বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে : সেনাপ্রধান

প্রকাশিতঃ 7:40 pm | May 28, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড. এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অদ্যাবধি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং আজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অগ্রদূত হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যাত্রার শুরু থেকেই পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে একটি স্বীকৃত নাম যা আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমির মর্যাদা বিশ্ব দরবারে বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে।

রোববার (২৯ মে) আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে সেনাপ্রধান এসব কথা বলেন।

আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসের ক্রোড়পত্রে দেওয়া বাণীতে তিনি আরও বলেন, ১৯৪৮ সালের ২৯ মে ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন’ এর সূচনালগ্ন থেকে অদ্যাবধি বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় শান্তিরক্ষীদের মহান আত্মত্যাগ ও অসামান্য অবদানের স্বীকৃত স্বরূপ ‘আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস’ টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আজকের এই মহান দিনে আমি বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত সকল শান্তিরক্ষীদের জানাই আমার গভীর শ্রদ্ধা ও আন্তরিক অভিবাদন।

‘ঐতিহ্যগতভাবে বাঙ্গালি জাতি শান্তিপ্রিয় এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় অগ্রনী। স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭৪ সালে বাঙ্গালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রদত্ত তার ঐতিহাসিক ভাষনে বিশ্ব শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের অবস্থান এর পক্ষে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।’

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই অর্জনের পথ মোটেও মসৃন ছিল না। অদ্যাবধি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১২৬ জন সদস্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আত্মত্যাগ করেছেন। এর পাশাপাশি শতাধিক সেনাসদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। আমি গম্ভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল বীর শান্তি রক্ষীদের যারা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের পরিবারবর্গের প্রতি জ্ঞাপন করছি আমার সমবেদনা ও সহমর্মিতা। তাদের ত্যাপের বিনিময়ে আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশ্ব দরবারে সুনামের সাথে প্রতিষ্ঠিত।

‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আজকের এই প্রশংসনীয় দক্ষতা ও সক্ষমতা অর্জনের পেছনে রয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নির্দেশনা ও সুদৃঢ় নেতৃত্ব। এরই ধারাবাহিকতায় আজ আমাদের রয়েছে বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ সুবিধা সম্বলিত শান্তিরক্ষা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান। এখন আমাদের সেনাবাহিনীর প্রায় সকল সদস্যই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন, যা আমাদের জন্য একটি মাইল ফলক।’

তিনি আরও বলেন, পুরুষ সদস্যের পাশাপাশি নারী সদস্যরাও এখন পূর্বের তুলনায় অধিকহারে শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করছে, যা আমাদের গ্রহণযোগ্যতাকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। সার্বিকভাবে সুপ্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ সেনাসদস্য, উন্নত সরঞ্জাম, বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ এবং উঁচু মূল্যবোধের সংমিশ্রণের ফলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মিশন এলাকার জনসাধারণ ও জাতিসংঘের আস্থা অর্জনে ঈর্ষণীয় সাফল্য লাভ করেছে।’

ড. এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের সকল শান্তিরক্ষীদের জন্য রইল আমার শুভ কামনা। আমি আশা করব আপনারা বিশ্ব শান্তি রক্ষায় মানবতার পক্ষে নিরলসভাবে আপনাদের দায়িত্ব পালন করে যাবেন। একই সাথে আমি জাতিসংঘের সকল সদস্যের সম্মিলিত অংশগ্রহণে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা সফল হোক এই কামনা করি এবং এর মাধ্যমে আগামী প্রজন্মের কাছে আমরা একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্ব উপহার দিতে পারবো বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করছি। মহান আল্লাহ্ আমাদের সহায় হোন।

আরও পড়ুন

কালের আলো/এসবি/এমএম