশ্বের আদলে ফায়ার সার্ভিসকে গড়ে তোলায় এখন বিদেশের মাটিতেও অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ পরিচালনা করতে পারছে এই সেবা সংস্থাটি।
বিষয়টিকে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও পেশাদারিত্বের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবেই দেখছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। বুধবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অধিদপ্তরের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জন্য একটি অভাবনীয় স্বীকৃতি বলেও মনে করেন তিনি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রতিটি সদস্য এজন্য গর্বিত জানিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ফায়ার সার্ভিসের সকল সদস্য নিজের সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আস্থার প্রতিদান দেবেন।’ ১২ সদস্যের টিমকে আপাতত এক সপ্তাহের টার্গেট করে পাঠানো হচ্ছে। এরপর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ডিজি।
সংবাদ সম্মেলনে ডিজি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ থেকে পাঠানো সম্মিলিত সাহায্যকারী দলের সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের ১২ সদস্যের উদ্ধারকারী দলের তালিকা প্রকাশ করেন। উদ্ধারকারী দলে রয়েছেন ১ জন উপপরিচালক, ২ জন সহকারী পরিচালক, ১ জন উপসহকারী পরিচালক, ১ জন সিনিয়র স্টেশন অফিসার, ১ জন লিডার ও ৬ জন ফায়ারফাইটার।বিমানবাহিনীর সি-১৩০ বিমানযোগে বুধবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০ টায় তারা তুরস্কের উদ্দেশে দেশত্যাগ করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স থেকে উদ্ধারকারী দলের ১২ সদস্য ইন্টারন্যাশনাল সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অ্যাডভাইজারি গ্রুপের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী বিধ্বস্ত ভবনে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ পরিচালনা বিষয়ে আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
সংবাদ সম্মেলনে ডিজির বার্তা
সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। ঢাকায় অপরিকল্পিত নগরায়ন যেভাবে হচ্ছে সেটিকে নগরবাসীর জন্য বড় ঝুঁকির বিষয় বলেও তিনি মনে করেন।
মাইন উদ্দিন বলেন, অনেতেই বলছেন যে কোনো সময়ে ঢাকা শহরে এমন ভূমিকম্প হতে পারে। এমন বিপর্যয় মোকাবেলায় আমরা বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা, জনবল প্রশিক্ষিত করাসহ প্রয়োজন অনুযায়ী জনবল বাড়ানো হচ্ছে।
ফায়ার ডিজি বলেন, আমাদের সাথে যারা এসব বিপর্যয়ে কাজ করবেন যেমন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ বা অন্যান্য বিভাগ রয়েছে। তাদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আমাদের বৈদেশিক যেসব বন্ধু আছেন তাদের সাথেও প্রতিনিয়ত এসব বিষয় নিয়ে আমাদের কাজ ও অভিজ্ঞতা শেয়ার হয়।

পুরান ঢাকায় অপরিকল্পিত ভবন হওয়ায় উদ্বিগ্ন ফায়ার সার্ভিস এমনটি জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের এখানে কয়েকটা জিনিস মনে রাখতে হবে অপরিকল্পিত নগরায়ন যেভাবে হচ্ছে সেটা আমাদের জন্য সত্যিই একটা ঝুঁকি। পুরান ঢাকার মতো যে জায়গাগুলো আছে সেখানে আমরা হয়তো প্রশিক্ষিত জনবল থাকব, ইকুইপমেন্ট থাকবে কিন্তু আমরা পৌঁছাতে পারব কি?
তিনি আরও বলেন, আরেকটি বিষয় আমাদের একটু লক্ষ্য রাখা দরকার আমাদের মাটির নিচে সুয়ারেজ সিস্টেম আছে, গ্যাস সিস্টেম আছে, ইলেক্ট্রসিটি সিস্টেম আছে যখন ভূমিকম্প হবে তখন এগুলোর কি হবে এবং এই আজকের সেবামূলক সিস্টেমগুলোই কিন্তু আমাদের জীবন নাশের হুমকি হবে। এজন্য আমাদের কি করতে হবে, গ্যাস সিস্টেমে অটো ভায়োলিন সিস্টেম থাকতে হবে যেনো যদি একটা ঝাঁকুনি হয় তাহলে সেটা অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যাবে। যাতে অগ্নি দুর্ঘটনা না ঘটে।
কালের আলো/বিএএ/এএএমকে