জাগরণের প্রতীক ‘জয় বাংলা’ ভাস্কর্য

প্রকাশিতঃ 7:16 pm | December 15, 2019

তিতলি দাস

ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জয় বাংলা’ ভাস্কর্যটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতীকী ভাস্কর্য। গণমানুষের আন্দোলন যেমন- ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ প্রভৃতি আন্দোলনে ছাত্র-শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সকল মানুষ গৌরবময় এক সাহসী ভূমিকা পালন করেছিলেন, যা চিরস্মরণীয়।

বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর বাঙালির অসীম ত্যাগের মহিমা এ প্রজন্মের সন্তানদের কাছে চির অম্লান করে রাখার প্রত্যয়ে এ ভাস্কর্যটি নির্মিত হয়েছে।

জয় বাংলা

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদ ভাস্কর্যটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। তারপর চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী পলাশ শেখ-এর নেতৃত্বে কমল কুমার ঘোষ ও মাহবুবুর রহমান ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন।তারপর ২০১৭ সালের ৩ মে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন।

পুরো ভাস্কর্যটি একটি বেদির ওপর স্থাপিত। কয়েক ধাপ সিঁড়ি বেয়ে ভাস্কর্যের মূল বেদিতে উঠতে হয়। ভাস্কর্যের কেন্দ্রীয় অংশে রয়েছে দু’জন তরুণ ও একজন নারী মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি। একজন তরুণ মুক্তিযোদ্ধার পরনে শার্ট-প্যান্ট কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে দুই হাত দৃঢ় মুষ্টিবদ্ধ। বাম হাত মাথার ওপরে সকলকে জাগ্রত করতে তুলে ধরা। নারী মুক্তিযোদ্ধার পরনে শাড়ি দু’হাতে জাতীয় পতাকা ধরে রেখেছেন। অন্য প্রতিকৃতিতে তরুণ মুক্তিযোদ্ধা পরনে প্যান্ট-শার্ট দুই হাতে দৃঢ়ভাবে রাইফেল ধরা। মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বড় অংশ ছিল তরুণ ছাত্র সমাজ। মূলত: সেই ছাত্র যোদ্ধাদের প্রতীক হিসেবে এই ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশমুখেই এ ভাস্কর্য মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গকৃত।সন্ধ্যা নামলেই সড়কবাতির আলোয় এটি যেন হয়ে ওঠে স্বর্গের অমরাবতীর মতোই অনিন্দ্য সুন্দর। ভাস্কর্যকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের আড্ডা প্রাণবন্ত করে তোলে রাতের ক্যাম্পাসকে। এছাড়া জনহিতকর সকল আন্দোলন ও মানববন্ধন এই ভাস্কর্যের সামনে করা হয়ে থাকে।

কালের আলো/টিডি/এডিবি

Print Friendly, PDF & Email