কী কথা হলো হুদা-আব্বাসের?

প্রকাশিতঃ 6:49 pm | December 08, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

এক সময় বিএনপির মন্ত্রী ছিলেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। প্রায় ৬ বছর ধরে বিএনপির বাইরে তিনি। তাই বিএনপি নেতাদের বিপরীত মেরুতে অবস্থান তার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল শুনানিতে অংশ নিতে শনিবার নির্বাচন কমিশনে আসেন নাজমুল হুদা। একই দিন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের আপিল শুনানিও হয়।

নির্বাচন কমিশনে দীর্ঘ কয়েক বছর পর একসঙ্গে দেখা গেল ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ও মির্জা আব্বাসকে। পাশাপাশি বসে তারা একে অন্যের সম্পর্কে জানলেন। নানা আলাপচারিতায় মেতে উঠলেন দু’জন। করলেন চলমান রাজনীতির গল্প। কারণ দু’জনই অপেক্ষা করেছিলেন শুনানির জন্য। হাতে অনেক সময় তাই বাদ গেল না খোশগল্পও।

নির্বাচন ভবনে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসের বাইরে তারা দু’জনেই পাশপাশি দুটি চেয়ারে বসে ছিলেন।

সেখানে প্রথম থেকে অবস্থান করছিলেন মির্জা আব্বাস। পরে নাজমুল হুদা আসেন। পাশাপাশি বসেন দু’জনে। এ সময় নামজুল হুদা বলেন, ‘আমার মেয়ে (অন্তরা সেলিমা হুদা) ঢাকা-১ আসন থেকে মনোনয়ন নিয়েছিল। কিন্তু ‘তোমরা’ তাকে বাদ দিলে।’ এ সময় হেসে ওঠেন দু’জনেই।

তবে বেশির ভাগ সময় মির্জা আব্বাস চলমান রাজনীতি নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন। অন্যদিকে হুদা আসন্ন নির্বাচনে তিনিই জয়ী হবেন বলে বার বার বলেন।

জানা গেছে, ২০১০ সালেল নভেম্বরে নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে দলের সব স্তর থেকে বহিষ্কার করে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। সেই বৈঠকে বিদেশে থাকায় সেদিন উপস্থিত ছিলেন না মির্জা আব্বাস। সে সময় নাজমুল হুদা ছিলেন বিএনপির ১ নম্বর ভাইস চেয়ারম্যান।
তাকে বহিষ্কার করার কয়েক মাস পর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদার প্রতি দুঃখ প্রকাশ করে আবার দলে ভেড়েন তিনি। এরপর ২০১২ সালের ৬ জুন নিজেই দল থেকে পদত্যাগ করেন। ওই বছর ২৩ মে বেগম খালেদা জিয়াকে সংলাপে বসার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দেয়ার অনুরোধ জানান। সে অনুরোধ না রাখায় নিজেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন নাজমুল হুদা।

পরবর্তীতে ২০১২ সালের ১০ আগস্ট বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট (বিএনএফ) নামে একটি দল গঠন করেন নাজমুল হুদা। তবে কিছুদিনের মাথায় তাকে এ দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়।

২০১৫ সালে তৃণমূল বিএনপি নামে আরেকটি দল গঠন করেন সাবেক এ যোগাযোগমন্ত্রী।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়েছিলেন। যদিও পরবর্তীতে যে মনোনয়নপত্র তিনি দাখিল করেন তাতে কোনো দলের নাম কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থী কোনোটাই উল্লেখ করেননি। রিটার্নিং কর্মকর্তা এ জন্যই তাকে অবৈধ ঘোষণা করেন।

ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করলে নির্বাচন কমিশন তাকে শুনানির জন্য সময় দেয় ৮ ডিসেম্বর। শুনানিতে তার প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করে ইসি।

এদিকে মির্জা আব্বাস ঢাকা-৮ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করে বৈধতা পেয়েছেন। সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন তার মনোনয়নপত্র বাতিল চেয়ে ইসিতে আপিল করেন। আর এ আবেদনের শুনানিতে অংশ নিতে আব্বাসও ইসিতে আসেন।

কালের আলো/এএ/এমএইচএ