কলেজের মালিকানা দ্বন্দ্বে অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মনকে হত্যা : র‌্যাব

প্রকাশিতঃ 5:07 pm | August 09, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:

ঢাকার আশুলিয়ায় নিখোঁজের ১৯ দিন পর মিন্টু চন্দ্র বর্মণ (৩৬) নামের এক কলেজ অধ্যক্ষের পাঁচ টুকরা লাশ উদ্ধার করেছে র‌্যাব। ঘটনায় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীসহ গ্রেফতার করা হয়েছে তিনজনকে।

র‌্যাব জানিয়েছে, মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব ও ঈর্ষা থেকে অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মনকে ছয় টুকরো করে হত্যা করেন একই প্রতিষ্ঠানের অংশীদার শিক্ষকসহ তিনজন।

সোমবার (৯ আগস্ট) দুপুরে আশুলিয়ার নরসিংহপুর রূপায়ন মাঠ এলাকায় সাভার রেসিডেন্টশিয়াল স্কুল এন্ড কলেজেরে সামনে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব সদর দফতরের মিডিয়া উইংয়ের কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, দুই বছর আগে নরসিংহপুর গ্রামে সাভার রেসিডেন্টশিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ নামে প্রতিষ্ঠান চালু করেন মিন্টু চন্দ্র বর্মন, রবিউল ইসলাম ও মো. মোতালেব। মিন্টু চন্দ্র প্রতিষ্ঠানের ভিতরে থাকতেন। গত ১৩ জুলাই রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পরে ২২ জুলাই তার ছোট ভাই আশুলিয়া থানায় নিখোঁজ জিডি করেন।

র‌্যাবের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় গত মধ্যরাতে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে রবিউলকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মনকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তার দেওয়া তথ্যে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে রবিউলের ভাগ্নে মো. বাদশা ও রাজধানীর আশকোনা থেকে মোতালেব হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব ও ঈর্ষা থেকে মিন্টুকে তারা গত ৭ জুলাই হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারা করোনার মধ্যেও রাতে কোচিং চালাতেন। ১৩ জুলাই কোচিং শেষে ১০৬ নম্বর রুমে মিন্টুকে ডেকে নেয় রবিউল। পরে তার মাথায় বাদশা হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন। এরপর দা দিয়ে মিন্টুকে ছয় টুকরো করেন আসামিরা।

তিনি জানান, শরীরের অংশগুলো স্কুলের বাউন্ডারীর ভিতরে মাটি চাপা দেয়। হত্যাকারীরা তাদের ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র (দা) নিকটবর্তী একটি স্থানে বালুর নিচে ও পার্শ¦বর্তী এলাকায় শাবল ফেলে দেয়। পরবর্তীতে জামাকাপড় ও মাথা প্যাকেট করে একটি ব্যাগে নিয়ে ঢাকার আশকোনায় একটি ডোবায় পুতে ফেলে এবং পথিমধ্যে আশকোনায় একটি রাস্তার পাশে ব্যাগ হাতুড়ি ফেলে দেয়। এছাড়া এয়ারপোর্ট রেল ষ্টেশনের নিকটবর্তী ভিকটিমের মোবাইলটি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে ফেলে দেয়। এরপর তারা আত্মগোপনে চলে যায়।

তিনি বলেন, কলেজের ভিতরে পুঁতে রাখা দেহাবশেষ সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিলো খুনিদের। কলেজের ভিতরের সিঁড়ির নিচ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দা, হাতুড়ি, আসামিদের রক্তমাখা প্যান্ট, শার্ট ও শাবল উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, খুনি মোতালেবকে রাজধানীর আশকোনা থেকে এবং খুনি বাদশাহকে রংপুরের গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া হত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট শাবল, দুই হত্যাকারীর গেঞ্জি ও জিনসের প্যান্ট আলামত হিসেবে উদ্ধার করেছে র‍্যাব।

কালের আলো/এসবি/এমআরকে