বিশ্বসভায় শেখ হাসিনার জয়ধ্বনি

প্রকাশিতঃ 6:06 pm | June 30, 2018

বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো :

ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ পা রেখেছে ৭০ বছরে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের সফল নায়ক ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই তো তিনি বাংলাদেশের জাতির পিতা। দীর্ঘ ৬৯ বছরের পথ পরিক্রমায় দেশের বৃহত্তম ও প্রাচীন রাজনৈতিক দলটিকে অনেক চড়াই-উতরাই পেরুতে হয়েছে।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর অনেকটাই অস্তিত্ব সংকটেই পড়ে আওয়ামী লীগ। দলের ভেতরেও শুরু হয় ভাঙন। এর মধ্যে আব্দুল মালেক উকিল ও জোহরা তাজউদ্দিনের দৃঢ়তায় সংকট কাটিয়ে ওঠতে শুরু করে দলটি। ১৯৮১ সালে দলের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর দেশে ফিরতে সক্ষম হন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই দলটির পুন:জাগরণ হয়।

এরপর এক দশক ধরে সারা দেশ ঘুরে দলকে সুসংগঠিত করেন তিনি। স্বৈরাচার বিরোধী তীব্র গণআন্দোলনও হয় তারই নেতৃত্বে। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আবার সরকার গঠন করে দলটি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে পুনরায় নিরংকুশ বিজয় লাভ করে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে দলটি। শেখ হাসিনার সফল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে তিন দফায় প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার সুযোগ পায়।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোলমডেল; মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত। তার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিকল্প নেই। তিনি এখন কেবল বাংলাদেশ নয়, বিশ্বনেতাও।

ষড়যন্ত্রকারী ঘাতকদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই পার্বত্য শান্তিচুক্তি, গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিজয়, স্থলসীমান্ত চুক্তি, পদ্মা সেতু, পায়রা বন্দর, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলসহ অনেক কিছুই হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা এনে দিতে পারলেও তার দ্বিতীয় লক্ষ্য অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়ে যেতে পারেননি। তার মেয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই কাজটিও শেষ হচ্ছে।

সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির তুলনায় বাংলাদেশে বেশি জনপ্রিয়। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই)। বেশ কিছু ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশনের (এফজিডির) মাধ্যমে ২০১৭ সালের মধ্যবর্তী সময় থেকে চলা পর্যালোচনা শেষে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি।

২০১৮ সালে বাংলাদেশের নির্বাচনে বিএনপির তুলনায় আওয়ামী লীগ শক্ত রাজনৈতিক অবস্থানে আছে বলেও মন্তব্য করা হয় এই প্রতিবেদনে। শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তায় আওয়ামী লীগ দেশে জনপ্রিয় বলে উল্লেখ করা হয়।

খুলনা থেকে অংশগ্রহণকারী একজন বলেন, যখন তাকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আমি স্মরণ করি, তখন দেশের উন্নয়নগুলোর কথা স্মরণ হয়। ময়মনসিংহ থেকে আগত অপর এক নারী জানান, দরিদ্র মানুষের পাশে এসে তিনি সর্বদা দাঁড়ান। এফজিডিতে অংশ নেওয়া অপর এক নারী জানান, শেখ হাসিনা মানে বঙ্গবন্ধু, আর বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা।

শেখ হাসিনার যোগ্য ও দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসায় আজ গোটা বিশ্ব। বিশ্বসভায় আজ শেখ হাসিনার জয়ধ্বনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে শুরু করে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সবার কন্ঠেই শেখ হাসিনার প্রশংসা। বিশ্ব দরবারে তিনিই উড়িয়েছেন শান্তির পতাকা। মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে পরম মমতায় আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে প্রশংসিত ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বব্যাপী শরণার্থী সমস্যা সমাধানের আলোকবর্তিকা হিসেবে উদ্ভাসিত হয়েছেন তিনি।

বঞ্চিত, অসহায়, শোকাহত ও দিশেহারা বাঙালি জাতির প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই নতুন আশায়, নতুন স্বপ্ন ও উদ্যমে পথ দেখান বাংলাদেশকে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য সফল উত্তরসূরি ও বাঙালি জাতির আশা-আকাঙ্খার অনন্য প্রতীক বিশ্বনেতা শেখ হাসিনা সঠিক ও দুঃসাহসিক নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে পুনরুজ্জীবিত ও দ্রুত অগ্রগামী করছেন।

বাংলাদেশের গণতন্ত্রের এ মানসকন্যা নানা চড়াই-উৎরাই ও ত্যাগ-তিতিক্ষা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ ও বাংলার গরিব-দুঃখী মেহনতি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য নিরন্তর সংগ্রাম করে চলেছেন। রূপকল্প ২০২১ অনুযায়ী মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে ২০০৯ সাল থেকে দিন বদলের অঙ্গীকার নিয়ে তিনি যে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন তা সত্যিই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আজ প্রশংসিত হচ্ছে। তার গতিশীল নেতৃত্বে জাতিসংঘে ঘোষিত মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট লক্ষ্যমাত্রা ২০১৫ সালেই অর্জিত হয়েছে এবং নতুনভাবে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ঘোষণা দিয়ে সে লক্ষ্যে গোটা জাতিকে নিবেদিত করেছেন।

বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, ২০২১ সালের আগেই বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের সুখীসুন্দর দেশ হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রধানমন্ত্রীর সুশিক্ষিত এবং বাস্তব প্রায়োগিক নীতিনির্ধারণে বিশেষজ্ঞ সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শ এবং সহায়তায় দেশে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে যুগান্তকারী বিপ্লব সাধিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মহাকাশ জয় করেছে বাংলাদেশ।

কালের আলো/এমকে

Print Friendly, PDF & Email