এফএএস ইনভেস্টমেন্টের সাবেক ৩০ কর্মকর্তাসহ ৩৪ জনকে দুদকে তলব

প্রকাশিতঃ 2:48 pm | August 09, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) কেলেঙ্কারির ঘটনার অংশ হিসেবে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ও এমডিসহ ৩০ কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আগামী ১৬, ১৭ ও ১৮ আগস্ট তাদেরকে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে হাজির হওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

রবিবার (৮ আগস্ট) কমিশনের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের স্বাক্ষর করা পাঠানো নোটিশে তাদের তলব করা হয় বলে।

সোমবার (৯ আগস্ট) দুদকের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান এ বিষয়ে বলেন, এর আগে পি কে হালদার ইস্যুতে আমাদের টিম ১৫টি মামলা করেছে। অনুসন্ধান পর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি।

এফএএস ফাইন্যান্সের নথিপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে দুদক কর্মকর্তারা জানান, ২০১৬ সালের ২২ মার্চের পর্ষদ সভায় দ্রিনান অ্যাপারেলসের নামে ৪০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন হয়। প্রতিষ্ঠানটিকে পোশাক ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য এ ঋণ দেওয়া হয়। এ ঋণের বিপরীতে অবসায়নের সিদ্ধান্ত হওয়া পিপলস লিজিংয়ের ১ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৫২২টি শেয়ার জামানত রাখা হয়। পরে জামানত পরিবর্তন করে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রহমান কেমিক্যালের ৮ লাখ ৫৮ হাজার ও ময়মনসিংহের ভালুকার ১০২ শতক জমি বন্ধক দেওয়া হয়। ভালুকার ভূমি নিবন্ধন কার্যালয়ের নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এ জমির মালিক পি কে হালদার। অর্থাৎ ঋণটি বের করা হয় জাহাঙ্গীর আলমের সরবরাহ করা কাগুজে মালিক ও পি কে হালদারের জমি ব্যবহার করে। আর একই নথিপত্র ব্যবহার করে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে ৬০ কোটি টাকা বের করা হয় বলে দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে গতকাল মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান খানের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত। দুদক সূত্র জানায়, মো. আতিকুর রহমান খানের বিরুদ্ধে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অন্যান্য ব্যক্তির যোগসাজশে স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তির বিনিময়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান চলছে। দুদকের সহকারী পরিচালক অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম তার আবেদনে আরও উল্লেখ করেন অভিযুক্ত ব্যক্তির নামে সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৬টি, প্রাইম ব্যাংকে ২৯টি, ঢাকা ব্যাংকে ১০টি, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে ১০টি ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকে ৩টিসহ ১৫টি ব্যাংকে ৯৭টি অ্যাকাউন্টে ছয় বছরে মোট ১১০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এ ছাড়া বনশ্রীর মসজিদ মার্কেটের সঙ্গে বিশ্বাস লাইব্রেরি নামে তার বিশাল বইয়ের দোকান আছে, আফতাবনগর বি-ব্লকের ৩৪ নম্বর প্লটটিতে বিশ্বাস বাজার নামে তার সুপারশপ, ভিশন-৭১ নামে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং আফতাবনগর ও বনশ্রীতে তার পাঁচটি বাড়ি আছে। যা তার জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত সম্পদ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কালের আলো/আরএস/এমএইচএস