জনবান্ধব শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাতের অপচেষ্টার অভিযোগ যুবলীগ চেয়ারম্যানের

প্রকাশিতঃ 7:28 pm | February 17, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

অপপ্রচারের মাধ্যমে জনবান্ধব শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করার অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। তিনি বলেছেন, বিভিন্ন অপপ্রচারের মাধ্যমে অনেকে অনেক বড় বড় কথা বলেন। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন মহল থেকে অপপ্রচারের মাধ্যমে জনবান্ধব জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করার বিভিন্ন রকম অপচেষ্টা চলছে। সকল অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।

শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণ ও ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের উদ্যোগে ফার্মগেইট যুবলীগ চত্বরে পৃথক পৃথক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ নেতাকর্মীদের তিনি এ নির্দেশনা প্রদান করেন।

প্রতিবাদ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল। ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভায় সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা ও উত্তরের সভায় সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল। দক্ষিণের সভা সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা ও উত্তরের সভার সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন।

গাজীপুর, লক্ষ্মীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, যশোরসহ বিভিন্ন জেলায় ‘পদযাত্রা’র নামে বিএনপি-জামাত চক্রের সন্ত্রাস, সহিংস রাজনীতি, প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া, জনগণ ও পুলিশের উপর হামলা, সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষতিসহ গাড়িতে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এ বিশাল সভার আয়োজন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কর্মের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন এই দেশের উন্নয়ন শুধুমাত্র তাঁর সরকারের আমলেই হতে পারে এবং সেই ত্যাগ তিতীক্ষা শিশুকাল থেকেই তিনি তার পিতার মাধ্যমে অর্জন করেছেন। বঙ্গবন্ধু এদেশের স্বাধীনতার জন্য যেভাবে ত্যাগ স্বীকার করেছেন ঠিক সেই একইভাবে এদেশের উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। পিতার কারণেই এদেশের জনগণের প্রতি শেখ হাসিনার যে দায়িত্ববোধ তা আর কোন সরকার দেখাতে পারেনি।’

সরকারের চলমান উন্নয়ন বিএনপি-জামাত ও স্বাধীনতাবিরোধীদের পছন্দ হচ্ছে না অভিযোগ করে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিভিন্ন অপপ্রচারের মাধ্যমে বিএনপি-জামাত বিদেশীদের কাছ থেকে সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছে। এই সকল অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদের প্রতিটা নেতাকর্মীদেরকে সাদাকে সাদা এবং কালাকে কালা বলতে হবে। তাহলেই আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আদর্শিক ভিত্তি লাভ করবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে দেশের এই উন্নয়ন ও অগ্রগতি বঙ্গবন্ধু সারাজীবন স্পষ্টবাদী বলে পরিচিত ছিলেন। আইয়ুব বিরোধী এবং সকল স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে তিনি সর্বদা ন্যায় ও সত্যকে তুলে ধরেছেন। আমাদেরকেও সেই সত্য দ্বারা বিএনপি-জামাতের মিথ্যাকে বিতাড়িত করতে হবে। আমাদের আর একটা জিনিস নিশ্চিত করতে হবে যে, এই বাংলাদেশে কেউ থাকতে চাইলে প্রথমে স্বাধীনতার যুদ্ধে শহীদদের পক্ষে থাকতে হবে। কোন স্বাধীনতাবিরোধীদের এই দেশে রাজনীতি করার অধিকার নাই। আর এই স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে যারা রাজনীতি করে তাদের সুবিধা যারা নেয় এদেশে তাদের রাজনীতিও বন্ধ করে দিতে হবে। গণরায়ের মাধ্যমে এই বিএনপি-জামাত স্বাধীনতাবিরোধীদের সাজার আওতায় আনতে হবে। এরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে সেই অপরাধের কারণে তাদেরকে বিচার করতে হবে।’

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ আরও বলেন, ‘বিএনপি এদেশের রাজনীতির পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য তাদের পুরোনো কৌশল লাশের রাজনীতি করতে চায় এবং বিদেশীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়। বিএনপির এই অপরাজনীতি সফল হতে দিবে না যুবলীগ। যুবলীগ রাজপথেই থাকবে তাদের সকল চক্রান্তের জবাব দেওয়া হবে। বিএনপি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন সিরিয়াস না, নির্বাচনের নামে যা দেখছেন তা সবই তাদের ভাওতাবাজি। কারণ তাদের দুই নেতাই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী, নির্বাচনে যাওয়ার সক্ষমতা তাদের নেই। এই কারণেই আগামী ২০২৪ সালের নির্বাচনকে নস্যাৎ করার জন্য তারা মাঠে নেমেছে, অস্ত্রের মহড়ার মাধ্যমে মানুষকে ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টা করছে। গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, জনগণ ও পুলিশের ওপর হামলা করছে। তাই আমি বলতে চাই-উন্নয়নশীল বাংলাদেশে, উন্নয়নের অগ্রযাত্রার বাংলাদেশে কোন ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস বরদাস্ত করা হবে না। যারা জনগণের জানমালের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে, পুলিশের ওপর হামলা করবে তাদেরকে যুবলীগ রাজপথেই কঠোরভাবে প্রতিহত করবে।’

সভায় যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘বিএনপি-জামাত এই দেশে ও জাতির কল্যাণ চায় না, এদেশের মানুষ ভাল থাকুক তা চায় না, দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি চায় না। তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, আজকের সমাবেশ মনে করে, বাংলাদেশের যুবসমাজ মনে করে বিএনপি-জামাত যারা করে তারা এদেশের নাগরিকই না। তারা এদেশের নাগরিক হওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছে। আপনারা এদেশের মানুষ না, নাগরিক না, আপনারা পাকিস্তানী প্রোডাক্ট, আপনাদের পাকিস্তানে চলে যাওয়া উচিত।’

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. হাবিবুর রহমান পবন, মো. নবী নেওয়াজ, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মো. আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, মো. জহির উদ্দিন খসরু, মো. সোহেল পারভেজ, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. জহুরুল ইসলাম মিল্টন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, জনশক্তি ও কর্মসংস্থান সম্পাদক শাহীন মালুম, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. হারিছ মিয়া শেখ সগর, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক কাজী খালিদ আল মাহমুদ টুকু, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. আলতাফ হোসেন প্রমুখ।

কালের আলো/বিএএ/এমএম