সংবাদ নায়ক
প্রকাশিতঃ 9:54 am | May 28, 2021

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :
‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরীতা নয়’ বন্ধুত্বপূর্ণ এই সহাবস্থান নিশ্চিতে বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূর্ণ আস্থা রেখেছেন তাঁর ওপর। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে রেখেছেন নানামুখী ভূমিকা। দীর্ঘ বর্ণাঢ্যময় জীবনে অর্জন বা সাফল্যও নেহায়েত কম নয়। যিনি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও দেখিয়েছেন অনন্য কূটনৈতিক দক্ষতা। তিনি ড. এ কে আবদুল মোমেন।
দেশের সঙ্কটে যুক্তি দিয়ে সত্য উদঘাটনের পক্ষেই তাঁর অবস্থান অনড়। যুক্তি দিয়ে নিজের মতামতকে উপস্থাপন করেন প্রতিনিয়ত। অন্যের মতামতও শুনেন গভীর মনোযোগে। যুক্তিতর্ক দিয়েই উপসংহারে পৌঁছানোর ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখেছেন। যৌক্তিক বোধ সম্পন্ন বলেই গণমাধ্যমও উদ্দীপ্ত তাঁর কথামালায়। উদার, চিন্তাশীল ও গভীর তাৎপর্যপূর্ণ প্রতিটি বক্তব্যের কারণেই তিনি হয়ে উঠেছেন একজন ‘সংবাদ নায়ক’।
কালের আলোর পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, স্বাধীনতার ৫০ বছরে বঙ্গবন্ধুর নীতির সঙ্গে মিল রেখেই বাংলাদেশের কূটনৈতিক নীতি নির্ধারণের ফলে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা নিশ্চিত হয়েছে। মাথা উঁচু হয়েছে দেশের। বহুপাক্ষিকতাবাদ ও শান্তির কূটনীতি দেখেছে সাফল্যের মুখ।
বাঙালি জাতির চির আরাধ্য পুরুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কূটনৈতিক কৌশল অনুসরণ করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে ‘সবাই আমাদের বন্ধু’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক দিক নির্দেশনায় এক্ষেত্রে সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আবদুল মোমেন বিশ্বমানের একজন কূটনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে মেলে ধরেছেন নিজেকে।
উন্নয়নশীল বাংলাদেশ ২০৩০ সালে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সব অভীষ্ট অর্জন এবং ২০৪১ সালে সোনার বাংলায় পরিণত হওয়াসহ সরকারের একাধিক রূপরেখা বাস্তবায়নে এগিয়ে চলেছে অদম্য এক গতিতেই। এক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন মোটাদাগেই।

যুক্তির মাধ্যমেই যোগ্য এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেখিয়ে দিয়েছেন পাসপোর্টের সঙ্গে পররাষ্ট্র নীতির কোনো সম্পর্ক নেই। শিরদাঁড়া সোজা করেই এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘আমরা ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করি না। ফিলিস্তিনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আগের মতই রয়েছে। বাংলাদেশ ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে কাজ করে যাবে।’ তাঁর এই বক্তব্যে পাসপোর্ট নিয়ে হীন কায়দার পলিটিক্সের যবনিকাপাত ঘটেছে।
কেবল-ই কী তাই? যখনই দেশের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কারও অযাচিত এবং অনভিপ্রেত মন্তব্য এসেছে ঠিক তখনই নিজের কণ্ঠ চড়া করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা স্বাধীন দেশ। স্বাধীনভাবেই নিজেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। আমাদের পররাষ্ট্র নীতি আমরা নিজেরাই ঠিক করি।’
করোনার টিকা নিয়ে যখন এক গভীর সঙ্কট তৈরি হয়েছে তখন চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের মাধ্যমেই টিকা সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাইছে সরকার।
সরকারপ্রধানের নির্দেশনায় ঝানু কূটনীতির মাধ্যমে ইতোমধ্যেই অনিশ্চয়তার কালো মেঘ দূর করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত ১২ মে বাংলাদেশকে ৫ লাখ টিকা উপহার দিয়েছে চীন। এর ঠিক ৯ দিনের মাথায় চীন দ্বিতীয় দফায় আরও ৬ লাখ টিকা উপহারের ঘোষণা দিয়েছে। ‘সবকিছুই ভালো লাগে না’ রোগে আক্রান্তদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়লেও বেশ নির্ভার দেশের সচেতন সাধারণ মানুষ।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘চীন ও রাশিয়া থেকে দ্রুততম সময়ে টিকা আনতে কাজ চলছে। আজ মুখ্য সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

টিকা আনতে চীনের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানে। তবে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। তিনি আমাকে নিশ্চিত করেছেন যে চীনের টিকা জোগান অব্যাহত থাকবে।’
সূত্র জানায়, চীন থেকে দেড় কোটি টিকা সংগ্রহের আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায় রয়েছে। চীন রাজি হলে আগামী জুন মাসেই ৫০ লাখ ডোজ টিকা এবং পরবর্তী দুই মাসে বাকি এক কোটি সরবরাহ করা হবে। এছাড়া রাশিয়া থেকে ৬০ লাখ টিকা সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রথম ভার্চুয়াল বৈঠক এ সপ্তাহে হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সূত্র। সব মিলিয়ে আগস্টের মধ্যে চীন-রাশিয়া থেকে ২ কোটি ১০ লাখ টিকা আনতে চায় সরকার।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা রাশিয়ার সঙ্গে এ সপ্তাহে প্রথম ভার্চুয়াল বৈঠক করতে চাই। চীনের সঙ্গে যেভাবে আলোচনা হয়েছে একই প্রক্রিয়ায় রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা হবে। দ্রুততার সঙ্গে গোটা প্রক্রিয়া শেষ করতে চাই আমরা।
কালের আলো/এসআর/এমএ