প্রকল্পের নামে অর্থের অপচয় করা যাবে না : স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 7:48 pm | July 31, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, প্রকল্প গ্রহণের নামে সরকারি অর্থের অপচয় করা যাবে না। ইমপেক্ট এবং আউটপুট বিশ্লেষণ করে প্রকল্প নেয়ার তাগিদ দিয়ে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প পরিহার করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

রবিবার (৩১ জুলাই) মন্ত্রণালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত পদক্ষেপসমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করীম চৌধুরী সভায় উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম দেশের ইকোনমিক হাব হিসেবে পরিচিত। এই শহরটি দেশের আইডল সিটি হবে হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে। দেশের অর্থনীতির অন্যতম এই শহরকে কোনোভাবেই অবমূল্যায়ন করার উপায় নেই। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে যেসব প্রকল্প নেয়া হয়েছে সেগুলো কতটা কার্যক্রর হয়েছে তা দেখার প্রয়োজন রয়েছে। যদি কার্যক্রর না হয় অথবা যাচাই বাছাই না করে গ্রহণ করা হলে তা অত্যন্ত দুঃখজনক।

খাল ও ড্রেনগুলো পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আপনারা খাল দখল করে অবৈধভাবে বিল্ডিং বানিয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ করে রেখেছেন। খালের উপর দোকান-পাট বানিয়েছেন। এগুলোর কারণে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সবাইকে সচেতন হতে হবে। কিছু মানুষের জন্য কোটি কোটি মানুষের জীবন অতিষ্ট হতে পারে না। এসময় সকল খাল দখলমুক্ত করারও নির্দেশ দেন তিনি।

তিনি আরো জানান, সমস্যা সমাধানে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সকল পক্ষকে নিয়ে তিনি অনেকগুলো সভা করে সরকারি-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা/দপ্তরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সমস্যা একবারে নিরসন হয়েছে এমনটি দাবি করা যাবে না। তবে অগ্রগতি হয়নি এটি অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা দায়িত্বে চিরকাল থাকবো না। আজ মন্ত্রী বা সচিব বা বড় কোনো পদে আছি। কালকে নাও থাকতে পারি। কিন্তু আমরা যদি আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করি তাহলে দেশটাতে পরিবর্তন আসবে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উন্নত-সমৃদ্ধ সুন্দর একটি দেশ পাবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও দেশের বাহিরে নানাবিধ কাজে ব্যস্ত থাকেন। আভ্যন্তরীণ চাপ কমাতে মন্ত্রী-সচিবসহ সংশ্লিষ্ট জনবল নিয়োগ করা আছে দায়িত্ব পালন করার জন্য। পদ-পদবী নিবেন আর কেউ দায়িত্ব নিবেন না, কাজ করবেন না এটা তো হতে পারে না।

মন্ত্রী বলেন, জলাবদ্ধতার সমস্যা চট্টগ্রামের বড় একটি সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী নিজে সময়ে সময়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ি পদক্ষেপ নেয়াও হয়েছে। এই সমস্যার পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যা সমাধানে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সরকারের অনেক সফলতা আছে।

তিনি জানান, বর্জ্য সমস্যা বর্তমানে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। গৃহস্থালি বর্জ্যের পাশাপাশি ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল বর্জ্য, মেডিকেল ব্রিজ, নির্মাণ সামগ্রীর বর্জ্যসহ অন্যান্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। আর তা হলো বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন। খুব শিগগিরই ঢাকা, গাজীপুর এবং চট্টগ্রামসহ অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনগুলোতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।

তাজুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে হবে। চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে চাকতাই খাল খনন, কর্ণফুলী নদীর ড্রেজিংসহ সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সমস্যাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে মেয়র এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে তাগিদও দেন তিনি।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব শহীদ উল্লা খন্দকারসহ স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম উন্নয়ন ও বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর/সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/বিএসবি/এমএম

Print Friendly, PDF & Email