সাকিবের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে সিরিজ জয় বাংলাদেশের

প্রকাশিতঃ 9:44 pm | July 18, 2021

স্পোর্টস ডেস্ক, কালের আলোঃ

সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। ৯৬ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন তিনি।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিত করতে ২৪১ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ। রবিবার তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রথমে ব্যাট করা জিম্বাবুয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪০ রান করে।

বিশ্বকাপ সুপার লিগের অন্তর্ভুক্ত চলতি ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে রোববার হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে নামে দুদল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিত করতে ২৪১ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।

এদিন সাবধানী শুরু করে বাংলাদেশ। দশম ওভার পর্যন্ত দেখেশুনে খেলে। তবে সেই ওভারে লুক জঙ্গের করা তৃতীয় বলে কাট করতে গেলে সিকান্দার রাজার কাছে ক্যাচ দেন তামিম ইকবাল। ৩৪ বলে ২০ রান করেন টাইগার অধিনায়ক।

তামিম ইকবালের পর দ্রুত ফিরে যান লিটন দাশ। রিচার্ড এনগাভারার বলে তুলে মারতে গিয়ে ব্যক্তিগত ২১ রানে ব্র্যান্ড টেইলরকে ক্যাচ দেন। ৩৩ বলে ৪টি চারে নিজের ইনিংস সাজান তিনি। এরপর লুক জঙ্গের দ্বিতীয় শিকার হয়ে দ্রুত ফিরে যান মোহাম্মদ মিঠুন (২)। দলীয় ৫০ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এদিকে রানের দেখা পাচ্ছিলেন না সাকিব আল হাসান। চলতি বছরের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ব্যাট হাতে দাপট দেখানোর পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিফটি অধরা ছিল সাকিবের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে সে আক্ষেপ কিছুটা ঘুচল তার। ৫৯ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৯তম ফিফটি তুলে নেন তিনি।

এর আগে তরুণ পেসার শরিফুল ইসলামের বিধ্বংসী বোলিং সত্ত্বেও বাংলাদেশের সামনে ৯ উইকেটে ২৪০ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করিয়েছে জিম্বাবুয়ে।

জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেছেন ওয়েসলি মাধভিরে। বাংলাদেশের হয়ে পেসার শরিফুল ইসলাম সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন। সাকিব আল হাসান নিয়েছেন ২ উইকেট।

টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় জিম্বাবুয়ে। আগে ফিল্ডিং করতে নেমে প্রথম ওভারেই দলকে উল্লাসে মাতিয়েছেন ডান হাতি পেসার তাসকিন আহমেদ। তার করা প্রথম ওভারের শেষ বলে কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে দাঁড়ানো আফিফ হোসেন ধ্রুবর হাতে ধড়া পড়েছেন ডানহাতি ওপেনার তিনাশে কামুনহুকামুই।

টিমসেন মারুমার ইনজুরির কারণে এই ম্যাচের মূল একাদশে জায়গা পেয়েছেন কামুনহুকামুই। কিন্তু সুযোগটি কাজে লাগাতে পারলেন না তিনি। আউট হওয়ার আগে ৫ বল খেলে করতে পেরেছেন মাত্র ১ রান। সেই রানটিও এসেছিল আউটসাইড এজ থেকে।

তবে সাইফউদ্দিনের করা চতুর্থ ওভারে জোড়া বাউন্ডারিতে ১০ রান তুলে ড্রেসিংরুমে ইতিবাচক বার্তা দেন আগের ম্যাচে দলের পক্ষে একমাত্র হাফসেঞ্চুরিয়ার চাকাভা। তাসকিনের করা পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে মিড অনে মাহমুদউল্লাহ ও ডিপ থার্ড ম্যানে মারুমানির ক্যাচ ছেড়ে দেন সাইফউদ্দিন।

অবশ্য জোড়া জীবন পেয়েও কিছুই করতে পারেননি মারুমানি। ষষ্ঠ ওভারে প্রথমবারের মতো আক্রমণে আসেন মিরাজ। প্রথম চার বল খেলেন চাকাভা। পঞ্চম বলে স্ট্রাইক পেয়েই বড় শটের চেষ্টা করেন মারুমানি। কিন্তু বল তার ব্যাট ও পা হয়ে আঘাত হানে স্ট্যাম্পে। ফলে সমাপ্তি ঘটে ১৮ বলে ১৩ রানের ইনিংসের।

মাত্র ৩৩ রানে জোড়া উইকেট পতনের পর উইকেটে আসেন টেলর। শুরু থেকেই খেলতে থাকেন আত্মবিশ্বাস নিয়ে। বিশেষ করে সাকিবের ওভারে ইনসাইড আউট শটে বাউন্ডারি কিংবা শরিফুল ইসলামের ওভারে ফ্লিক শটে ছক্কা মেরে নিজের কর্তৃত্বেরই জানান দেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক।

টেলরের আধিপত্য বিস্তার করা ব্যাটিংয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিটি এগুচ্ছিল পঞ্চাশ রানের দিকে। তবে ইনিংসের ১৬তম ওভারে নিজের চতুর্থ ওভার করতে এসে সরাসরি বোল্ড করে আগের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের একমাত্র হাফসেঞ্চুরিয়ান চাকাভাকে সাজঘরে পাঠিয়ে দেন সাকিব। ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলিয়ে বল স্ট্যাম্পে আঘাত করান তিনি। আউট হওয়ার আগে ৩২ বলে ২ চারের মারে ২৬ রান করেছেন চাকাভা।

এরপরই প্রতিরোধ গড়ে দাঁড়িয়ে যান ব্রেন্ডন টেলর এবং ডিওন মায়ার্স। টেলর ৪৬ রান করার পর দুর্ভাগ্যজনক হিটআউট হন। বোলার ছিলেন শরিফুল ইসলাম। ডিওন মায়ার্সও বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন। ৫৯ বলে ৩৪ রান করে মায়ার্স আউট হন সাকিব আল হাসানের বলে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ তুলে দেন মায়ার্স।

এরপর হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মাধভিরে। শরিফুল ইসলামের বলে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ৫৬ করে। সিকান্দার রাজা কিন্তু মাধভিরের সঙ্গে ভালো একটা জুটি গড়েন। ৪৪ বলে তিনি করেন ৩০ রান। লুক জংউই ৮ রান করে আউট হন। তেন্দাই চাতারা ৪ এবং রিচার্ড এনগারাভা অপরাজিত থাকেন ৭ রান করে।

১০ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে ক্যারিয়ারসেরা ৪ উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম। ২ উইকেট নেন সাকিব আল হাসান, ১টি করে উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন এবেং তাসকিন আহমেদ।

কালের আলো/টিআরকে/এসআইএল