সাহেদ-আরিফ-সাবরিনাদের হারাতেই হবে
প্রকাশিতঃ 10:52 am | July 14, 2020

প্রভাষ আমিন:
যখন আমাদের সবার করোনা মোকাবিলায় সকল মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার কথা, তখনই যেন সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে পদে পদে দুর্নীতি- কোথাও কম, কোথাও বেশি। যেখানে দুর্নীতি কম, সেখানে যে ফেরেশতারা বসে আছে, তা কিন্তু নয়। আসলে সেখানে দুর্নীতির সুযোগ কম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে দুর্নীতি সবচেয়ে বেশি, কারণ এখানে কেনাকাটা বেশি, তাই দুর্নীতির সুযোগও বেশি। তবে আমি ভেবেছিলাম করোনাকালে কেউ অন্তত দুর্নীতি করবে না, লোভ করবে না। এমন বৈশ্বিক মহামারি দেখার অভিজ্ঞতা আমাদের কারোই নেই। একশো বছর আগে স্প্যানিশ ফ্লুর সময়টা দেখেছেন, এমন কেউ নিশ্চয়ই এখন বেঁচে নেই। আমি ভেবেছিলাম মৃত্যুভয় বুঝি আমাদের মানসিকতাই বদলে দেবে। এখন ভাবি, হায় আমি কত বোকা।
এই করোনার সময় যখন বেশিরভাগ মানুষের রুটি-রুজিতে টান পড়ছে, তখন কিছু লোক আবার রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। আমার বোকামির জন্য এখন নিজেই নিজেকে অভিশাপ দিচ্ছি। আগপাশতলা টাউট মো. সাহেদের মালিকানাধীন রিজেন্ট হাসপাতাল যখন শুরু থেকেই কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে আসছিল, তখন অবাক হয়েছি; নিজেকেই বকা দিয়েছি, সবসময় খালি খারাপ চিন্তা। মানুষের মাঝে ভালোও থাকে।
তবে দেশের বেশিরভাগ বেসরকারি হাসপাতাল যখন শুরুতে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দিতে চায়নি, আবার কেউ কেউ দিতে চেয়েও অনুমতি পায়নি। সেখানে রিজেন্টের মতো অখ্যাত হাসপাতালের চাওয়া এবং পাওয়া নিয়ে অবশ্যই সন্দেহ করা উচিত ছিল। কিন্তু সাংবাদিকদের কারো কারো সেখানে যাওয়া দেখে আশ্বস্ত হয়েছিলাম, যাক বিপদে-আপদে কাজে লাগতে পারে, করোনা চিকিৎসায় একমাত্র বেসরকারি হাসপাতাল বলে কথা।
ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী যখন জেকেজি হেলথকেয়ার নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছিলেন, ভালোই লেগেছিল। দেশের বিভিন্নস্থানে এমন অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে উঠেছে। অনেকে ব্যক্তিউদ্যোগেও মানুষের জন্য কাজ করছে। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবার আড়ালে যে এমন ভয়ঙ্কর কুৎসিত বাণিজ্য চিন্তা থাকতে পারে; তা অবিশ্বাস্য।
করোনার একদম শুরুতর জেএমআইয়ের এন৯৫ মাস্ক কেলেঙ্কারি তোলপাড় তুলেছিল। ভুয়া এন৯৫ মাস্ক সরবরাহ করে জেএমআই আসলে ডাক্তারদের মৃত্যুর দিতে ঠেলে দিয়েছিল। বাংলাদেশে যে ডাক্তারদের মৃত্যু ও সংক্রমণের হার বেশি, তার প্রধান দায় জেএমআইয়ের। জেএমআই কেলেঙ্কারির পথ ধরেই আসে জেকেজি এবং রিজেন্টের মহা কেলেঙ্কারি। জেকেজি ও রিজেন্টের মূল অপরাধ ভুয়া করোনা টেস্ট করা। তারা স্যাম্পল সংগ্রহ করে টেস্ট না করেই, মনগড়া রিপোর্ট তৈরি করেছে। সরকার বিনা পয়সায় টেস্ট করলেও জেকেজি আর রিজেন্ট টাকা নিতো। এভাবে টেস্ট বাবদ তারা কয়েক কোটি হাতিয়ে নিয়েছে।
টাকার অঙ্কে এন৯৫ অনেক বড় কেলেঙ্কারি। কিন্তু প্রভাব বিবেচনায় টেস্ট কেলেঙ্কারি আরো বড় এবং ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিটা হলো জেকেজি বা রিজেন্ট যদি একজন করোনা পজিটিভকে নেগেটিভ রিপোর্ট দিয়ে থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তি নিজেকে নেগেটিভ ভেবে ইচ্ছামতো ঘুরে বেড়িয়েছে আর করোনা বিলি করেছে। এইভাবে কত মানুষ ঝুঁকিতে পড়েছে, কত মানুষ মারা গেছে; কে জানে। তবে ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট দেশের আরো অনেক বড় ক্ষতির মুখ দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বিশ্বে বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, যেখানে করোনার ভুয়া টেস্ট হয়।
জেকেজি আর রিজেন্ট মিলে রাষ্ট্রের কপালে এই কলঙ্ক তিলক এঁকে দিয়েছে। শুধু তিলক হলে না হয় মাথা নিচু করে সয়ে যাওয়া যেতো। কিন্তু টেস্ট কেলেঙ্কারির ঘটনায় একাধিক দেশ বাংলাদেশের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। ইতালি বাংলাদেশ থেকে যাওয়া দুটি ফ্লাইট ফিরিয়ে দিয়েছে। এখন বাংলাদেশ যদি দ্রুত ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে সর্বাত্মক উদ্যোগ না নেয়, তাহলে এই টেস্ট কেলেঙ্কারি আমাদের রেমিট্যান্সেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। রিজেন্ট আরো একটি বড় অপরাধ করেছে। তাদের কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার সক্ষমতা না থাকলেও তারা রোগী ভর্তি করেছে। রিজেন্ট হাসপাতালে যারা মারা গেছেন, তারা আসলে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন।
জেকেজির সিইও আরিফুল হক চৌধুরী গ্রেপ্তার হয়েছেন ২৪ জুন। আর সোশ্যাল মিডিয়ার প্রবল চাপে তার স্ত্রী ডা. সাবরিনাকে ডেকে নিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার ১৮ দিন পর, ১২ জুলাই। এই সময়ে তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে অফিস করেছেন। গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা বলেছেন। কিন্তু পুলিশ গ্রেপ্তার তো দূরের কথা, তার সাথে কথাও বলেনি। জেকেজির চার মামলায় তিনি আসামিও নন। এখন তাকে আসামি করা হবে, রিমান্ডে নেয়া হবে। আমি নিশ্চিত ফেসবুক না থাকলে তিনি পার পেয়ে যেতেন। পুলিশের স্বাভাবিক তদন্ত হলে তো আরিফ চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের দুয়েকদিনের মধ্যেই সাবরিনার সম্পৃক্ততা বুঝে যাওয়ার কথা। সেটা না করে ১৮ দিন পর তাকে গ্রেপ্তার করা স্রেফ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবল চাপের কারণেই মনে হয়। অথচ এমনটা হওয়া উচিত নয়। আইনকে তার নিজের গতিতেই চলতে দেয়া উচিত।
গ্রেপ্তারের আগে ডা. সাবরিনা দাবি করেছেন, তিনি কোনো অনৈতিক কাজ করেননি এবং তিনি জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান নন, কখনো ছিলেনও না। তার প্রথম দুটি সত্য হতে পারে, তবে তৃতীয়টি নয়। তিনি এখন হয়তো জেকেজির চেয়ারম্যান নন, কিন্তু তিনি চেয়ারম্যান ছিলেন। জুনের প্রথম সপ্তাহে তিতুমীর কলেজে জেকেজির কর্মীদের ওপর হামলার পর তিনি সেখানে জেকেজির চেয়ারম্যান হিসেবে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। জেকেজির সবকিছুতেই ডা. সাবরিনাকেই উপস্থাপন করা হতো। তিনিই ছিলেন এই সংগঠনের আসল সাইনবোর্ড।
অভিযোগ আছে, তার কারণেই জেকেজি করোনা টেস্ট করার ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমতি পেয়েছিল। ডা. সাবরিনা একজন সরকারি কর্মকর্তা, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার। একজন সরকারি কর্মকর্তা কোনোভাবেই একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত হতে পারেন না।
ডা. সাবরিনা কোনো অনৈতিক কাজ করেননি, এই দাবি সত্য হলেও তার দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। কারণ তার সাবেক প্রতিষ্ঠান জেকেজি শুধু অনৈতিক নয়, মহাঅপরাধ করেছে। তিনি জেনেও চুপ করেছিলেন। এটাও অন্যায়। জেকেজি কেলেঙ্কারির খবর আমি প্রথম পাই ডা. সাবরিনার ফেসবুক থেকে। ২৪ জুন তিনি ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘অনেক আশা নিয়েই জেকেজি হেলথকেয়ার শুরু করেছিলাম বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেবার জন্য। যেকোনো জিনিস প্রতিষ্ঠা করাই বড্ড কঠিন। অনেক কষ্ট করেছি। করোনা বিপর্যয় শুরু হবার পর প্রথম এলাকাভিত্তিক স্যাম্পল কালেকশন শুরু হয়- কত মানুষের কত রকম বাধা। কোনো দোকান খোলা নেই, জিনিসপত্র নেই, কেউ ভয়ে করোনা নিয়ে কাজ করতে চায় না। সব পেরিয়ে পথচলা। কিন্তু সেই প্রতিষ্ঠান থেকেই আমাকে সরে আসতে হয়। যারা আমাকে কাছ থেকে চেনেন তারা জানেন, আদর্শ আর ভালোবাসার কনফ্লিক্টে আমি সবসময় আদর্শকেই বেছে নিয়েছি! ৪ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার ল্যাবের অধ্যাপক তুষার স্যার এবং আমার কাছে যেকজন সাংবাদিক ভাই ও বোনের নম্বর ছিল তাদের জানিয়ে আমি সরে যাই এখান থেকে।’
এই স্ট্যাটাস তিনি দিয়েছেন জেকেজি অফিসে পুলিশের অভিযান চালিয়ে আরিফুল হক চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের পর। তিনি যদি ৪ জুন জেকেজির সকল অন্যায় ফাঁস করে আদর্শিক অবস্থান নিতেন, তাহলে অবশ্যই তিনি বেনিফিট অব ডাউট পেতেন। তার স্ট্যাটাসকে সত্য ধরলে, ৪ জুন জানার পর জেকেজি ছেড়ে এসেছেন। কিন্তু জেকেজি তাদের অপকর্ম চালিয়ে গেছে ২৪ জুন পর্যন্ত। তার মানে সাবরিনা একজন চিকিৎসক হয়েও ২০ দিন ধরে অপরাধটি হতে দিয়েছেন, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এ ব্যাপারে ডা. সাবরিনা তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘যারা ভাবছেন, আমি জেকেজিতে নেই এই তথ্য আগে কেন জানালাম না; তাদের উদ্দেশ্যে বলব, বিচ্ছেদ- তা সে যার সাথেই হোক- কোনো ঢাকঢোল পিটিয়ে জানানোর জিনিস নয়।’ আরিফুল হক চৌধুরীর সাথে তার ব্যক্তিগত বিচ্ছেদ ঢাকঢোল পিটিয়ে জানানোর জিনিস অবশ্যই নয়। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানের অন্যায়, যার সাথে মানুষের জীবনমরণ জড়িত; তা অবশ্যই ঢাকঢোল পিটিয়েই বলতে হবে। আমার জানার ইচ্ছা, জেকেজি ছাড়ার আগে তিনি কোন সাংবাদিক ভাইবোনদের জানিয়েছিলেন। কেন এত বড় নিউজ পেয়েও সেই সাংবাদিক ভাইবোনরা চুপ থাকলেন?
জেকেজি এবং রিজেন্ট কেলেঙ্কারিতে প্রতিবাদের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুরোনো একটা নোংরা প্রবণতা আবার সামনে চলে এসেছে। জেকেজি ও রিজেন্ট কেলেঙ্কারিতে আলোচিত ব্যক্তি তিনজন- জেকেজির সাবেক চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা, সিইও আরিফ চৌধুরী এবং রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান। সাধারণ বিবেচনায়ও যদি বলি জেকেজি কেলেঙ্কারির মূল দায় অবশ্যই আরিফ চৌধুরীর। কিন্তু তিনি যেহেতু পুরুষ এবং তার যেহেতু সেলিব্রেটিদের সাথে সেলফি নেই, তাই ফেসবুকে তিনি তেমন ঝড় তুলতে পারেননি।
তবে রিজেন্ট কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার সাথে সাথেই ফেসবুকে ঝড়। রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে সাংবাদিক সবার সাথেই তার ছবি আছে। সেইসব ছবিতে সয়লাব ফেসবুক। এখন জানা যাচ্ছে, এসএসসি পাস সাহেদ করিম, ওরফে মো. সাহেদ প্রভাবশালীদের সাথে ছবি তুলে তার ধান্ধাবাজির কাজে ব্যবহার করতেন। এই আন্তর্জাতিক বাটপার একাধিক বিয়ে করেছেন। প্রতারণার মামলায় জেল খেটেছেন। নিজেকে কখনো সাবেক মেজর, কখনো সাবেক কর্নেল, কখনো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তার পরিচয় দিতেন। তার বিরুদ্ধে গোটা পঞ্চাশেক মামলার খোঁজ মিলেছে। প্রশাসন তার এইসব অপকর্মের কথা জানতোও। কিন্তু তারপরও তিনি কীভাবে আওয়ামী লীগের উপকমিটির সদস্য বনে যান; কীভাবে বঙ্গভবন, গণভবন, সেনাকুঞ্জসহ সব রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেতেন; তা বিস্ময়কর। সমস্যাটা হলো ফেসবুক দেখলে মনে হবে সাহেদের প্রধান অপরাধ প্রভাবশালীদের সাথে ছবি তোলা।
একই সমস্যা ডা. সাবরিনার ক্ষেত্রেও। রিজেন্ট সাহেদ যদি ফেসবুকে ঝড় তুলে থাকেন, সাবরিনা তুলেছেন সাইক্লোন; সাহেদ জোয়ার আনলে সাবরিনা এনেছেন সুনামি। ডা. সাবরিনা সুন্দরী, স্মার্ট, মেধাবীও। ডাক্তারি পাস করে বিসিএস দিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি নিজেকে দেশের প্রথম নারী কার্ডিয়াক সার্জন দাবি করেন। যদিও তার সহকর্মীরা বলছেন, তিনি প্রথম নন, দ্বিতীয়। সেটাও কিন্তু কম গৌরবের নয়। কিন্তু ফেসবুক দেখলে মনে হবে, তার মূল অপরাধ হলো খোলামেলা পোশাক পরা এবং শরীর ছাড়া তার কোনো যোগ্যতা নেই।
ফেসবুকেই ডা. সাবরিনা লিখেছিলেন, তিনি ডাক্তার নন, নায়িকা হতে চেয়েছিলেন। নায়িকা হতে না পারলেও তার আকাঙ্ক্ষাটা বোধহয় মরে যায়নি। তার ওয়ালে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন লোকেশনে বিভিন্ন ভঙ্গিতে তোলা অসংখ্য ছবি আছে। অনেকেই সেখান থেকে বেছে বেছে খোলামেলা নিজের ওয়ালে শেয়ার করে তার পোশাকের সমালোচনা করছেন, ছিঃ ছিঃ একজন ডাক্তার এই পোশাক পরতে পারে। সেইসব স্ট্যাটাসের নিচে, এমন সব গালিগালাজ, যার সাথে করোনা টেস্ট নিয়ে জালিয়াতির কোনো সম্পর্ক নেই।
তারচেয়ে বড় কথা, ডাক্তার হলেই কি সারাদিন সাদা অ্যাপ্রোন পরে থাকতে হবে। কে কোন পোশাক পরে কোন ভঙ্গিতে ছবি তুলবে, সেটা তার ব্যক্তিগত পছন্দ। সেখানে নাক না গলানোই ভালো। ডা. সাবরিনা যদি বোরকা বা হিজাব পরে ভুয়া করোনা রিপোর্ট দিতেন, তাহলে কি তার অপরাধ কম হয়ে যেতো। ডা. সাবরিনা যেটুকু অপরাধ করেছে, সেটুকু বলুন। সেলফি আর পোশাকে মনোযোগ দিয়ে আমরা যেন আসল অপরাধ ভুলে না যাই বা হালকা না করে ফেলি।
আসুন আমরা মো. সাহেদের সেলফি এবং ডা. সাবরিনার পিঠ থেকে নজর সরিয়ে তাদের অপরাধ তুলে ধরি। করোনার ভুয়া টেস্ট করে তারা ভয়ঙ্কর অপরাধ করেছেন। তারা অনেক মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলেছেন। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে হেয় করেছেন, প্রবাসীদের কঠিন বিপদে ফেলেছেন। জেকেজি ও রিজেন্ট কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
সাহেদ-আরিফ-সাবরিনাদের হারাতেই হবে। কারণ তারা জিতলে হেরে যাবে বাংলাদেশ।
লেখক: হেড অব নিউজ, এটিএননিউজ