‘সাদিক কায়েমের বিরুদ্ধে জাহিদের অভিযোগ মিথ্যা ও পলিটিক্যাল নোংরামি’
প্রকাশিতঃ 7:26 pm | August 11, 2025

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, কালের আলো:
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ও সংগঠনের বর্তমান কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েমকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব জাহিদ আহসান। এক টেলিভিশন টকশোতে করা এই মন্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে শুরু হয় নানান আলোচনা-সমালোচনা।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সাহিত্য ও ক্রীড়া সম্পাদক মো. মিফতাহুল হোসাইন আল মারুফ ২০২২ সালে গ্রেপ্তার হন। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সেক্রেটারি জাহিদ আহসান গতকাল একটি টকশোতে বলেছেন, মিফতাহুল মারুফকে জেল থেকে ছাড়ানোর সময় শিবির নেতারা (সাদিক কায়েম, এসএম ফরহাদ) কেউ যায় নাই, কেবল অধিকার পরিষদই গিয়েছিল।
রোববার (১০ আগস্ট) দিবাগত রাতে ছাত্রশিবির ঢাবি শাখার সাহিত্য ও ক্রীড়া সম্পাদক মো. মিফতাহুল হোসাইন আল মারুফ নিজের ফেসবুক আইডিতে প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেন, জাহিদ আহসানের বক্তব্য “সবকিছু আমরাই করেছি, শিবির নেতারা জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছেন। এটি নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী, জঘন্য মিথ্যাচার ও নিরেট সস্তা স্ট্যান্ডবাজি ব্যতীত আর কিছুই নয়। সাদিক ভাই সম্পর্কে জাহিদ ভাইয়ের বক্তব্য স্রেফ পলিটিক্যাল নোংরামি, অসততা এবং একই সাথে মিথ্যা, মিথ্যা এবং মিথ্যা।
ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ছাত্রলীগ ও হল প্রশাসন আমাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করার পর শিবিরের দায়িত্বশীল থেকে শুরু করে ক্যাম্পাসের সকল এ্যাক্টিভিস্ট, ডান-বাম সবাই তাদের যায়গা থেকে প্রতিবাদ করেছেন। ক্যাম্পাসের কাছাকাছি যারা ছিলেন মোটামুটি সবাই শাহবাগ থানায় এসেছিলেন আমার সাথে দেখা করতে। ১১ টার পরে আমারে হল থেকে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসা হয়। রাতে আমার সাথে সাথেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির অনেকে চলে আসেন থানায়, আমার চাচা ঢাবি ছাত্রদলের বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ শোভন, আমার উপজেলার রাজিব ভাই, উৎসব ভাই চলে আসেন। একই সময় শিবিরের আবিদ ভাই, আরাফাত ভাইরাও এসে আমার সাথে সাক্ষাৎ করে যান। এরপর আমার বন্ধু সুফিয়ান, শিহাব, রুদ্র, নাবিল, জুনায়েদ, সাজিদ আসেন। ডিপার্টমেন্টের ছাত্রদল নেতা ও বন্ধু তানভীর, আরাফাত শৈশবও রাতের বেলা আমার সাথে দেখা করে যায় থানায়। আমারে হাজতে নিয়ে যায় ১ টার দিকে এই দুই ঘণ্টায় এদের সাথেই দেখা হয়।
গ্রেফতারের পর সাদিক কায়েমের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি লিখেন, ফজরের পর ছাত্রশিবিরের রাফে সালমান রিফাত ভাই খাবার নিয়ে আসেন, নাবিল-রুদ্ররা খাবার পাঠায়, তারপরে মোল্লা ফারুক ভাই, শোভন চাচা আসেন। এরপর সাদিক কায়েম ভাই সশরীরে আমার সাথে সাক্ষাৎ করে বলেন ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকদের সাথে কথা হয়েছে, আমার বন্ধুদের সাথে কথা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এক্টিভিস্ট, শিক্ষক, সাংবাদিকদের সাথেও যোগাযোগ করছিলেন সাদিক ভাই। আমাকে বের করার জন্য যা করা দরকার সব করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেন। আমাকে যখন হাজত থেকে ওসির রুমে নিয়ে যাওয়া হয় তখন দেখি ডিপার্টমেন্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সব সিনিয়র-জুনিয়র, আমার বিশেষ করে আমার বন্ধু-বান্ধবরা শাহবাগ থানা ঘিরে রেখেছেন। আমার সাথে ওসির রুমে যখন ওসি কথা বলছিলেন সেই রুমে আখতার ভাই, আকরাম ভাই, সিফাত ভাইয়ের সাথে সাদিক কায়েম ভাই, রাফে সালমান রিফাত ভাই, আবিদ ভাই, আনিছুর রহমান জুয়েল ভাই, আরাফাত ভাই, শোয়েব আব্দুল্লাহ ভাই, নুসরাত আপু, শোভন চাচা ও মোল্লা ফারুক ভাই, লোকাল গার্ডিয়ান হিসেবে আমার মামা বর্তমানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের এক্সিকিউটিভ মেম্বার অ্যাড. শফিক ছিলেন।
তিনি আরও লিখেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের পুরো কমিটির লোকজন ছিল এবং এক্টিভ রোল প্লে করেছেন একই সাথে ছাত্রফ্রন্টের আমার বন্ধু মোজাম্মেল, সালমান ভাই, বিপ্লবী ছাত্র ও যুব আন্দোলনের শোয়েব আব্দুল্লাহ ভাই সহ অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং নিজেদের রোল প্লে করেছেন। আমার বের হওয়ার পর পরিষদের নেতৃবৃন্দ ছাত্রলীগের আক্রমণের শিকার হন, সিফাত ভাই, আহনাফ ভাই বাজে ভাবে আহত হন সেই আক্রমণের প্রতিবাদে বিকেলে পরিষদের ভাইরা রাজুতে একটা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন এবং সেখানে আমি ও আখতার ভাই এক রিক্সায় রাজুতে আসি।
যেই রুমে বসে সিদ্ধান্ত হয় আমি রাজুতে এসে পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দিব সেই রুমে সাদিক কায়েম ভাই, রাফে সালমান রিফাত ভাই, আখতার ভাই একসাথেই ছিলেন।
সবার অবদান স্বীকার করে তিনি বলেন, আমি প্রত্যেকের অবদান স্বীকার করি ও কৃতজ্ঞতা পোষণ করি, কিন্তু সবকিছু আমরাই করেছি, সাদিক ভাই জয় বাংলা বলে ছাত্রলীগ করেছেন এইরকম মিথ্যাচার আমি জাহিদ ভাইয়ের কাছ থেকে আসা করিনি।
কালের আলো/এসআর/এএএন