সিলেটের রাজপথে ট্রাফিকের প্রথম নারী সার্জেন্ট

প্রকাশিতঃ 11:36 am | April 25, 2018

কালের আলো রিপোর্ট:

সিলেটের রাজপথে দায়িত্ব পালনে নেমেছেন ট্রাফিকের প্রথম কোনো নারী সার্জেন্ট। তার নাম হৈমন্তী সরকার। নেত্রকোণার দুর্গাপুরের মেয়ে হৈমন্তী সরকার গত তিন’দিন ধরে রাজপথে এই দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। সঙ্গে তার নারী ট্রাফিক কনস্টেবলরা। ব্যস্ততম সড়কের মোড়ে দাঁড়িয়ে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা তিনি দায়িত্বে অবিচল থেকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। হৈমন্তীর এই চ্যালেঞ্জিং কাজে অনুপ্রেরণা পাচ্ছে সিলেটের নারীরা। হৈমন্তী নিজেও কাজ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

ঢাকার রাজপথে নারী সার্জেন্টরা প্রায় দুই বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। রাজধানীর রাস্তায় তারা সফলভাবে দায়িত্ব পালনের পর এখন তাদের বিভাগীয় শহরে দায়িত্ব পালনের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে ২০১৫ সালে ২৯ জন নারীকে সার্জেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। রাজপথে প্রথম নারী পুলিশ সার্জেন্ট বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ মনে করে পুলিশ বিভাগ ওই সব নারী সার্জেন্টদের নিয়োগ প্রদান করে। এরপর প্রাথমিকভাবে নিয়োগকৃত ২৯ জনের মধ্যে ২২ জনকে ঢাকা মহানগরের রাজপথে দায়িত্ব পালনে নামায়। তারা বেশ দক্ষতার সঙ্গে ঢাকার রাজপথে দায়িত্ব পালন করেন।

সম্প্রতি সময়ে ওই ২২ জনের মধ্যে তিনজনকে চট্রগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল পাঠানো হয়। হৈমন্তীর স্বামী সিলেটের একজন ব্যাংকার। এ কারণে হৈমন্তী তার পছন্দের শহর সিলেটে এসেছেন। এখন থেকে সিলেটের রাজপথে চ্যালেঞ্জিং পেশায় থাকবেন তিনি। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, হৈমন্তীদের ব্যাচের পর ২০১৬ সালে আরও একটি ব্যাচে নারী সার্জেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখন তারা ট্রেনিংয়ে রয়েছেন।

হৈমন্ত সরকার সিলেট মেট্রো পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে যোগ দেন এক বছর আগে। মাঝে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ছিলেন। সে ছুটি শেষে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসেন।

হৈমন্তী কাজের প্রতি অবিচল থেকে দায়িত্ব পালন করে চলছেন। তিনি দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) ১০টি পরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরিবহনে এই মামলা করতে গিয়ে তাকে ফোনে নানাজনের সঙ্গে কথা বলতে হয়েছে। কখনো কখনো উচ্চ পর্যায় থেকে তদবিরও এসেছে। কিন্তু হৈমন্তী কোনো কিছুতেই তোয়াক্কা করেননি। গতকালও তিনি নগরীর নাইওরপুল এলাকায় দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ও তিনি কয়েকটি যানবাহনের বিরুদ্ধেও মামলা করেন।

সিলেট মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন ইনচার্জ আবু বকর শাওন হৈমন্তীর দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জানান, এসএমপির কমিশনার মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া ও উপ কমিশনার (ট্রাফিক) তোফায়েল আহমেদ এসএমপির ট্রাফিক বিভাগে নারী সদস্য যুক্ত করার বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। এ চ্যালেঞ্জ সফল হলে ভবিষ্যতে সিলেটের পথে আরো নারী সদস্যদের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে দেখা যাবে। ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ি থামানোর কাজটি চ্যালেঞ্জের মনে করলেও নিজের এ দায়িত্ব নিয়ে বেশ রোমাঞ্চিতই মনে হল হৈমন্তী সরকারকে।

নারী সার্জেন্ট হৈমন্তী সরকার বলেন, পুলিশের পেশাটাই তো চ্যালেঞ্জিং পেশা, তার মাঝে ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্বটা আরো চ্যালেঞ্জের। তবে এ চ্যালেঞ্জটাকেই জয় করতে চাই।

কালের আলো/এসএম

Print Friendly, PDF & Email