মাদকবিরোধী অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধ’: ৬ জেলায় নিহত ৮

প্রকাশিতঃ 11:09 am | May 21, 2018

কালের আলো ডেস্ক:

যশোর, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, নরসিংদী, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহে পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৮ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের কথাও জানানো হয়েছে।

যশোরে পৃথক দুটি স্থানে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। রোববার রাত সাড়ে ৩টার দিকে যশোর শহরতলীর শেখহাটি ও খোলাডাঙ্গায় এ ‘বন্দুকযুদ্ধে’র ঘটনা ঘটে।

নিহতরা মাদক ব্যবসায়ী দাবি করে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও মাদকদ্রব্য পাওয়া গেছে। তবে তাদের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি একেএম আজমল হুদা জানান, রাত সাড়ে ৩টার দিকে যশোর শহরতলীর শেখহাটি ও খোলাডাঙ্গায় মাদক ব্যবসায়ীরা নিজেদের মধ্যে গোলাগুলি করছে- এমন সংবাদ পায় পুলিশ। খবর পেয়ে পুলিশ ওই স্থান দুটিতে যায়। এসময় শেখহাটির নওয়াব আলীর খেজুর বাগান নামক স্থান থেকে দুইটি মৃতদেহ ও ৪শ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। একইসঙ্গে খোলাডাঙ্গা মাঠের মধ্যে থেকে এক মরদেহ ও একশ’ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

এদিকে, র‌্যাব জানিয়েছে, রাত সাড়ে ১২টায় টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে র‌্যাব-১২ এর সঙ্গে একদল মাদক পাচারকারীর গুলি বিনিময় হয়। এতে কুখ্যাত মাদক বিক্রেতা আবুল কালাম আজাদ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নিহত হন। এ সময় বিপুল পরিমাণ মাদক, বিদেশি অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। বন্দুকযুদ্ধে দুই র‌্যাব সদস্যও আহত হয়েছেন।

রাজশাহীতে র‌্যাবের সঙ্গে ‌‘বন্দুকযুদ্ধে’ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী নিহত হয়েছেন। রোববার রাত ১২টার দিকে নগরীর উপকণ্ঠ বেলপুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, এক রাউন্ড তাজা গুলি এবং এক রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাবের ভাষ্য, নিহত লিয়াকত এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদকসহ আটটি মামলা রয়েছে।

এছাড়া ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। নিহত মো. সব্দুল ইসলাম ওই গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। সোমবার রাত পৌনে ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ একটি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬ এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক এএসপি গোলাম মোর্শেদ জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের তে-মাথা নামক স্থানে র‌্যাবকে লক্ষ্য করে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি চালায়। পরে র‌্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন সব্দুল ইসলাম। উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নরসিংদীর ঘোড়াশালে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ঈমান আলী নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। র‌্যাব জানিয়েছে, নিহত ঈমান আলী নরসিংদীর শীর্ষ মাদক বিক্রেতা। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা আছে। তিনি পলাতক ছিলেন। র‌্যাব বলছে, এ ঘটনায় তাদের দুই সদস্য আহত হয়েছেন।

এছাড়া, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মাদকসম্রাট জনাব আলী (৩২) নিহত হয়েছেন। রোববার রাতে উপজেলার উথলী ইউনিয়নের সন্ন্যাসী তলায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামের মহাসিন আলীর ছেলে একাধিক মাদক মামলার আসামি জনাব আলী।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার রাতে পুলিশ তাকে আটকের চেষ্টা চালালে সে পুলিশের ওপর গুলি চালায়। এ সময় পুলিশ ও পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে জনাব আলী নিহত হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি ওয়ান সুটার গান ২ রাউন্ড গুলি ৩টি দেশীয় হাসুয়া ও ১ বস্তা ফেনসিডিল উদ্ধার করে। রাতেই লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার দিনগত রাতেও পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দেশের ছয় জেলায় ৬ জন নিহত হন। ময়মনসিংহ, ফেনী, বরিশাল, যশোর, দিনাজপুর ও টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এ ঘটনা ঘটে। এসব ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত চারজন মাদক ব্যবসায়ী, একজন ডাকাত ও অপর একজনকে ছিনতাইকারী বলে দাবি করে পুলিশ।

কালের আলো/ওএইচ

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে কালের আলো’র ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: KalerAlo/Facebook

Print Friendly, PDF & Email