করোনার ৪র্থ ডোজ টিকা কার্যক্রম শুরু

প্রকাশিতঃ 10:41 am | December 20, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

সারা দেশে আজ মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে টিকার চতুর্থ ডোজের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এ দফায় ষাটোর্ধ্ব, সম্মুখসারির যোদ্ধা ও কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন, গর্ভবতী নারী এবং দুগ্ধদানকারী মায়েদের টিকা দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক আহমেদুল কবীর।

আহমেদুল কবীর বলেন, টিকার অ্যান্টিবডি বেশিদিন থাকে না। এজন্য সরকার চতুর্থ ডোজ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

তিনি বলেন, ৪ কোটি মানুষ ৪র্থ ডোজ নেওয়ার উপযোগী। তবে আপাতত আমরা ৫টি ক্যাটাগরিতে এই টিকা দেব। এক্ষেত্রে আমাদের মানুষ আছে ৮০ লাখ।

আহমেদুল কবির বলেন, এরইমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ৪৬০ জনকে চতুর্থ ডোজ দেওয়া হয়েছে। আজ থেকে সারাদেশে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আমাদের প্রায়োরিটিতে সম্মুখসারীর যোদ্ধা, গর্ভবতী মায়েরা আছেন।

তিনি বলেন, আজ অনেকেই টিকা নিয়েছেন, ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে আমরা টিকার আওতায় আনতে চাই। বাংলাদেশ টিকায় মাইলফলক অর্জন করেছে, দেশের মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী। যে কারণে করোনায় হাসপাতালে ভর্তি কম, মৃত্যুও কম।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হকের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে টিকা কেন্দ্রগুলোকে এমন নির্দেশনা দিয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘করোনা মহামারির বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার দেশের জনগণকে দ্বিতীয় বুস্টার বা চতুর্থ ডোজ টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় নিম্নোক্ত নির্দেশনা মেনে ২০ ডিসেম্বর থেকে দেশব্যাপী টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে।

নির্দেশনাগুলো হলো

১. চতুর্থ ডোজ হিসেবে ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে (এমআরএনএ)।

২. তৃতীয় ডোজ প্রাপ্তির পর চার মাস অতিবাহিত হয়েছে এমন ব্যক্তিদের চতুর্থ ডোজ দেওয়া যাবে।

ক. ৬০ বছর এবং এর বেশি বয়সি ব্যক্তি টিকা পাবেন।

খ. দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ১৮ বছর এবং এর বেশি বয়সি জনগোষ্ঠী টিকা পাবেন।

গ. স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জনগোষ্ঠীকে টিকা দেওয়া হবে।

ঘ. গর্ভবতী মহিলা ও দুগ্ধদানকারী মাকে টিকা দেওয়া হবে।

ঙ. সম্মুখসারির যোদ্ধা (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী; অনুমোদিত বেসরকারি ও প্রাইভেট স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা-কর্মচারী; প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত সব সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত কর্মকর্তা-কর্মচারী; বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা; সম্মুখ সারির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী; সামরিক বাহিনী-বেসামরিক বিমান; রাষ্ট্র পরিচালনার নিমিত্ত অপরিহার্য কার্যালয়; সম্মুখসারির গণমাধ্যমকর্মী; নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি: সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার সম্মুখসারির কর্মকর্তা-কর্মচারী; সব ধর্মের ধর্মীয় প্রতিনিধি: মৃতদেহ সৎকার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি; জরুরি বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, পয়নিষ্কাশন ও ফায়ার সার্ভিসের সম্মুখ সারির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী; রেল স্টেশন, বিমানবন্দর, স্থল বন্দরের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী; জেলা ও উপজেলায় জরুরি জনসেবায় সম্পৃক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী; ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী, জাতীয় দলের খেলোয়াড় ও চিকিৎসা শিক্ষা সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ে ছাত্র- ছাত্রী)।’

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ‘দেশব্যাপী সিটি করপোরেশন/ জেলা/ উপজেলা/ পৌরসভা পর্যায়ে অবস্থিত সব স্থায়ী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন সেন্টারে (সরকারি বিশেষায়িত হাসপাতাল, সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ৫০০/২৫০/১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ইত্যাদি) চলমান বুথে চতুর্থ ডোজ টিকা প্রদান করতে হবে। প্রচারণার নিমিত্ত কেন্দ্রসমূহে চতুর্থ ডোজ প্রদানের বুথের বাইরে দৃশ্যমান স্থানে সংযুক্ত ফরম্যাট অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ব্যানার তৈরি ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।

কালের আলো/এসবি/এমএম

Print Friendly, PDF & Email