মানসম্মত দুধ ও মাংস উৎপাদনে ভূমিকা রাখবে টিএমআর : প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 6:19 pm | January 19, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
দেশে গবাদি পশুর খাদ্য ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হলো আধুনিক প্রযুক্তি। গো খাদ্যের সমস্যার কথা মাথায় রেখে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের চেষ্টায় সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে একটি টোটাল মিক্সড রেশন (টিএমআর) প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের কলমা অংশে নির্মিত টোটাল মিক্সড রেশন (টিএমআর) প্ল্যান্ট উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদার ও কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের পরিচালক ড. এ বি এম খালেদুজ্জামানসহ অন্য কর্মকর্তারা।

এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর প্রাণিসম্পদ খাতে রাষ্ট্রীয় যত পরিকল্পনা, গবেষণা, পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা দরকার সব সুযোগ করে দিয়েছেন। আজ প্রাণিসম্পদের উৎপাদন এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন শুধু নয়, বিদেশে রপ্তানির পর্যায়ে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, দেশের প্রাণিসম্পদের উন্নয়নের ফলে খাবারের একটি বড় অংশ দুধ, মাংসের যোগান এ খাত থেকে আসছে। প্রাণিজ আমিষের যোগান এ খাত থেকে আসছে। প্রাণিসম্পদ খামারিরা উদ্যোক্তা হয়ে বেকারত্ব দূর করছে। গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে। মাংস ও মাংসজাত পণ্য বিদেশে রপ্তানির সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এভাবে প্রাণিসম্পদ খাত দেশের উন্নয়নে অবদান রাখছে। দেশের অর্থনীতিতেও বড় ভূমিকা রাখছে।
মন্ত্রী বলেন, প্রাণিসম্পদ খাতের টেকসই উন্নয়ন করা এখন আমাদের লক্ষ্য। শুধু মাংস ও দুধ উৎপাদন বাড়ালেই হবে না। মাংস ও দুধে যেসব উপকরণ থাকা আবশ্যক, সে উপকরণ তৈরির জন্য গবাদিপ্রাণীকে যথাযথভাবে প্রজনন ও লালন-পালন করতে হবে। গবাদিপ্রাণীর জন্য সুষম খাদ্য তৈরি ও খাদ্যের অপচয় রোধ এবং বিদেশ থেকে প্রাণিখাদ্য আমদানির প্রবণতা বন্ধের জন্য এ খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে দেশে টিএমআর-এর সূচনা করা হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে এ প্রথম দেশে টিএমআর কারখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে সরকারি খামারে টিএমআর পৌঁছানো হবে এবং পর্যায়ক্রমে সেটা বেসরকারি খামারে দেওয়া হবে। বেসরকারি খাতে এ ধরণের টিএমআর কারখানা প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে সরকার সহায়তা দেবে, কর মওকুফ করে দেবে- জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী আরও যোগ করেন, আমরা মৎস্য খাদ্য ও প্রাণিখাদ্যের জন্য বিদেশের দিকে তাকিয়ে থাকতে চাই না। যারা প্রাণিসম্পদ খাতের খামারি বা উৎপাদক হবেন, তাদের প্রাণিখাদ্য তৈরির বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে। সরকার নীতিনির্ধারণী ও কারিগরি সহায়তা, গবেষণা সাহায্যসহ সবধরণের পৃষ্ঠপোষকতা দেবে।
এর আগে মন্ত্রী নামফলক উন্মোচন ও ফিতা কেটে টিএমআর কারখানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং কারখানাটি ঘুরে দেখেন।

টিএমআর কারখানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে এ সংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রাণিসম্পদের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে বাংলাদেশে। বিদেশ থেকে প্রাণীর সব খাদ্য আমদানি করতে গেলে যেমন বৈদেশিক মুদ্রা চলে যায়, আবার অনেক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পরিসরে নানা সমস্যার কারণে প্রাণিখাদ্য আমদানিতে সংকটে পড়তে হয়।
তিনি বলেন, ফলে এ খাতে অনেক ক্ষতিকর অবস্থা হয়। এ জন্য সরকার দেশের অভ্যন্তরে পরিপূর্ণ প্রাণিখাদ্য তৈরির লক্ষ্য নিয়ে জার্মানির মেশিনারি ও প্রযুক্তি দিয়ে টিএমআর কারখানা তৈরি করেছে। টিএমআর এর মাধ্যমে প্রাণীর জন্য পুষ্টিসম্মত ও গুণগতমানের খাদ্য সরবরাহের সূচনা হলো বাংলাদেশে। এ ধারা কেন্দ্র থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হবে। ফলে প্রাণিসম্পদের ব্যাপক উৎপাদন গুণগত মানে আরও বৃদ্ধি পাবে।

কালের আলো/এসবি/এমএম