এই রায় ক্ষমতাসীনদের জন্যও শিক্ষা: ইকবাল সোবহান চৌধুরী

প্রকাশিতঃ 8:54 am | February 09, 2018

কালের আলো:

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের রায়কে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্যও শিক্ষা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘আজ যারা ক্ষমতায় তাদের জন্যও এ রায় শিক্ষা। কারণ ক্ষমতাতো কারও জন্য চিরস্থায়ী নয়। ক্ষমতায় যারা যাবেন অথবা ক্ষমতার বাইরে যারা থাকবেন তারা কেউ যেন এই ধরনের দুর্নীতি বা অনিয়ম না করতে পারে সেজন্য এই রায়কে একটি মাইলফলক বলে আমি মনে করি। এই রায় সবার জন্যই বড় শিক্ষা।’

বৃহস্পতিবার রাতে বেসরকারি সময় টিভির একটি টক শো’তে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন ইকবাল সোবহান।

বহুল আলোচিত এই মামলায় বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে ঢাকার বিশেষ জজ-৫ আখতারুজ্জামান রায় ঘোষণা করেন। রায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর করাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া অন্য পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদণ্ডের পাশাপাশি দুই কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে আদালত।

রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে রাজধানীর নাজিম উদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগারে নিয়ে যাওয়া যায়। রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। আপিলে খালেদা জিয়া খালাস পাবেন বলে আশা করছেন তারা।

‘কারাগারে খালেদা ও রাজনীতি’ বিষয়ে ‘সম্পাদকীয়’ নামের টক শো’তে ইকবাল সোবহান বলেন, ‘এই বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে না দেখে ইতিবাচক হিসেবে দেখা উচিত। অন্যায় করলে এর সাজা পেতে হবে এটা প্রতিষ্ঠিত হওয়া দরকার।’

জ্যেষ্ঠ এই সাংবাদিক বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের নামে তার পরিবার ট্রাস্ট করতে পারে, তাতে কোনো আপত্তি নেই। তারা বলেছেন এতিমখানা করবে, কিন্তু ২৫ বছরেও তারা তা করেনি। বিএনপি একটি সুসংগঠিত দল, কিন্তু তারা এতদিনেও কোনো এতিমখানা করেনি। টাকাটা তাহলে কী জন্য ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ব্যক্তিগত এফডিয়ারে নিয়ে যাওয়া হলো।’

আওয়ামী লীগের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বঙ্গবন্ধু ট্রাস্ট করেছেন সে ট্রাস্টের হিসাব কিন্তু প্রতিনিয়ত তারা দিচ্ছে। আইন মেনে সেটা পরিচালিত হচ্ছে। অপরদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোনো হিসাব কখনো দেয়া হয়নি। তাতে প্রমাণিত হলো এখানে অনিয়ম হয়েছে।’

টক শো’তে অংশ নেয়া বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘আমাদের দেশের কালচার হলো, সরকারে থাকা অবস্থায় অপরাধ থেকে দায়মুক্তি নিয়ে নেয়। আমাদেরকে এ সংস্কৃতি থেকে বের হতে হবে। অপরাধ কেবল বিরোধী দলের। সুতরাং তাদেরকে শাস্তি দিতে হবে এমন সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’

সেলিম বলেন, ‘আইন সবার জন্য সমান এটা সবাই বলে থাকে। যদি সেটাই হয় তাহলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে বলা হয়েছিল ৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ। অথচ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতারা রাজধানীতে মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন করেছে, সভা-সমাবেশ ও জটলা করেছে। গণ্ডগোল প্রতিহত করার নামে মিছিল করা যাবে আর গণ্ডগোল করার জন্য করা যাবে না কোন রীতি।’

সিপিবি সভাপতি বলেন, ‘সকালে সরাসরি টেলিভিশনে দেখলাম মগবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে মারামারি হচ্ছে। এখানে সংঘর্ষে দুই পক্ষই জড়িত। কিন্তু বিএনপির কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমি মনে করি আইন ভঙ্গ করার জন্য আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদেরও গ্রেপ্তার করা উচিত। আর এটাই ন্যায়সঙ্গত ছিল। কিন্তু সেটা করা হয়নি।’

Print Friendly, PDF & Email