হার্ডলাইনে শিক্ষামন্ত্রী, শেষ রক্ষা হচ্ছে না সেই বেসরকারি কলেজসমূহের
প্রকাশিতঃ 8:50 pm | August 27, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
এবার আর শেষ রক্ষা হচ্ছে না সারাদেশে ‘সেশন ফি’ এর নাম করে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেওয়া বেসরকারি কলেজসমূহের। তাদের বিরুদ্ধে হার্ডলাইনে রয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি এমপি। তিনি অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণকারী বেসরকারি কলেজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এসব প্রতিষ্ঠানের তালিকার জন্য তিন কর্মদিবস সময় বেঁধে দিয়েছেন।
শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে তালিকা চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার সব অঞ্চলের উপ-পরিচালককে চিঠি পাঠিয়েছে। নীতির প্রশ্নে আপোসহীন শিক্ষামন্ত্রীর এমন তড়িৎ পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন শিক্ষানুরাগী ও ভুক্তভোগীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য সেশন ফি’র নামে শিক্ষার্থীদের কাছে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য দিয়ে চিঠিতে বলা হয়, সেশন ফি’র নামে রীতিমতো ডাকাতি করছে বগুড়ার নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। সরকার নির্ধারিত নীতিমালা কেউই তোয়াক্কা করছে না।
এমনকি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর দৌরাত্ম্য সীমা অতিক্রম করেছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত সেশন ফি ছাড়াও বাজার থেকে চারগুণ-পাঁচগুণ বেশি টাকায় এসব প্রতিষ্ঠান থেকে বই, খাতাসহ শিক্ষা উপকরণ বাধ্য হয়েই কিনতে হয়। এমনকি স্কুল ড্রেসও প্রতিষ্ঠান থেকে নিতে হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার সব অঞ্চলের উপ-পরিচালককে দেওয়া চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমন ডাকাতি কারবার বন্ধ করতে বগুড়ার সমাজসেবী আব্দুল মান্নান আকন্দ হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন। তিনি জনস্বার্থে চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন।
এ রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২ জুলাই হাইকোর্টের বিচারক জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ মাত্রাতিরিক্ত সেশন ফি গ্রহণকারী বগুড়ার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সরকারি নীতিমালার বাইরে নেওয়া বাড়তি টাকা অভিভাবকদের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে মর্মে আদেশ দেন।
একই সূত্র মতে, শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনির নির্দেশে সারাদেশে যেসব বেসরকারি কলেজ অতিরিক্ত ফি আদায় করছে তাদের তালিকা আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে সফট কপি ই-মেইলে (ahowlader525@gmail.com) এবং হার্ডকপি সহকারী পরিচালক (কলেজ) বরাবর পাঠাতে বলা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েই শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সবাইকে নিয়ে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করেছিলেন। মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরদিন শিক্ষার সাফল্য সুসংহত করতে উদ্যোগের কথা বলেছিলেন।
জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা প্রশ্নফাঁস বন্ধ করতে ইতোমধ্যেই নিজের সক্ষমতার স্বাক্ষর রেখেছেন। শিক্ষা ব্যবস্থার ঘনীভূত কালো অন্ধকার দূরীভূত করে দেশের প্রথম এ নারী শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বেই এক নবযুগের শুভ সূচনা হবে বলেও মনে করেন শিক্ষানুরাগীরা।
কালের আলো/এমএইচ/এমএএম