পরকীয়ায় বাঁধা দেওয়ায় স্বামীর মস্তক-হাত কেটে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেন স্ত্রী
প্রকাশিতঃ 6:00 pm | May 30, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:
স্বামীর বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন স্ত্রী আরিফা বেগম (৩১)। আর তার টের পাওয়া-ই যেন কাল হয়ে দাঁড়ালো স্বামী সুমন মোল্লার (৩২)। বাঁধা দেওয়া এবং পরকীয়া প্রেমিককে মারধর করায় রাগে-ক্ষোভে স্বামীকে হত্যা করেন স্ত্রী আরিফা।
পুলিশ বলছে, পরকীয়ায় বাঁধা দেওয়া ও প্রেমিককে মারধরের প্রতিশোধ নিতেই করাত দিয়ে স্বামীর মাথা ও হাত-পা কেটে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেন স্ত্রী আরিফা। রোববার (৩০ মে) দুপুরে গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে ‘ক্লুলেস’ এ হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন জিএমপির উপ-কমিশনার (অপরাধ) জাকির হাসান।
এর আগে গত ২১ এপ্রিল দুপুরে কাশিমপুর থানার সারদারগঞ্জের হাজী মার্কেট পুকুর পাড় এলাকার জালাল উদ্দিনের বাড়ির পাশের ময়লার ভাগাড় থেকে অর্ধগলিত মাথা ও হাত-পাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
বিচ্ছিন্ন দেহটি গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর অজ্ঞাত হিসেবে সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে দাফন করা হয়। এরপর ২২ এপ্রিল কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
কিন্তু এ ঘটনায় সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আরিফা ও তন্ময়কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এরপরই মূলত বের হয়ে আসে মূল কাহিনী!
জিএমপির ডিসি জাকির হোসেন বলেন, আরিফা ও তন্ময়কে আটক করার পর আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে তন্ময়ের সঙ্গে তার পরকীয়া প্রেম ছিল। এ নিয়ে তন্ময়কে একাধিকবার মারধর করেছেন আরিফার স্বামী।
‘আর সেই মারধরের প্রতিশোধ নিতেই সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তারা দুইজনে। গত ১৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টায় স্বামীকে দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন আরিফা। ঘুমিয়ে পড়লে তন্ময়কে ফোন করে বাসায় নিয়ে ডেকে নিয়ে আসেন আরিফা।
দুজন মিলে বালিশ চাপা দিয়ে সুমনকে হত্যা করে লাশ ঘরের ভেতর রেখে দেন। পরদিন করাত দিয়ে সুমনের মাথা, হাত-পা কেটে এবং চাপাতি দিয়ে পেট কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন।’
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান- সুমনের হাত-পাবিহীন দেহ কাঁথায় মুড়িয়ে জনৈক জালাল উদ্দিনের বাড়ির পাশের ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেওয়ার তথ্য। দেহের অন্যান্য অংশ পলিথিনে মুড়িয়ে তেতুইবাড়ি এলাকার মোজা তৈরির কারখানার পাশের ভাগাড়ে ফেলেন। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার (২৯ মে) সকালে ভাগাড় থেকে পলিথিনে মোড়ানো মাথা, দুই হাত-পা উদ্ধার করা হয়।
‘একই সঙ্গে ওইদিন অর্থাৎ শনিবার রাতে সারদাগঞ্জের হাজীবাড়ি পুকুরপাড়ের ময়লার স্তূপ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি ও করাত উদ্ধার করা হয়েছে। আর তন্ময়ের ঘর থেকে সুমনের মোবাইল উদ্ধার করা হয়,’ যোগ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সংবাদ সম্মেলনে জিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার রেজওয়ান আহমেদ, সহকারী কমিশনার রিপন চন্দ্র সরকার ও কাশিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব-এ খোদা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কালের আলো/এআরকে/এমএম