বাসায় মদের আসর বসাতেন পরীমনি!
প্রকাশিতঃ 9:56 pm | June 17, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:
রাজধানীর বনানী ১৯/এ সড়কের ১২ নম্বর বাড়ির পাঁচতলার ফ্ল্যাটে থাকেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। বাড়িটিতে রয়েছে বিলাসবহুল নানা পণ্যসামগ্রী। থরে থরে সাজানো বিশ্বের নামি ব্র্যান্ডর মদের বোতল। প্রথমবার কেউ গেলে হয়তো ভুলে ভাবতে পারেন কোনো বারে ঢুকে পড়েছেন!
বাড়িতে ঢুকলে যে কেউ প্রথম দফায় চমকে উঠবেন। বিশ্বের নামিদামি ব্র্যান্ডের মদের বোতল সাজানো দেখে মনে হবে পশ্চিমা দেশগুলোর কোনো বিলাসবহুল বারে ঢুকে পড়েছেন!
জানা গেছে, এই বাড়িতেই নিয়মিত মদের আসর বসান পরীমনি। রাতভর চলে পার্টি ও গান-বাজনা।
গত ১৩ জুন রাতে ধর্ষণচচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন হালের জনপ্রিয় এ নায়িকা। পরীমনির নিজ বাসাতেই আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলন কাভার করতে যান বিভিন্ন গণমাধ্যমের একাধিক সাংবাদিক। এদের মধ্যে অনেকেই আবার বিনোদন বিটের বাইরের লোক।
ওইদিনই দেখা যায়, তার বাসার এমন চিত্র। ড্রইং রুমের কাঁচ ঘেরা ঘরে
মদের পাশাপাশি সাজিয়ে রাখা আছে মদ পানের প্রয়োজনীয় উপকরণ। এনিয়ে ওইদিন যারা সংবাদ কভারেজের জন্য পরীমনির বাসায় গিয়েছিলেন তাদের অনেকেই সমালোচনা করেন।
এদিকে, ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার পর বেশ কিছু বিষয় খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এরই মাঝে নিয়ম ভেঙে কয়েকটি সোশাল ক্লাবে মধ্যরাতে পরীমনির যাতায়াত এবং মদ্যপানের খোঁজখবর পেয়েছে পুলিশ। এরই মধ্যে গুলশানের একটি অভিজাত ক্লাবের বারে ভাঙচুর ঘটনায় মামলা হয়েছে।
এ ছাড়া আরও কয়েকটি অভিজাত ক্লাবের কর্মকর্তারা পুলিশকে জানিয়েছেন, মধ্যরাতে নিয়ম ভেঙে পরীমনির জন্য বার খোলা রাখতে হয়। তারা পুলিশকে বলছেন, মদের আসর বসানোর গল্পও। বোট ক্লাবের ঘটনার আগের রাতে গুলশান অল কমিউনিটি ক্লাবে ঢোকেন পরীমনি। মধ্যরাতে সেখানে তিনি ভাঙচুরও করেন। এটি তদন্তে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় গুলশান থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
জানা যায়, পরীমনি তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমিসহ কয়েকজন তরুণ-তরুণী নিয়ে প্রায়রাতেই অভিজাত ক্লাব ও তারকা হোটেলে ঘুরে বেড়াতেন। তাদের সঙ্গে নিয়ে মদ পান করতেন মধ্যরাত পর্যন্ত। এক্ষেত্রে প্রায় রাতেই তার কারণে ক্লাবের আইন ভাঙা হতো। বিশেষ করে হাফপ্যান্ট পরে তার সঙ্গী হওয়া জিমি ড্রেসকোডের তোয়াক্কা করতেন না কখনই। এক ক্লাবে সময় কাটিয়ে তিনি যেতেন আরেক ক্লাবে।
পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, গত ৩ জুন রাত ১২টার পর পরীমনি তার সাবেক স্বামী তামিম হাসান ও দুটি বেসরকারি টেলিভিশনের দুজন কর্মকর্তা পরিচয়ধারীকে নিয়ে গুলশানের একটি অভিজাত ক্লাবে যান। তখন তারা মদ্যপ ছিলেন। ক্লাবে ঢুকে পরীমনি ও অন্যরা বার ব্যবহার করতে চান।
বার বয় জালাল এতে অসম্মতি জানালে পরীমনি তার গালে চড় মারেন। ক্লাব কর্মকর্তারা বেসামাল আচরণের প্রতিবাদ করলে তিনি নিজেই পুলিশে কল করেন। গুলশান থানা পুলিশের দুটি পিকআপ ভ্যান সেখানে যায়। পরে তারা বুঝিয়ে পরীমনিকে বাসায় পাঠান।
এ খবর পুলিশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। সীমানাঘেঁষা এলাকা হওয়ায় ১৬ জুন বনানী থানা পুলিশ ওই ক্লাবের কর্মকর্ত ক্লাবটির সদস্য (প্রশাসন) এ জন্য পুলিশের কাছে সময় চেয়েছেন বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশের সব অভিজাত ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে পরীর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।
তাদের রেফারেন্সে দিয়ে পাঁচতারকা হোটেলের বারেও তার যাতায়াতের তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
কালের আলো/ডিএসবি/এমআরকে